বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক : বাংলা তাকে এক অক্ষরও শেখানো হয়নি। অথচ গড়গড়িয়ে বাংলায় অনুবাদ করছে ভিনদেশে তৈরি এই প্রযুক্তি। এ হলো গুগলের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সফটওয়ার, যার নাম ‘বার্ড’।
চ্যাটজিপিটি-কে টেক্কা দিতে প্রযুক্তির বাজারে পা রেখেছে গুগলের এই নতুন সৃষ্টি। যার ‘চালচলন’ দেখে হতবাক তার স্রষ্টারাও। বার্ড-এর আবির্ভাব নিয়ে সিবিএসের ‘৬০ মিনিটস’কে দেয়া সাক্ষাৎকারে তেমনই বলেছেন গুগলের সিইও সুন্দর পিচাই, ভাইস প্রেসিডেন্ট সিসি শাও এবং সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট জেমস মানিকা।
বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, ২০২৩ সালে মানবসভ্যতায় যে বিবর্তন আসছে, তা হলো এক জন মানুষের সঙ্গে কীভাবে তার সমকক্ষ ব্যক্তি হিসেবে কথা বলা যায়, তা নিজে থেকেই শিখে ফেলছে যন্ত্র। তাতে উদ্ভাবনী শক্তি আছে, সত্য আছে, ভুল আছে, মিথ্যাও আছে। অর্থাৎ যন্ত্র সত্যি-মিথ্যা সব নিয়ে ক্রমশ ‘মানুষ’ হয়ে যাচ্ছে!
ইন্টারনেটে যেসব তথ্য খোঁজা হয়, তার ৯০ শতাংশ হয় গুগলে। কিন্তু এই ফেব্রুয়ারি মাস থেকে এর সাম্রাজ্যে ভাগ বসিয়েছে নতুন চ্যাটবট, যার নাম চ্যাটজিপিটি। এতে মাইক্রোসফট বিপুল বিনিয়োগ করেছে। আর একে টক্কর দিতে এসেছে গুগলের বার্ড। কী বলতে হবে, কী লিখতে হবে, ব্লগ পোস্টে কী লেখা যায়, ইমেইলে কী লিখতে হবে, সবকিছুতেই সাহায্য করবে সে।
গুগলের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট জেমস মানিকা জানান, প্রতিষ্ঠানের এআই সিস্টেমগুলোর মধ্যে একটি নিজেই নিজেকে বাংলা শিখিয়েছে। এমনকি এ সিস্টেমে বাংলা ভাষার প্রোগ্রামিংও করা হয়নি। খুব অল্প পরিমাণে প্রম্পটিংসহ সিস্টেমটি সহজেই সব বাংলা অনুবাদ করতে পারে বলে জানান তিনি।
শাও জানিয়েছেন, গুগলের মতো এটি ইন্টারনেটে উত্তর খুঁজবে না। বার্ড উত্তর দেবে তার ভাণ্ডারে থাকা প্রোগ্রাম থেকে। সেই প্রোগ্রাম সে শিখেছে নিজে নিজেই।
তিন প্রযুক্তিবিদ বলছেন, এর ভিতরে যে সব মাইক্রোচিপ রয়েছে, তা মানুষের মস্তিষ্কের থেকে একশো হাজার গুণ শক্তিশালী। বার্ড-কে বলা হয়েছিল বাইবেলের ‘নিউ টেস্টামেন্ট’-কে সংক্ষিপ্ত করে বলতে। ৫ সেকেন্ডে ১৭টি শব্দে উত্তর দিয়েছে সে। এরপর তাকে ল্যাটিনে জবাব দিতে বলা হয়। অনুবাদ করতে সে সময় নেয় ঠিক ৪ সেকেন্ড।
জেমস জানিয়েছেন, মাসের পর মাস ইন্টারনেটে মজুত নানা বিষয়, সাহিত্য, শিল্প, ইতিহাস, বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করেছে বার্ড। মানুষের মতো করেই ভাবছে সে। জেমসের বিশ্লেষণ— শব্দ ‘খুঁজছে’ না সে, ভাবছে। তার কথায়, ‘কখনও কোনও কথায় মনে হতেই পারে, যন্ত্রের আড়ালে কোনও মানুষ রয়েছে। তা কিন্তু নেই।’
পিচাইয়ের কথায়, ‘কাজের জগতে আমরা একটা কথা বলে থাকি— ‘ব্ল্যাক বক্স’। যেটা আমরা পুরোপুরি জানি না, স্পষ্ট ব্যাখ্যা দিতে পারব না, কোথায় ভুল জানি না। একটা ধারণা আছে মাত্র।’
তাহলে কি নতুন এআই-এর স্রষ্টারাও তাদের সৃষ্টি সম্পর্কে জানেন না? উত্তরে পিচাই বলেন, ‘মানুষের মন কীভাবে কাজ করে, সেটাই কি আমরা পুরোপুরি জানি!’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।