জুমবাংলা ডেস্ক: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরের সলিমাবাদ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ক্ষমতাশীল আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী আবদুল মতিন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
রবিবার (৭ নভেম্বর) দুপুরে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে আবদুল মতিন এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী হোসেন মিয়া মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন।
২৮ নভেম্বর সলিমাবাদসহ বাঞ্চারামপুর উপজেলার ১১ ইউনিয়ন পরিষদের ভোট।
রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় জানায়, সলিমাবাদ ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত আবদুল মতিন, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী জালাল মিয়া ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের হোসেন মিয়া।
আবদুল মতিন ও হোসেন মিয়া মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেয়ায় এই ইউনিয়নে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী জালাল মিয়া।
আবদুল মতিন বলেন, ‘আমি অসুস্থ হয়ে পড়ায় নির্বাচন করতে পারছি না। তাই মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছি।’
কোনো চাপে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন কিনা জিজ্ঞেস করা হলে তিনি মন্তব্য করতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক সূত্র জানায়, গত ২১ অক্টোবর তৃণমূল আওয়ামী লীগের ভোটের মাধ্যমে তারা দলীয় প্রার্থিতা চূড়ান্ত করে। এতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ বাঞ্ছারামপুর আসনের সংসদ সদস্য ক্যাপ্টেন এবি তাজুল ইসলামের ঘনিষ্ঠ অনুসারী বলে পরিচিত।
ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জালাল আহমেদ পেয়েছিলেন ৩৩২ ভোট। অন্যদিকে যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতা মহিউদ্দিন মহির অনুসারী হিসেবে পরিচিত ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি আবদুল মতিন পেয়েছিল ১১৭ ভোট। তৃণমূলের ভোটে প্রথম হন ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জালাল আহমেদ। কিন্তু কেন্দ্র থেকে প্রথম হওয়া জালাল আহমেদকে না দিয়ে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি মো. আবদুল মতিনকে মনোনয়ন দেয়া হয়। এরপর থেকে ইউনিয়ন ও উপজেলা আওয়ামীলীগের একটি বড় অংশ নাখোশ হন আবদুল মতিনের উপর। এর পর থেকে চাপের মুখে পড়েন আব্দুল মতিন।
এরই অংশ হিসেবে রোববার মনোনয়ন প্রত্যাহারের দিনে তিনি নিজের অসুস্থতা দেখিয়ে মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার করেন।
এ ব্যাপারে ছলিমাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং আওয়ামী লীগের তৃণমূলের ভোটে প্রথম হওয়া চেয়ারম্যান প্রার্থী জালাল আহমেদ জানান, মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারে দিনে রোববার দুইজন প্রার্থী মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। এতে আমি ছাড়া আর কেউ নেই। তাই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আমি নির্বাচিত হতে চলেছি। এ জন্য আমি সকলের দোয়া এবং সহযোগিতা চাচ্ছি।
খোশ মেজাজে জালাল আহমেদ বলেন, নৌকার প্রতীক পেয়ে মতিন ভাই কেন প্রত্যাহার করলেন এ বিষয়টি আমার জানা নেই।
এ বিষয়ে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা আবু তৌহিদ জানান, চেয়ারম্যান পদে তিনজন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। যাচাই-বাছাই শেষে তিনজনের মনোনয়নপত্রই বৈধ ঘোষণা করা হয়।
তিনি আরও জানান, ১১ নভেম্বর পর্যন্ত মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করা যাবে। তবে দুপুরে শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবদুল মতিন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন। এর কিছুক্ষণ পর ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী হোসেন মিয়াও তার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন।
রিটার্নিং কর্মকর্তা আবু তৌহিদ জানান, স্বতন্ত্র প্রার্থী জালাল মিয়া বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ইউপি চেয়ারম্যান হতে যাচ্ছেন। তিনি আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে পরিচিত।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।