জুমবাংলা ডেস্ক : ভোলা সরকারি কলেজের অনার্স তৃতীয় বর্ষের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের ছাত্রী ও ছাত্রদল নেত্রী সুকর্ণা আক্তার ইস্পিতা ঢাকাগামী লঞ্চ থেকে নদীতে পড়ে নিখোঁজ হন। পরে উদ্ধার করা মরদেহে নির্যাতনের চিহ্ন থাকায় হত্যা মামলা দায়ের করেছে নৌ থানা পুলিশ। এ নিয়ে তোলপাড় চলছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
কারো কারো অভিযোগ ওই ছাত্রীর ওপর নির্যাতন করা হয়েছে, কেউ বলছেন ধর্ষণের শিকার।
সোমবার (২৩ জুন) কলেজ সহপাঠীরা ক্ষোভ জানিয়ে বিচার দাবি করেছেন।
চাঞ্চল্যকর ওই ঘটনার রহস্য উদঘাটনে পুলিশ সুপারের নির্দেশে ডিবি পুলিশ মাঠে কাজ শুরু করেছে। ১৭ জুন ওই ছাত্রী বাড়ি থেকে প্রাইভেট পড়তে গিয়ে নিখোঁজ হন। এর আগে ওই ছাত্রী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রাজনীতি থেকে সরে যাওয়াসহ নানা ধরনের পোস্ট দেওয়ার বিষয়ও খতিয়ে দেখছে গোয়েন্দা সংস্থা।
গত শুক্রবার বিকালে ওই ছাত্রীর মরদেহ লক্ষ্মীপুর জেলা সদরের বুড়িরঘাট মেঘনা নদীতে ভাসতে দেখে নৌপুলিশ উদ্ধার করে। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে কালো দাগ থাকায় লক্ষ্মীপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন নৌপুলিশের এসআই আজিজুল ইসলাম।
তিনি জানান, অজ্ঞাত ও বেওয়ারিশ হিসেবে ওই লাশ রবিবার বিকালে আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের মাধ্যমে দাফন করা হয়। পুলিশের সংগ্রহে রাখা নিহতের পরিধেয় সেলোয়ার কামিজ দেখে সোমবার দুপুরে নিহত সুকর্ণা আক্তারের বাবা ইজিবাইক চালক মাসুদ রানা শনাক্ত করেন। দাফন করা মেয়েটি সুকর্ণা আক্তার ইস্পিতা ছিল।
এর আগে মেয়ে নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় ভোলা থানায় একটি জিডি করেন তিনি। তাতে উল্লেখ করেন ১৭ জুন তার মেয়ে প্রাইভেট পড়তে সকাল ৮টায় বাসা থেকে বের হয়। বেলা ১১টায় ফিরে আসার কথা থাকলেও সে ফেরেনি।
এদিকে সুকর্ণার নিখোঁজ ও মৃত্যুরহস্য উদঘাটনে অভিযানে নামে ভোলার ডিবি পুলিশ। ডিবি ওসি জানান সকাল ১০টায় ইলিশাঘাট থেকে ঢাকাগামী এমভি কর্ণফুলী-৪ লঞ্চ ওঠে ওই ছাত্রী। লঞ্চটি কালিগঞ্জ ঘাট অতিক্রমের কিছু পরেই ওই মেয়ে নদীতে পড়ার ঘটনা ঘটে।
লক্ষ্মীপুর থানার ওসি আব্দুল মোনাফ জানান, তার থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। পোস্টমর্টেম রিপোর্ট পাওয়া গেলে মৃত্যুর মূল কারণ জানা যাবে।
এদিকে ব্রাদার্স নেভিগেশন ও কর্ণফুলী লঞ্চের ম্যানেজার মো. আলাউদ্দিন জানান, ওই মেয়েটি ওই দিন তাদের লঞ্চের যাত্রী ছিল। প্রথমে কেবিন চেয়েছিল। কেবিন ভাড়া বেশি ও সংকট থাকায় তিনি ডেকে অবস্থান করেন। কিনারে দাঁড়িয়ে ফোনে কারো সঙ্গে বারবার কথা বলতে দেখা যায়। ইলিশা ঘাট থেকে লঞ্চ ছাড়ার এক ঘণ্টা পর চরের কাছাকাছি হঠাৎ মেয়েটি নদীতে ঝাঁপ দেয়। যাত্রীরা বিষয়টি জানালে, লঞ্চ মাস্টার দ্রুত লঞ্চ ঘুরিয়ে খোঁজ নিতে থাকেন। ৪৫ মিনিট খোঁজাখুঁজির পর কোনো সন্ধান না পেয়ে ফের লঞ্চ ঢাকার উদ্দেশ্যে ছাড়ে।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ধর্ষণ ও নির্যাতনের বিষয় উঠে আসায় জেলা প্রশাসন থেকে লঞ্চ স্টাফ ও বেশ কয়েকজন যাত্রীকে ডেকে আনা হয়। তাদের বক্তব্য রেকর্ড করা হয়েছে।
ম্যানেজার আলাউদ্দিনের দাবি, ওই দিন লঞ্চে ওই ছাত্রীর ওপর কোনো ধরনের নির্যাতনের ঘটনা ঘটেনি। তবে লাফ দেওয়ার পর তার মোবাইল ফোনসহ হাত ব্যাগ একটি ছেলে তুলে নেয়। ওই ছেলেকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। মেয়েটি লাফ দেওয়ার আগে কার সঙ্গে কথা বলেছে, তা ট্র্যাক করলে তথ্য বের হতে পারে বলে ধারণা করেন স্বজনরা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।