জুমবাংলা ডেস্ক : নোয়াখালীতে বন্যার পানি কমেছে। তবে দেখা দিয়েছে খাদ্য ও সুপেয় পানির সংকট। এখনো পানিবন্দি থাকায় বিভিন্ন স্থানে বাড়ছে নানা ধরণের সংকট। টিউবওয়েলগুলো ডুবে যাওয়ায় বন্যাকবলিত এলাকায় দেখা দিয়েছে সুপেয় পানির তীব্র সংকট। রান্না করার খাবারের সংকটও আছে। চর্মরোগ, ডায়রিয়াসহ নানা পানিবাহিত রোগ বেড়ে গেছে। পানি কমতে থাকায় ফুটে উঠছে ক্ষত চিত্র।
জেলার আটটি উপজেলা বন্যায় কবলিত হয়েছে। এসব এলাকায় পানি কমছে। বৃষ্টি না হওয়ায় ও তিনদিন ধরে সূর্য ওঠায় জেলাতে বন্যা পরিস্থিতির অনেক উন্নতি। জেলা জুড়ে খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পক্ষ থেকে ত্রাণ দিলেও তা প্রয়াজনের তুলনায় কম। যাতায়াত ব্যবস্থা ভালো না হওয়ায় দুর্গম এলাকাগুলোতে যথাযথ ভাবে ত্রাণ পৌঁছানো যাচ্ছে না। জেলায় বাড়ছে ডায়রিয়া ও সাপে কাটা রোগীর সংখ্যা।
জেলার বেশীর ভাগ নিচু এলাকায় এখানো পানিবন্দী রয়েছে কয়েক লাখ মানুষ। ঘরবাড়ি এখনও কোমর সমান পানির নিচে। এমুহুর্তে যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে নৌকা। বিভিন্ন উপজেলায় সড়কের পাশের ঘরবাড়গুলো এখনো পানির নীচে। প্রত্যন্ত অঞ্চলসহ শহরের অনেক এলাকায়ও ভেঙে পড়েছে স্যানিটেশন ব্যবস্থা। ময়লা-আবর্জনা ছড়িয়ে পড়ছে বন্যার পানিতে। এত করে দেখা দিচ্ছে পানিবাহিত বিভিন্ন রোগ-বালাই।
সদর উপজেলার চরমটুয়া ইউনিয়নের কামাল উদ্দিন বলেন, পুরো ইউনিয়নের মানুষ মানবেতর জীবনযাপন করছে। প্রতন্ত এলাকায় খাদ্য সহায়তা যাচ্ছে না।
কাদির হানিফ ইউনিয়নের মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বিশুদ্ধ পানির অভাব এবং সেপটিক ট্যাংকের ময়লা-আবর্জনা পানিতে ছড়িয়ে পড়ায় ডায়রিয়া, চর্মরোগসহ নানা পানিবাহিত রোগে ভুগছে পানিবন্দী মানুষরা। যারাই বন্যার পানিতে চলাচল করছেন, তাদের প্রত্যকের চর্ম রোগ দেখা দিচ্ছে।
সেনবাগ উপজেলার মাহবুবুর রহমান বলেন, বাসিন্দা মোরশেদ আলম বলেন, রোদ থাকায় পানি কিছুটা কমছে। অনেক পানি নেমে গেছে। তবে বিশুদ্ধ খাবার পানির অভাব দেখা দিয়েছে। পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে বন্যার্তরা।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বন্যাকবলিত এলাকায় এখন চর্মরোগ, ডায়রিয়াসহ পানিবাহিত নানা রোগ ছড়িয়ে পড়ছে নোয়াখালীতে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা হয়েছে। এখন পানিবাহিত রোগ ছড়িয়ে পড়বে। ত্রাণ সহায়তার পাশাপাশি প্রশাসনকে পানিবাহিত রোগ মোকাবিলায় কাজ করতে হবে।
নোয়াখালী জেলা সিভিল সার্জন ডা. মাসুম ইফতেখার বলেন, ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। চর্মরোগীর সংখ্যাও আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। ডায়রিয়ার প্রকোপ যাতে মহামারি আকারে ছড়িয়ে না পড়ে, সেজন্য আমরা বন্যাকবলিত এলাকায় পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, খাবার স্যালাইন সরবরাহ করছি। চর্মরোগের চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সলোতে পর্যাপ্ত পরিমাণ ওষুধ সরবরাহ করা হয়েছে। আক্রান্তদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে সেবা নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, গত ১২ ঘণ্টায় সদর উপজেলায় এক সেন্টিমিটার পানি কমেছে। বেগমগঞ্জ উপজেলায় তিন সেন্টিমিটার পানি কমেছে। অন্যান্য উপজেলায়ও পানি কমছে।
জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বলেন, নোয়াখালী জেলায় পানিবন্দী প্রায় ২২ লাখ মানুষ। সরকারিভাবে খোলা হয়েছে ১ হাজার ৩৮৯টি আশ্রয়কেন্দ্র। ২ লাখ ৫৯ হাজার জন মানুষ এসব আশ্রয়কেন্দ্রে আছেন। সরকারি ত্রাণ সহায়তা হিসেবে এ পর্যন্ত ১৭১৮ মেট্রিক টন চাল, ৪৫ লাখ টাকা, ১ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার, ৫ লাখ টাকার শিশু খাদ্য ও ৫ লাখ টাকার গো খাদ্য বিতরণ করা হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।