আজ থেকে ৩৭ হাজার বছর আগের কথা। এখন যেখানে দক্ষিণ স্পেনের অবস্থান, সেখানে নিয়ান্ডারথালরা বাস করত। ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে থাকত তারা। এরও কয়েক হাজার বছর আগে ইতালির ফ্লগ্রিয়ান ফিল্ডসে অগ্ন্যুৎপাতের ঘটনা ঘটে। এ অগ্ন্যুৎপাতে গোটা ভূমধ্যসাগর অঞ্চলে ভেঙে পড়ে খাদ্যশৃঙ্খল।
এর সরাসরি প্রভাব পড়ে নিয়ান্ডারথালদের জীবনে। সম্ভবত তারা বুঝতেও পারেনি, তারাই এ প্রজাতির শেষ অবশিষ্ট। অবলুপ্তির সময় ঘনিয়ে আসছে। তখনো তারা পাথরের হাতিয়ার তৈরি করে, পালক ও শামুক দিয়ে গয়না বানিয়ে, পশুপাখি শিকার আর মাশরুম খেয়ে দিব্যি দিন কাটাত।
তবে নিয়ান্ডারথালদের বিলুপ্তির গল্পের শুরু আসলে আরও হাজার হাজার বছর আগে। যখন তারা বিচ্ছিন্ন হয়ে ইউরেশিয়ার সবচেয়ে দুর্গম অঞ্চলগুলোয় ছড়িয়ে পড়ে। এই একা হয়ে যাওয়া আর জনসংখ্যা হ্রাস তাদের বিলুপ্তির দিকে নিয়ে গেছে।
৩৪ হাজার বছর আগে নিয়ান্ডারথালরা পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে যায়। তারা ছিল আধুনিক মানুষের নিকটতম আত্মীয়। বিলুপ্ত হওয়ার আগপর্যন্ত আমরা তাদের সঙ্গে একই জায়গায় একসঙ্গে বসবাস করে এসেছি। এ কারণে অনেক প্রত্নতত্ত্ববিদের ধারণা, আমরা মানুষেরাই নিয়ান্ডারথালদের নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছি। হয়তো যুদ্ধ করে তাদের পরাজিত করেছি অথবা রোগবালাই ছড়িয়ে, সম্পদ সংগ্রহের প্রতিযোগিতায় হারিয়ে দিয়েছি তাদের।
প্রত্নতত্ত্ববিদদের এই ধারণা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিতর্ক চলছে। সম্প্রতি ফ্রান্সের একটি গুহায় আবিষ্কৃত নিয়ান্ডারথালদের জিনোম থেকে উল্লেখযোগ্য তথ্য পাওয়া গেছে। ওই জিনোম বিশ্লেষণ করে নিয়ান্ডারথালরা কীভাবে বিলুপ্ত হয়ে গেল, তাদের মৃত্যুতে মানুষের ভূমিকা কী ছিল, তার রহস্য উন্মোচিত হয়েছে।
নিয়ান্ডারথালদের বিলুপ্তি নিয়ে বছরের পর বছর গবেষণা হয়েছে। সেখানে একটা নয়, জানা গেছে, তাদের হারিয়ে যাওয়ার পেছনে অনেকগুলো কারণ কাজ করেছে। নিয়ান্ডারথাল গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে প্রতিযোগিতা, রক্ত–সম্পর্কিত বিবাহ, আর হ্যাঁ, আধুনিক মানুষও জায়গা ছিনিয়ে নিয়েছে তাদের।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।