জুমবাংলা ডেস্ক : গত দুই তিনদিন থেকে আগাম মুড়িকাটা পেঁয়াজ উঠতে শুরু করায় শরীয়তপুরের বাজারেও দাম কমতে শুরু করেছে। তবে আবাদের সময় লাগাতার বৃষ্টিপাত হওয়ায় অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ১২-১৫ দিন দেরিতে বাজারে আসছে মুড়িকাটা পেঁয়াজ। জেলায় এবার পেঁয়াজ আবাদ হয়েছে ৪ হাজার ৪২৫ হেক্টরে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৪৮ হাজার ৫৮০ মেট্টিকটন।
শরীয়তপুর জেলার পাইকারি কৃষি বাজার ‘মিরাশার চাষি বাজার সমবায় সমিতিতে’ আজ মঙ্গলবার মুড়িকাটা পেঁয়াজ মান ভেদে প্রতি কেজি ৮৫টাকা থেকে ৯০টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
শরীয়তপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিপ্তরের তথ্য সেল জানিয়েছে চাষ ও বিনাচাষ পদ্ধতিতে পেঁয়াজ আবাদ করে থাকেন জেলার কৃষক। জেলার সব চেয়ে বেশি পেঁয়াজ আবাদ হয় জাজিরা উপজেলায়। এ মৌসুমে জাজিরার বড়কৃষ্ণ নগর, পশ্চিম নাও ডোবা, পূর্ব নাওডোবা, সেনেরেচর, বড় কান্দি, বড় গোপালপুর, মূলনা, জাজিরা, জয়নগর, বিলাসপুর ও পালের চর ইউনিয়নে পেঁয়াজ আবাদ হয়েছে ২ হাজার ৯৫৭ হেক্টরে।
এ ছাড়াও নড়িয়া উপজেলার রাজনগর, মোক্তারেরচর, নশাসন, জপসা, ভোজেশ্বর, ফতেহজঙ্গপুর, সদর উপজেলার চন্দ্রপুর, চিকন্দী, শৌলপাড়া, ডোমসার, বিনোদপুর, ডামুড্যা উপজেলার কনেশ্বর, ইসলামপুর, ধানকাঠি, সিধলকুড়া, পূর্ব ডামুড্যা, গোসাইরহাট উপজেলার নাগেরপাড়া, সামন্তসার, ইদিলপুর, নলমুরি, কুচাইপট্টি, গোসাইরহাট এবং ভেদরগঞ্জ উপজেলার ছয়গাঁও, রামভদ্রপুর, ডিএম খালি’ চরভাগা, তারাবুনিয়া ও সখিপুর ইউনিয়নে ১ হাজার ৪৬৮ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ আবাদ হয়েছে।
জাজিরা উপজেলার বড়কৃষ্ণ নগর ইউনিয়নের হাওলাদর কান্দি গ্রামের কৃষক আবুল কালাম সিকদার বলেন, এ বছর পেঁয়াজ লাগানোর সময় লাগাতার বৃষ্টি হওয়ায় আবাদে আমাদের ১৫-২০ দিন দেরি হয়েছে। তাই ফলন পেতেও একটু বেশি সময় লাগছে। আমি এ বছর ৩বিঘা জমিতে পেঁয়াজ আবাদ করেছি। প্রতি বিঘায় খরচ হয়েছে ৬০ হাজার টাকা। বর্তমান যে বাজার দর আছে তাতে বিঘায় ১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা বিক্রি করার আশা করছি।
মিরাশার চাষি বাজার সমবায় সমিতির বাজার সভাপতি ও পাইকার আব্দুল জলিল মাদবর বলেন, গত দুই তিনদিন থেকে বাজারে কৃষকরা মুড়িকাটা পেঁয়াজ আনতে শুরু করেছেন। তিন দিন আগে ভালো মানের মুড়িকাটা পেঁয়াজের পাইকারি দাম পেয়েছেন কৃষক ১৪০টাকা। দুই দিনের ব্যবধানে সেই মানের পেঁয়াজ আজ মঙ্গলবার ৯০টাকা দরে বিক্রি করছেন কৃষক। পেয়াজ উঠা বাড়তে থাকলে দ্রুতই দাম আরো কমে আসবে। তবে কিছু কিছু উঁচু এলাকার কৃষকরা ফলন তুলে বেশ ভালো দাম পাচ্ছেন।
শরীয়তপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. রবীআহ নুর আহমেদ বলেন, এবছর শরীয়তপুরে ৫ হাজার ৪২৫ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ আবাদ হয়েছে। পেঁয়াজের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪৮ হাজার ৫৮০ মেট্টিক টন। তবে পেঁয়াজ আবাদের সময় ঘূর্র্ণিঝড় মিধিলার প্রভাবে লাগাতার বৃষ্টিপাত হওয়ায় ফলন আসতে ১২-১৫ দিন বিলম্ব হচ্ছে। গত দুই তিনদিন থেকে কিছু কিছু উঁচু জমির মুড়িকাটা পেঁয়াজ উঠায় বাজারেও প্রভাব দেখা দিয়েছে। আশা করছি আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে পুরোদমে পেঁয়াজ উত্তলন শুরু হলে পেঁয়াজের বাজার স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
তিনি আরো বলেন, জেলায় মুড়িকাটা পেঁয়াজ আবাদ বেশি হলেও ইতিমধ্যে আমরা সংরক্ষণযোগ্য হালি পেঁয়াজ আবাদে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করছি। ফলে বৃদ্ধি পাচ্ছে সংরক্ষণযোগ্য হালি পেঁয়াজ আবাদ। এ বছর জেলায় ৯৯৫ হেক্টর জমিতে হালি পেঁয়াজ আবাদ হয়েছে। আমরা আশা করছি হালি পেঁয়াজ আবাদ কাংখিত লক্ষ্যমাত্রায় পৌছঁলে জেলার বছরের চাহিদা মিটিয়েও ভরা মৌসুমে জেলার বাইরের বাজারে সরবরাহ করা সম্ভব হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।