অল্প কিছু বিষয় সব নোবেল জয়ীর মধ্যেই দেখা যায়। তা, এসব থাকলে যে আপনি নোবেলটা পাবেনই, সে কথা নিশ্চিত করে বলার উপায় নেই। তবে এসব না থাকলে আপনার নোবেল পাওয়ার সম্ভাবনা যে কমে যাবে, সেটুকু আপনি বিষয়গুলো পড়লেই বুঝবেন। তাহলে আসুন, দেখে নেওয়া যাক, কোন কাজগুলো করলে নোবেল পাওয়ার পথটা ত্বরান্বিত হয়।
নোবেল পুরস্কারের আশা করবেন না
হ্যাঁ! এ যেন ঠিক অমরত্বপ্রাপ্তির প্রথম শর্তের মতো। চাইলে পাবে না, না চাইলে পাবে! আসলে তা নয়। বিষয়টা হলো, নোবেল বা কোনো পুরস্কারের জন্য গবেষণা করেন না সত্যিকারের গবেষকেরা। তাঁরা মূলত ভালো কোনো প্রশ্ন বা গুরুত্বপূর্ণ কোনো সমস্যা বেছে নেন। সেটা সমাধানের চেষ্টা করেন।
আর ভাগ্য ভালো হলে, এই পথ চলতে চলতেই দারুণ কোনো ইউরেকা মোমেন্ট ধরা দেয়। বড় কোনো সমস্যা সমাধান করে মানুষের উপকার করা—এটাই এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় পুরস্কার। তার ওপর উপরি মিলতে পারে নোবেলের মতো পড় পুরস্কারও! তবে সে কথা মাথায় রেখে গবেষণা করা যাবে না। কেউ যদি তা-ই করেন, সম্ভাবনা আছে, এ কুলও যাবে, ও কুলও যাবে।
পরীক্ষণ ব্যর্থ হোক!
নোবেল জয়ী মার্কিন পদার্থবিদ রিচার্ড ফাইনম্যানের কথা হলো, এক্সপেরিমেন্টে ফেইল করলে, কোনো পরীক্ষণে সমস্যা দেখা দিলে তখন সেটা সমাধানের চেষ্টা করে করেই এগোয় বিজ্ঞান। ফলে আপনার এক্সপেরিমেন্ট বা পরীক্ষণ যদি ব্যর্থ হয়, ‘সবার অঙ্ক মেলে, শুধু আমার অঙ্ক মেলে না’—এমনটা ভাববেন না। বরং তার কারণ খুঁজে বের করুন। তারপর গবেষণাকে এগিয়ে নিন পরের ধাপে। তাহলে গবেষণা শুধু যে আরও পোক্ত হবে, তাই নয়; ত্বরান্বিত হবে আপনার বড় পুরস্কার প্রাপ্তির সম্ভাবনাও।
অন্য বিজ্ঞানীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখুন
নেটওয়ার্কিং ও কোলাবোরেশন—নোবেল প্রাপ্তির এ এক গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। কারণটা বোঝাও খুব কঠিন নয়। নোবেল পেতে হলে আপনাকে কারো মনোনয়ন দিতে হবে। সেটা দেবেন কে? যাঁদের সঙ্গে আপনার সম্পর্ক ভালো, তাঁরা আপনার কাজটা খুঁটিয়ে দেখে যদি ভালো মনে করেন, সম্ভাবনা আছে, তাঁরাই মনোনয়ন দেবেন আপনাকে আগবাড়িয়ে। আবার ‘ওয়ার্ড অব মাউথ’, মানে তাঁদের মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়বে আপনার গবেষণার কথা। ফলে সেটা আপনাকে এগিয়ে দিতে পারে আরও দশজনের চেয়ে।
সহযোগী একজন হলে ভালো হয়, দুজনের বেশি নয়
জানেনই তো, নোবেল দেওয়া হয় তিনজনকে। কাজেই তিনের বেশি মানুষ মিলে গবেষণা করলে বাদ একজন পড়বেনই! সেই বাদ পড়ার তালিকায় পড়তে না চাইলে আগে থেকেই সর্বোচ্চ দুই বিজ্ঞানীকে নিয়ে দল করলে ভালো। অন্তত এমনটাই বলে বিজ্ঞানের ইতিহাস।
আগের নোবেল জয়ীদের অধীনে কাজ করুন
ইতিহাসে বারেবারে দেখা গেছে, একজন নোবেল জয়ীর অধীনে কাজ করতে করতেই এসেছে নতুন ইউরেকা মোমেন্ট। গুরুর উপদেশ কখনো মেনে, কখনো অমান্য করে কিংবা গুরুরই গবেষণার পরিমার্জন করেও নোবেল পেয়েছেন অনেকে। এর আদর্শ উদাহরণ নীলস বোর। গুরু রাদারফোর্ডের পরমাণু মডেল পরিমার্জন করে শুধু নোবেলই পাননি, কোয়ান্টাম বলবিদ্যার অগ্রপথিক হিসেবেও ইতিহাসে খোদিত হয়ে আছে তাঁর নাম।
সহকর্মীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করবেন না
আগেই তো বলেছি, মনোনয়ন ছাড়া নোবেল পাওয়া সম্ভব নয়। আপনার সহকর্মীরাই যদি মনোনয়ন দিয়ে থাকেন, তবে তাঁদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করলে কমে যেতে পারে নোবেল পাওয়ার সম্ভাবনা। ইতিহাসেই আছে এর ভুরি ভুরি উদাহরণ। তবে উদাহরণে না গিয়েও বলা যায়, মানুষের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করা কোনো ভালো কাজ নয়। মেজাজ গরম হলেও একটু ঠান্ডা থাকুন। কে জানে, ওই ব্যক্তিটিই হয়তো কোনোদিন মনোনীত করতে পারেন আপনাকে নোবেল পুরস্কারের জন্য!
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।