জুমবাংলা ডেস্ক: নওগাঁ জেলার আত্রাই ও মান্দা উপজেলার বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রুপ নিয়েছে। নওগাঁ’র সব ক’টি নদীর পানি বৃদ্ধি হয়ে বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার ফলে বন্যা পরিস্থিতির এ অবনিত। এ দুই উপজেলার কমপক্ষে ৬০ হাজার মানুষ পানিবন্দি রয়েছেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আরিফ উজ্জামান খান জানিয়েছেন বিশেষ করে প্রধান দু’টি নদী আত্রাই ও যমুনা নদীর পানি এখনও বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নওগাঁ’র আত্রাই নদীর পানি মঙ্গলবার সকাল ৯টায় মহাদেবপুর পয়েন্টে বিপদসীমার ২৬ সেন্টিমিটার, ধামইরহাট উপজেলার শিমুলতলি পয়েন্টে ২৭ সেনিটমিটার, মান্দা উপজেলার জোতবাজার পয়েন্টে ৬২ সেন্টিমিটার এবং আত্রাই উপজেলায় আত্রাই রেলওয়ে ষ্টেশন পয়েন্টে ৫৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। সকাল ৬টা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত ৩ ঘন্টায় মহাদেবপুর পয়েন্টে ১ সেন্টিমিটার, শিমুলতলি পয়েন্টে ১ সেন্টিমিটার, আত্রাই রেলওয়ে শ্টেশন পয়েন্টে ২ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে।
নওগাঁ’র ছোট যমুনা নদীর পানি নওগাঁ শহরের লিটন সেতু পয়েন্টে মঙ্গলবার সকাল ৯টায় বিপদসীমার ৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। সকাল ৬টায় এ নদীর পানি বিপদসীমার ৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হ্িচ্ছল।
আত্রাই নদীর পূর্বের ভাঙ্গন দিয়ে জনপদে পানি প্রবেশ করায় আত্রাই উপজেলার হাটকালুপাড়া, কালিকাপুর, আহসানগঞ্জ, শাহাগোলা, বিশা, পাঁচুপুর ও ভোঁ-পাড়া এই ৭টি উনিয়ন এবং মান্দা উপজেলার কসব, বিষ্ণপুর ও নুরুল্যাবাদ ইউনিয়ন সম্পূর্নভাবে প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকার মাঠের সমুদয় আমন ধান পানির নিচে তলিয়ে গেছে। অধিকাংশ পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। প্রচুর সংখ্যক মাটির বাড়িঘর ভেঙ্গে গেছে। আত্রাইয়ের হাটকালুপাড়া ও কালিকাপুর ইউনিয়নের বাড়িঘর কোথাও হাঁটু পটানি আবার কোথাও কোমর পানির নিচে। পাকাবাড়ির বাসিন্দারা বাড়ির জিনিসপত্র বিভিন্নভাবে উঁচু করে তার উপর রেখে কোনরকমে বসবাস করছেন। এসব এলাকায় কোথাও কোন উঁচু জায়গা নেই। অধিকাংশ পরিবারের রান্না করার ব্যবস্থা নেই। তাদের গৃহপালিত পশু, হাঁস মুরগী নিয়ে দুর্বিসহ জীবনযাপন করছেন। কেউ কেউ দূুরে কোথাও উঁচু স্থানে আশ্রয় নিলেও অধিকাংশ পরিবারের লোকজন পানির মধ্যে বাড়িতেই রয়ে গেছেন। এসব এলাকার বয়স্ক ব্যক্তিরা বলেছেন বিগত ৪০/৫০ বছরে তাঁরা এমন বন্যা দেখেন নি। হাটকালুপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ শুকুর আলী বন্যার বর্ননা দিয়ে সরকারের প্রতি এ এলাকাকে উপদ্রুত এলাকা হিসেবে ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন।
মান্দা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আব্দুল হালিম বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ উল্লেখ করে বলেছেন এখন পর্যন্ত সঠিক হিসাব না করা গেলেও এ ৩ ইউনিয়নের প্রায় ৫ হাজার পরিবারের প্রায় ২৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। তাদের সরকারী সহযোগিতা প্রদানের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসন থেকে ইতিমধ্যেই ত্রাণ সহযোগিতা বিতরণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
আত্রাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ ছানাউল ইসলাম জানিয়েছেন তাঁর উপজেলার ৮টির মধ্যে ৭ ইউনিয়নই বন্যা কবলিত হয়েছে। তবে হাটকালুপাড়া, কালিকাপুর ও আহসানগঞ্জ ইউনিয়নের পরিস্থিতি খুবই ভয়াবহ। এ উপজেলার প্রায় ১৫ হাজার পরিবারের প্রায় ৬০ হাজার মানুষ সম্পূর্ণভাবে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। ইতিমধ্যে প্রশ্সানের ব্যবস্থাপনায় হাটকালুপাড়া ও কালিকাপুর রইউনিয়নে প্রায় ৫ শতাধিক পরিবারের মধ্যে চাল ডাল তেল চিড়া মুড়ি বিস্কুটসহ নানা শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়েছে। সূত্র: বাসস
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।