
আসন্ন নির্বাচনে পুলিশ যদি কোনো প্রার্থীর পক্ষ থেকে অবৈধ সুবিধা বা বিশেষ সহায়তা প্রদান করে, তখন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে — বলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও উৎসবমুখর পরিবেশে হবে।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে সচিবালয়ের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত কোর কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব বক্তব্য দেন। এ সময় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন,“কোনো রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের অবৈধভাবে সহায়তা বা বিশেষ সুবিধা দিলে সংশ্লিষ্ট পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
তিনি আরও বলেন, যদি পুলিশের কোনো ধরনের অবহেলা বা নেগলিজেন্স ধরা পড়ে, তাহলে তাঁকে সঙ্গে সঙ্গে আইনের আওতায় আনা হবে এবং পানিশমেন্ট (শাস্তিমূলক ব্যবস্থা) নেওয়া হবে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার বক্তব্য থেকে প্রতীয়মান হয় যে নির্বাচনকালীন অনিয়ম রোধে প্রশাসনিক ও আইনগত ব্যবস্থা কঠোর হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তাঁর বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়েছে, বর্তমান প্রশাসন নির্বাচনকে অবাধ ও সুষ্ঠু করে তোলার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং অপরাধমূলক বা অনৈতিক আচরণের ক্ষেত্রে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বা উচ্চ পর্যায়ের অন্যান্য কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে কোর কমিটির বৈঠকে এসব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের দেয়া উদাহরণ হিসেবে বলা হয়েছে— বিএনপি প্রার্থীদের তালিকা ঘোষণার পর ডিএমপি’র উত্তরা পূর্ব থানার ওসি আলহামদুলিল্লাহ ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন, যা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়। এই ধরনের ঘটনাকে গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে এবং ভবিষ্যতে যদি পুলিশ কোনো প্রার্থীর বিশেষ সুবিধা প্রদান করে, সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
একই সভায় প্রশ্ন করা হয়, গত সরকারের সময় লুট হওয়া সব অস্ত্র কি উদ্ধার হয়েছে—বিশেষ করে বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে আগুন লাগার ঘটনায় সাতটি অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র চুরি হয়েছে বলে অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে। এ বিষয়ে তিনি বলেন,
“আগুনের পর কমিটি গঠন করা হয়েছে। অস্ত্র আদৌ চুরি হয়েছে কি না, তা তদন্তের পর জানাতে পারব। চুরি হলে তখন কার মাধ্যমে হয়েছে এবং কে দায়ী তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। এখনো স্টাব্লিশ করতে পারেনি কয়টি অস্ত্র চুরি হয়েছে।”
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার এই মন্তব্য থেকে বোঝা যাচ্ছে—অস্ত্র-চুরি ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত অভিযোগগুলো তদন্তের আওতায় নিয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে, এবং প্রমাণসাপেক্ষে দায়িত্বশীলদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
উল্লেখযোগ্য, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও পক্ষপাতিত্ব রোধের প্রশ্নটি ইতোমধ্যেই আলোচনার মুখ্য বিষয় হিসাবে সম্মুখে এসেছে; কোর কমিটির বৈঠকে সেটিই প্রধান আলোচ্য বিষয়ের এক ছিল বলে সূত্ররা জানান।
আপনি চাইলে আমি এই সংবাদটি নির্দিষ্ট একটি পত্রিকা বা নিউজব্র্যান্ডের টোনে (যেমন — প্রথম আলো, বাংলা ট্রিবিউন, সময় নিউজ ইত্যাদি) রিফর্ম্যাট করে দিতে পারি।
বিমানবন্দরে কার্গো ভিলেজে আগুনের ঘটনায় মামলা হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রত্যেকটি দুর্ঘটনার পর একটি জিডি হয়।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়া হয় উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘এই বক্তব্যগুলোর অনেক সময় সত্যতা থাকে না। কিন্তু সাংবাদিকদের বক্তব্য সত্যি থাকে। সেজন্য সাংবাদিকদের অনুরোধ করব উসকানিমূলক বক্তব্যগুলো সাংবাদিকরা বেশি প্রতিহত করতে পারেন, যদি আপনারা সত্য সংবাদটা দিয়ে দেন। কোনো ধরনের সন্দেহ থাকলে সংশ্লিষ্ট এজেন্সির সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।’
উসকানিমূলক বক্তব্য দেশের বাইরে থেকে বেশি আসে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘দেশে ইউটিউব আছে। দেশে বসেও যে কেউ করে না তাও নয়। দু-একজন যারা করছে, তাদের পুলিশ আইনের আওতায় নিয়ে আসছে।’
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘রাউজানে অভিযান পরিচালনা করে ১১টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে এবং সন্ত্রাসীও ধরা হয়েছে। রাউজান, ফটিকছড়ি একটু ডিফিকাল্ট এলাকা। আগেও ছিল, এখনো ডিফিকাল্ট। এসব জায়গায় অপরাধ করে অপরাধীরা পাহাড়ে চলে যায়।’
পুলিশ কমিশনের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, সভায় এ বিষয়ে আলোচনা হয়নি, তবে আল্লাহ দিলে পুলিশ কমিশন হয়ে যাবে। অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যার মাধ্যমে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হোক, সে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য কিংবা অন্য কেউ, প্রত্যেককেই আইনের আওতায় আনা হবে।
নির্বাচনের সময় সেনাবাহিনীর ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার থাকবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের সময় বন্ধ হবে কেন। আমরা বন্ধ করছি নাকি। নির্বাচন আসুক সে সময় জিজ্ঞেসা কইরেন।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



