স্পোর্টস ডেস্ক: নেইমার পিএসজিতে থাকছেন নাকি বার্সেলোনায় ফিরছেন? নাকি সাবেক প্রতিদ্বন্দ্বী ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদে নাম লেখাচ্ছেন। অনেক দিন থেকেই এ আলোচনাই সবচেয়ে বেশি চলছে ফুটবল পাড়ায়।
এদিকে পাঁচ বছর আগে বিশ্বরেকর্ড ২১৭০ কোটি টাকা ট্রান্সফার ফি দিয়ে নেইমারকে বার্সেলোনা থেকে নিয়ে গিয়েছিল পিএসজি। এরপর সময় গড়িয়েছে, কিন্তু নেইমারকে যে কারণে দলে টানা, সেই চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতা হয়নি ফরাসি দলটির। সময়ের সাথে সাথে ব্রাজিল তারকার নিবেদন নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন, একের পর এক মাঠের বাইরের কর্মকাণ্ড দিয়ে শিরোনামে এসেছেন তিনি। তাতে পিএসজিও তিতিবিরক্ত হয়ে উঠেছে তার ওপর। এতটাই যে, তাকে দলছাড়া করতে ১৬৮২ টাকার ক্ষতিকেও পাত্তা দিচ্ছে না ক্লাবটি।
নেইমারকে দলছাড়া করতে চায় পিএসজি, এটা পুরোনো খবর। সেজন্যে পিএসজির তো আগে যোগ্য দল খুঁজে বের করতে হবে? স্প্যানিশ সাংবাদিক হোসে আলভারেজ জানাচ্ছেন, সেই দলটা খুঁজে বের করে ফেলেছে পিএসজি। নেইমারের পুরোনো দল বার্সেলোনাতেই তাকে ফেরত পাঠাতে চায় ফরাসি পরাশক্তিরা। সম্প্রতি এল চিরিঙ্গিতো টিভিতে তিনি জানান, বার্সেলোনার কাছে পিএসজির প্রস্তাব গিয়েছে, ৪৮৯ কোটি টাকা হলেই নেইমারকে কিনতে পারবে দলটি।
২০১৩ সালে সান্তোস থেকে নেইমারকে ইউরোপের পথ দেখায় বার্সেলোনা। নেইমারের ক্যারিয়ারের বসন্তটাও কেটেছে সেখানেই। লিওনেল মেসি আর লুইস সুয়ারেজের সঙ্গে তাকে নিয়ে দুর্ধর্ষ এক ত্রয়ী গঠন করেছিল দলটি। জিতেছিল একটা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, দুটো লা লিগা, তিনটে কোপা দেল রে শিরোপা। বার্সেলোনার হয়ে ১৮৬ ম্যাচ খেলে নেইমার করেছিলেন ১০৫ গোল, সতীর্থদের দিয়ে করিয়েছিলেন আরও ৭৬টি।
এরপর ২০১৭ সালে পিএসজি বিশ্বরেকর্ড গড়ে দলে ভেড়ায় তাকে। তবে এরপরই যেন নেইমারের দুঃসময়ের শুরু। একের পর এক চোট আর বিতর্কে জর্জরিত হয়েছেন তিনি, যার ছাপ পড়েছে তার পারফর্ম্যান্সে। তবে পিএসজির হয়ে ভালো একটা সময় কাটিয়েছিলেন ২০২০ থেকে ২০২১, এই দুই বছরে। দলকে একবার ফাইনাল আর একবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে তুলেছিলেন নেইমার। তবে শিরোপাটা রয়ে যায় অধরাই।
এরপর বাড়তে থাকে নেইমারকে নিয়ে গুঞ্জন। নানা বিতর্কে তার নিবেদন নিয়ে ওঠা প্রশ্নটা বাড়তে থাকে পাল্লা দিয়ে। কিলিয়ান এমবাপেকে দলে রেখে দেওয়ার পর তাই তাকে নিয়ে কঠোর সিদ্ধান্তে চলে এসেছে পিএসজি, এমনটাই জানাচ্ছিল ইউরোপীয় সংবাদ মাধ্যম।
গুঞ্জনের আগুনে ঘি ঢালে পিএসজি সভাপতি নাসের আল খেলাইফির মার্কাকে দেওয়া সাক্ষাৎকার। তিনি সেখানে বলেন, ‘আমরা তরুণ, প্রতিভাবান ও নিবেদিত খেলোয়াড় চাই, যাদের জেতার মানসিকতা আছে, এমন মানুষ চাই যারা ক্লাবের ব্যাজের জন্য মরতে পর্যন্ত রাজি থাকবে।’
পিএসজিতে গেল মৌসুমে রীতিমতো তারার হাটই বসে গিয়েছিল। নেইমারের সঙ্গে কিলিয়ান এমবাপে, আনহেল ডি মারিয়ারা তো ছিলেনই, সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন লিওনেল মেসি, সার্জিও রামোস আর ইউরোর সেরা গোলরক্ষক জিয়ানলুইজি ডনারুমারাও। তবে সেই দল নিয়েও চ্যাম্পিয়ন্স লিগে কিছু করতে পারেনি পিএসজি। রিয়াল মাদ্রিদের কাছে হেরে বিদায় নিয়েছে শেষ ষোলো থেকেই।
সেজন্যেই তারার হাটের ওপর থেকে বিশ্বাস উঠে গেছে পিএসজির। এখন তাদের লক্ষ্য দলগতভাবে শক্তিশালী হওয়া। খেলাইফির ভাষ্য, ‘আমরা দলগতভাবে শক্তিশালী হতে চাই। একটা দল হয়ে খেলতে চাই, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যেটা, আমরা ক্লাবটার জন্য খেলতে চাই।’
এর ঠিক পরই নেইমারের পিএসজি ছাড়ার গুঞ্জনে বাতাস ভারি হচ্ছে ইউরোপীয় সংবাদ মাধ্যমে। হোসে আলভারেজ জানাচ্ছেন, বার্সেলোনাকে ৪৮৯ কোটি টাকার প্রস্তাব পাঠালেও কাতালান ক্লাবটি চাইলে আরও কম দামে কিনতে পারবে ব্রাজিলিয়ান এই তারকাকে।
তার বার্সেলোনা ছাড়ার এক বছর পর থেকেই গুঞ্জন শুরু হয়েছিল তার কাতালুনিয়ায় ফেরার। খেলাইফির সবশেষ বক্তব্যের পর তা বেগ পেয়েছে আরও। তবে নেইমারের বার্সেলোনায় যাওয়ার পথে বড় অন্তরায় হচ্ছে কাতালান ক্লাবটির বাজে অর্থনৈতিক অবস্থা। ক্লাবটি বর্তমানে যে অবস্থানে আছে, তাতে নেইমারের বর্তমান বেতন দেওয়া কোনোভাবেই সম্ভব নয় বার্সার। বর্তমানে বছরে পিএসজি থেকে ৪৬৪ কোটি টাকা পান নেইমার। এই পরিমাণ অর্থ এক খেলোয়াড়ের বেতনে খরচ করার মতো অবস্থায় নেই বার্সা। জোর গুঞ্জন চললেও এই কারণে আপাতত তার বার্সায় যাওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।