জুমবাংলা ডেস্ক : বগুড়ার ধুনট সদরের শাহজালাল (রা.) ক্লিনিকে হাসিনা আকতার (৩০) নামে এক গৃহবধূ ও নবজাতককে বিছানায় রেখে পালিয়ে গেছেন জহুরুল ইসলাম নামে এক স্বামী। এদিকে, স্বামী পালিয়ে যাওয়ায় ক্লিনিকের খরচ বহন নিয়ে অসহায় ও নিরুপায় হয়ে পড়েছেন ওই গৃহবধূ। এমন অবস্থায় কোনো উপায় না পেয়ে ৯৯৯ নম্বরে ফোন দেন হাসিনা।
পরে সংবাদ পেয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে ক্লিনিকে ছুটে যান ধুনট থানার এসআই রুহুল আমিন। তিনি সেখানে পৌঁছে ওই গৃহবধূর স্বামী ও আত্মীয়স্বজনদের অবগত করলেও কেউই হাসিনাকে নিতে আসেননি ক্লিনিকে।
অবশেষে ধুনট থানার এসআই রুহুল আমিন তার ব্যক্তিগত তবহিল থেকে ৬ হাজার টাকা ক্লিনিকে পরিশোধ করে নবজাত শিশু ও হাসিনাকে ক্লিনিক থেকে উদ্ধার করে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে হস্তান্তর করেন।
জানা গেছে, সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার চালিতাডাঙ্গা গ্রামের আহমেদ আলীর ছেলে জহরুল ইসলামের সঙ্গে ঢাকার একটি গার্মেন্টসে চাকরি করতেন শরিয়তপুরের নড়িয়া থানাধীন কান্দাপাড়া উত্তর নওসানসন গ্রামের মৃত রইচ উদ্দিনের মেয়ে হাসিনা আকতার। সেই সুবাদে গত ৫ বছর আগে পরিচয় হয় তাদের। এরপর তারা দুইজন বিয়েও করেন। বিয়ের পর গত দুই বছর আগে হাসিনাকে নিয়ে কাজিপুরে গ্রামের বাড়িতে আসেন স্বামী জহুরুল।
এদিকে, তার স্ত্রী গর্ভবতী হলে গত ৬ ফেব্রুয়ারি তাকে সিজার করাতে ধুনট শাহজালাল ক্লিনিকে ভর্তি করায় জহুরুল। পরদিন একটি ছেলে সন্তানের জন্ম দেয় হাসিনা। সন্তান জন্ম হওয়ার পর জহুরুল দুইদিন ক্লিনিকে অবস্থান করলেও গত ৯ ফেব্রুয়ারি তিনি হাসিনার কাছ থেকে প্রায় ১০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়ে পালিয়ে যান।
এরপর গত তিনদিন ক্লিনিকে নবজাতক শিশুকে নিয়ে খেয়ে-না খেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করতে থাকেন হাসিনা। এরপরও স্বামীর কোনো সন্ধান না পেয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে নিরুপায় হয়ে সরকারি জরুরি সেবা ৯৯৯ এ ফোন দেন তিনি। পরে ৯৯৯ নম্বর থেকে ধুনট থানা পুলিশকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়। নির্দেশনা পেয়ে ধুনট থানার এসআই রুহুল আমিন খান সেখানে পৌঁছালে হাসিনার কোনো স্বজনের সন্ধান না পেয়ে অনেকটাই বিপাকে পড়েন তিনি।
এরপর কোনো উপায় না পেয়ে ব্যক্তিগত তহবিল থেকে ৬ হাজার টাকা ক্লিনিকে পরিশোধ করে কাজিপুরের চালিতাডাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যানের একজন প্রতিনিধির কাছে হাসিনা ও নবজাতক শিশুকে হস্তান্তর করেন।
এ বিষয়ে গৃহবধূ হাসিনা বেগম বলেন, আমার এই এলাকায় আপন বলতে কেউ নেই। আমার স্বামী ভবঘুরে। সে আমার সাথে প্রতারণা করে টাকা-পয়সা নিয়ে ক্লিনিক থেকে পালিয়ে গেছে। তাই নিরুপায় হয়ে অন্য একজনের কাছ থেকে মোবাইল নিয়ে ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে সহযোগিতা চেয়েছি।
ধুনট থানার এসআই রুহুল আমিন বলেন, পুলিশ সার্বক্ষণিক জনগণের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় একজন অসহায় নারীর পাশে থেকে সামান্য সহযোগিতা করেছি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।