বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক : এক উচ্চাভিলাষী প্রকল্প নিয়ে কাজ করছেন ‘মাস্যাচুসেট্স ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজি (এমআইটি)’র ‘সেন্টার ফর বিটস অ্যান্ড অ্যাটম’ বিভাগের গবেষকরা। তারা এমন রোবট নকশা করছেন, যা নিজেই নিজেকে ‘অ্যাসেম্বল’ করবে।
গবেষকরা এই সিস্টেমের মূলে বিভিন্ন ‘ভক্সেল’-এর ধারণা দিয়েছেন। কম্পিউটার গ্রাফিক্স থেকে ধার করা শব্দ ভক্সেল বলতে তারা এমন এক এককের কথা বলছেন, যার সক্ষমতা ও ডেটা বিভিন্ন অংশে ভাগ করা সম্ভব। এইসব অংশ মিলে রোবটের ভিত্তি তৈরি হয়, এর পর বিভিন্ন অংশ টেনে জুড়ে দিয়ে ভক্সেলগুলো বাড়তি অংশ অ্যাসেম্বল করতে থাকে এবং ক্রমশ গোটা গ্রিড জুড়ে কাজ এগিয়ে নেয়।
গবেষকরা অবশ্য স্বীকার করছেন, এই স্ব-নির্মিত রোবট তৈরির লক্ষ্য অর্জনে এখনও ‘অ-নে-ক বছর বাকি’। তবে, “এখন পর্যন্ত কাজের অগ্রগতি ইতিবাচক”।
“বড় কিছু বানাতে বড় মেশিন লাগে– এমন একটি ধারণা প্রচলিত রয়েছে। আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি ওই ধারণাকেই চ্যালেঞ্জ করে। ” – উল্লেখ রয়েছে ব্রিটিশ জার্নাল ‘নেচার ডটকমে’ প্রকাশিত গবেষণা প্রবন্ধে।
“নির্মাণ অবকাঠামোর জন্য যথেষ্ট মূলধন প্রয়োজন বা নানা কারণে এখনও করা অসম্ভব এমন প্রকল্পে এই পদ্ধতি প্রয়োগ করা যেতে পারে।”
প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট টেকক্রাঞ্চের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এইসব সিস্টেমের জন্য বুদ্ধিমত্তার সঠিক স্তরে পৌঁছানো ‘একটি বড় বাধা’।
রোবটকে এই বিষয়গুলোও বুঝতে হবে যে কীভাবে ও কোথায় তৈরি করা সম্ভব, কখন তৈরি প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে ও এই প্রক্রিয়ায় কীভাবে একে অপরের সঙ্গে ধাক্কা এড়াতে হবে।
“এইসব কাঠামো বানাতে গেলে আপনাকে আগে বুদ্ধিমত্তা তৈরি করতে হবে।” – বলছেন গবেষণা পত্রের সহ-লেখক নিল গারশেনফেল্ড।
“প্রথমে তৈরি হয়েছে কাঠামোগত ইলেকট্রনিক্সের ধারণা – ভক্সেল তৈরির, যা ক্ষমতা ও ডেটার পাশাপাশি বলও প্রেরণ করে।”
এদিকে, হার্ডওয়্যারজনিত সমস্যা এখনও রয়ে গেছে। এইসব ভক্সেল যেন একসঙ্গে থাকে সেটি নিশ্চিত করতে দলটি এখন তুলনামূলক শক্তিশালী কানেক্টর তৈরির কাজ করছে।
শেষ পর্যন্ত এটা যা দাঁড়াবে তার জন্য চাওয়ার বিষয়টি পরিষ্কার। রোবট নিজেই যদি ঠিক করে নেয় কীভাবে গোটা কাঠামো সবচেয়ে ভালো উপায়ে তৈরি করা সম্ভব, তাহলে প্রোটোটাইপিংয়ের পেছনে সময়ের খরচ অনেক কমিয়ে দিতে পারে।
“৩ডি প্রিন্ট প্রযুক্তিতে তৈরি বাড়ি বা ভবনের প্রতি আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে। সমস্যা হচ্ছে, এই ধরনের নির্মাণে ওই বাড়ি, ভবন বা কাঠামোর সমান বা তারচেয়েও বড় যন্ত্র লাগে এখনও।” –বলছে এমআইটি।
“এমন অবস্থায় যদি ছোট রোবটের দল একসঙ্গে মিলে এমন অবকাঠামো তৈরি করতে পারে সেটি চমৎকার একটি বিষয় হতে পারে।”
এর পাশাপাশি বড় একটি বিষয়েরও অবতারণা রয়েছে এমআইটির ওই গবেষণা প্রবন্ধে। ভূমি ক্ষয় বা সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি ঠেকাতে উপকূলীয় অঞ্চল সুরক্ষার জন্য কাঠামো নির্মাণে এই প্রযুক্তি ব্যবহারের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে আগ্রহী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘ডিফেন্স অ্যাডভান্সড রিসার্চ প্রজেক্টস এজেন্সি’ (ডারপা)
এই প্রকল্পের অর্থায়নে অংশ নিয়েছে নাসা ও মার্কিন ‘আর্মি রিসার্চ ল্যাবরেটরি’।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।