জুমবাংলা ডেস্ক : পঞ্চগড়ে তিন মাস আগে আইনজীবীর হাতে ধর্ষণের শিকার স্কুলছাত্রী বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন।
রোববার (১৪ ডিসেম্বর) রাতে ওই স্কুলছাত্রী বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। বর্তমানে ওই স্কুলছাত্রী আটোয়ারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আছেন।
অভিযোগ উঠেছে ওই স্কুলছাত্রীর পরিবারকে সমঝোতার জন্য আইনজীবী হাবিবুর রহমানের পক্ষে প্রভাবশালীরা চাপ দিচ্ছে।
একইসঙ্গে ধর্ষণের শিকার ওই স্কুলছাত্রীর পরিবারকে মামলা তুলে নিতে সাত লাখ টাকা প্রদানের প্রলোভন দেয়। মূলত মামলা সমঝোতার খবর শুনে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায় ধর্ষণের শিকার ছাত্রী। এই ঘটনায় আটোয়ারী থানায় সমঝোতার চেষ্টাকারী দুইজনকে অভিযুক্ত করে মামলা দায়ের করেছে ধর্ষণের স্বীকার স্কুলছাত্রীর বাবা।
ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা যায়, মামলা হওয়ার পর থেকেই ওই আইনজীবী হাবিব জেলে থাকলেও পরোক্ষভাবে বিভিন্ন প্রভাবশালীর মাধ্যমে সমঝোতার চাপ দিয়ে যাচ্ছিলেন। সর্বশেষ ৭ লাখ টাকায় মামলা তুলে নিতে চাপ দিতে থাকে তারা। এমনকি সমঝোতার কাগজপত্রও তৈরি করে ফেলে তারা।
ওই স্কুলছাত্রীর বাবা বলেন, আলোয়াখোয়া ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রতন বিলাস বর্মনসহ কয়েকজন দীর্ঘদিন ধরেই হাবিবের পক্ষ থেকে আমাদের বিষয়টি সমঝোতার চাপ দিচ্ছিলেন। পরিবারের সবাই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছি। এই যন্ত্রণা আর নিতে পারছি না। তাদের জন্যই আমার মেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে।
এদিকে আটোয়ারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. হুমায়ুন কবির বলেন, ওই স্কুলছাত্রী কীটনাশক পান করেছিল। হাসপাতালের আনার পর তার বিষ বের করা হয়েছে। এখন তার অবস্থা স্থিতিশীল। ৭২ ঘণ্টার আগে কিছু বলা যাচ্ছে না। আমরা তাকে চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছি।
মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ১১ সেপ্টেম্বর সকালে পঞ্চগড় আদালতের আইনজীবী এইচ এম হাবিবুর রহমান হাবিব ওই স্কুলছাত্রীকে আটোয়ারী উপজেলা সদরের কালিকাপুর এলাকার এক বাড়িতে নিয়ে ধর্ষণ করে। এ সময় ওই স্কুলছাত্রীর চিৎকারে স্থানীয়রা এসে আপত্তিকর অবস্থায় ওই আইনজীবীকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। ওই দিনই ওই স্কুলছাত্রীর বাবা ওই আইনজীবী ও তার দুই সহযোগীকে আসামি করে আটোয়ারী থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় আদালতের মাধ্যমে ওই আইনজীবীকে জেল-হাজতে পাঠানো হয়।
আটোয়ারী থানার ওসি ইজার উদ্দীন বলেন, ওই স্কুলছাত্রীর ডাক্তারি পরীক্ষায় ধর্ষণের প্রমাণ মিলেছে। আত্মহত্যা চেষ্টার ঘটনায় আটোয়ারী থানায় দুইজনকে আসামি করে আত্মহত্যা প্ররোচনা মামলা দায়ের হয়েছে। পুলিশ আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। পূর্বের ধর্ষণ মামলার আসামি আইনজীবী হাবিব ও তার দুই সহযোগীকে অভিযুক্ত করে গত নভেম্বর মাসে আদালতে চার্জশিট দিয়েছে মামলার সংশ্লিষ্ট তদন্তকারী কর্মকর্তা। বর্তমানে ওই আইনজীবী জেল-হাজতে রয়েছেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।