আন্তর্জাতিক ডেস্ক: নিউজিল্যান্ডের পর এবার স্পেন। ইচ্ছামৃত্যুর বিল পাশ হয়ে গিয়েছে দেশের সংসদের নিম্নকক্ষে। উচ্চকক্ষ বা সেনেটে তা পাশ হয়ে গেলেই আইন বলবৎ হয়ে যাবে। তবে স্পেনে ইচ্ছামৃত্যুর বিল পাশ করানো খুব সহজে হয়নি। রোমান ক্যাথোলিকদের দেশে বাধা এসেছে অনেক। খবর রয়টার্সর।
স্পেনের প্রধানমন্ত্রী বৃহস্পতিবার দিনটিকে ঐতিহাসিক বলে ব্যাখ্যা করেছেন। এ দিন দেশের সংসদের নিম্নকক্ষে ইচ্ছামৃত্যু সংক্রান্ত বিলের উপর ভোটাভুটি হয়। ১৯৮-১৩৮ ভোটে জয় হয় ইচ্ছামৃত্যু বা ইউথেনেশিয়ার। অর্থাৎ, গুরুতর অসুস্থ কোনো রোগী ইচ্ছামৃত্যুর আবেদন জানাতে পারবেন। চিকিৎসকেরা সম্মত হলে ইচ্ছামৃত্যুর প্রক্রিয়া শুরু হবে।
স্পেনে ২০১৯ সালে ইচ্ছামৃত্যু নিয়ে একটি সমীক্ষা চালানো হয়েছিল। সেখানে দেখা গিয়েছিল, দেশের সিংহভাগ মানুষ ইচ্ছামৃত্যুর পক্ষে। তবে বিরোধিতাও ছিল। দেশের কনসারভেটিভ পার্টি এবং অতি দক্ষিণপন্থী দল এই বিলের চরম বিরোধিতা করেছে। তাদের বক্তব্য, খ্রিস্টান ধর্মের প্রথা অনুযায়ী এমন আইন মেনে নেওয়া যায় না। ধর্ম আত্মহত্যাকে সমর্থন করে না। বামপন্থী এবং মধ্য দক্ষিণপন্থীরা অবশ্য এই বিলের পক্ষে ভোট দিয়েছেন। তাঁদের বক্তব্য, যে ব্যক্তির চিকিৎসা আর সম্ভব নয়, যিনি অসুখে তীব্র কষ্ট পাচ্ছেন, তাঁর ইচ্ছামৃত্যু বেছে নেওয়ার অধিকার থাকা উচিত।
এখন ইচ্ছামৃত্যু স্পেনে দণ্ডনীয় অপরাধ। ১০ বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, আগামী বছরের গোড়ায় উচ্চকক্ষ বা সেনেটেও পাশ হয়ে যাবে আইনটি।
এ দিন সংসদে যখন বিলটির উপর ভোট হচ্ছে, তখন কিছু মানুষ সংসদের বাইরে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। খুলির ছবি দেওয়া ব্যানার হাতে তাঁরা প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তাঁদের বক্তব্য, এ ভাবে ধর্মকে অমান্য করে আত্মহত্যাকে বৈধতা দেওয়া অনুচিত।
ইচ্ছামৃত্যুর আইন অবশ্য যথেষ্ট জটিল। রোগীকে বিভিন্ন পর্যায়ে চারবার ইচ্ছামৃত্যুর আবেদন করতে হবে। প্রথম দুইবার লিখিত আবেদন করতে হবে। এরপর চিকিৎসকরা আবেদনের পর্যালোচনা করবেন। তারপর আরো দুইবার আবেদন জানাতে হবে। আবেদনের যে কোনো পর্বে চিকিৎসকেরা মত বদলাতে পারবেন। শুধু তাই নয়, কোনো চিকিৎসক যদি এই প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে না চান, তা হলে তাঁকে বাধ্য করা যাবে না। ধর্মীয় ভাবাবেগে যাতে কোনোভাবেই আঘাত না লাগে, সে দিকে খেয়াল রাখা হয়েছে বলেই দাবি বিশেষজ্ঞদের। পাশাপাশি আবেদনকারীকে স্পেনের নাগরিক হতে হবে। অন্য দেশের মানুষ স্পেনে গিয়ে ইচ্ছামৃত্যুর আবেদন জানাতে পারবেন না।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



