সাফ অনূর্ধ্ব-২০ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের উদ্বোধনী ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে গোলবন্যায় ভাসিয়েছিল বাংলাদেশ। ৯-১ গোলের সেই জয়ের আত্মবিশ্বাস নিয়ে দ্বিতীয় ম্যাচে নেপালের বিপক্ষে মাঠে নেমেছিল সাগরিকারা। যেখানে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করেছে দুই দল। তবে শেষ মুহূর্তে গোল করে জয় তুলে নিয়েছে স্বাগতিকরা।
রবিবার (১৩ জুলাই) কিংস অ্যারেনায় প্রথমার্ধে ২-০ গোলে এগিয়েছিল পিটার বাটলারের দল। কিন্তু বিরতির পর কামব্যাক করে সমতায় ফেরে নেপাল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে গোল করে রোমাঞ্চকর এক জয় উপহার দেন তৃষ্ণা।
এদিন ম্যাচের তিন মিনিটের মধ্যে দুবার কর্নার পায় বাংলাদেশ। কিন্তু কোনোটিই কাজে লাগাতে পারেনি মেয়েরা। এর ঠিক এক মিনিট পর ডান পাশ ধরে আক্রমণে ওঠা বাংলাদেশের পূজা দাসের লম্বা শট পোস্টের পাশ দিয়ে চলে যায়। অষ্টম মিনিটে জয়নব বিবির লং শট কোনোমতে আটকে দেন নেপালের গোলকিপার সুজাতা তামাং।
এভাবে নিয়মিত আক্রমণ করার পর ১৩ মিনিটে কাঙ্ক্ষিত গোলের দেখা পায় বাংলাদেশ। বক্সের বাঁ পাশ থেকে সাগরিকার বাড়ানো বল পেয়ে জটলার মধ্যে থেকেই শট নেন মুনকি আক্তার। কিন্তু তার শটে তেমন জোর না থাকায় প্রতিপক্ষ খেলোয়াড় গোললাইন থেকে ক্লিয়ার করেন। সেই বল ডান পাশে ফাঁকা পেয়ে ফিরতি শটে জালে জড়ান সিনহা। টুর্নামেন্টে এটি তার দ্বিতীয় গোল।
গোল হজমের পর আক্রমণের ধার বাড়িয়ে দেয় নেপাল। তবে একাধিকবার সুযোগ নষ্ট আর বাংলাদেশের জমাট রক্ষণের কারণে বারবার গোলমুখে হতাশ হতে হয়েছে নেপালের ফুটবলারদের।
৩৬ মিনিটে বাংলাদেশের ক্ষুরধার আক্রমণ রুখে দেওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করেও পারেনি নেপাল। এবার ব্যবধান দ্বিগুণ করেন সাগরিকা। শান্তি মার্ডির ক্রস ডি-বক্সে পেয়ে শট নেন শিখা, কিন্তু তার শট সরাসরি প্রতিপক্ষ গোলকিপারের গায়ে লেগে ফিরে আসে। শিখার ফিরতি শট আবার সেই গোলকিপারের গায়ে লেগে দিক বদলায়। পোস্টের ডান পাশে থাকা সাগরিকা আর ভুল করেননি। নিখুঁত শটে নেপালের জাল কাঁপান এই ফরোয়ার্ড।
এরপর ৪৩ মিনিটে বাংলাদেশের রক্ষণ অরক্ষিত পেয়েও গোল আদায় করতে পারেনি নেপাল। এতে ২-০ গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় বাংলাদেশ।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই দারুণ সুযোগ পেয়েছিলেন সাগরিকা। গতিতে ডিফেন্ডারদের পেছনে ফেলে গোলকিপারকে একা পেয়েও গিয়েছিলেন তিনি, কিন্তু বলে শেষ স্পর্শ জোরে হওয়ায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে শটই নিতে পারেননি। ৫২ মিনিটে শিখাও গোলকিপারকে একা পেয়ে উড়িয়ে মেরে নষ্ট করেন আরেকটি সুযোগ।
৫৫ মিনিটে আক্রমণে ওঠা সাগরিকাকে ফাউল করেন নেপালের সিমরান, এক পর্যায়ে সাগরিকার মাথা ও চুল টেনে ধরেন তিনি। তাতে শুরুতে উত্তেজনা ছড়ায় দুজনের মধ্যে। পরে তা ছড়িয়ে পড়ে দুই পক্ষের মধ্যেই। সাগরিকা ও সিমরান দুজনকে লাল কার্ড দেখান রেফারি।
একটু পরই আফঈদা, বন্যাকে তুলে তৃষ্ণা রানী ও রুমা আক্তারকে নামান বাংলাদেশ কোচ। ৭৪ মিনিটে সুযোগ আসে শিখার সামনে, কিন্তু গোলকিপারকে একা পেয়ে দূরের পোস্ট দিয়ে তার লক্ষ্যভেদের চেষ্টা সফল হয়নি। ছুটে এসে ক্লিয়ার করেন আনিশা।
পরের মিনিটে মিনার শট ছুটে গিয়ে আটকাতে চেষ্টা করেন স্বর্ণা, কিন্তু পারেননি। মিনার ফিরতি শট রুমা ফেরানোর আগেই তাকে পেছন থেকে ট্যাকল করে বসেন জয়নব। তাতে রেফারি বাজান পেনাল্টির বাঁশি। আনিশার লক্ষ্যভেদে ম্যাচে ফেরে নেপাল।
শান্তি ও শিখাকে তুলে উমহেলা মারমা ও অয়ন্ত বালাকে নামান বাটলার। ৮৬ মিনিটে সমতায় ফিরে নেপাল। পুর্ণিমার আড়াআড়ি ক্রস বুটের তলার টোকায় স্বর্ণাকে পরাস্ত করেন মিনা।
যোগ করা সময়ের শেষ মূহুর্তে বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত করেন তৃষ্ণা। এতে নেপালকে স্তব্ধ করে টানা দ্বিতীয় জয়ে ট্রফির পথে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেলো বাংলাদেশ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।