গোপাল হালদার, পটুয়াখালী: পটুয়াখালীতে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে গৃহস্থালি কৃষিতে উৎপাদিত তাজা শাক-সবজির বাজার।
সদর উপজেলার ইটবাড়িয়া ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ২ নম্বর ব্রিজের পাশেই প্রতিদিন বিকাল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত চলে এ বাজার। বাজার বসলেই পারিবারিক দৈনন্দিন খাদ্য তালিকার প্রিয় দেশিয় শাক-সবজি কিনতে ভিড় করেন স্থানীয় ও শহরের বাসিন্দারা।
শহরতলীর কাছাকাছি হওয়ায় অনেকেই বিকালে ঘুরতে বের হয়ে ঘরে ফেরার সময় প্রয়োজনীয় কাঁচাবাজার কেনার কাজ সেরে ফেলেন এখান থেকে।
সরাসরি কৃষকের বাগান, পুকুর পাড় বা সবজি বাগানে উৎপাদিত তাজা শাকসবজি আসে এই বাজারে। বিক্রেতা হিসেবেও আছেন খোদ কৃষকেরাই। নিজের হাতে ফলানো সবজি সরাসরি ভোক্তার হাতে তুলে দিচ্ছেন তারা। কৃষি পণ্যের প্রয়োজনের অতিরিক্ত অংশটুকু ছোট ব্যাগ, বস্তা বা সাজিতে পসরা সাজিয়ে বসেন বিক্রির জন্য।
শুধু শাক-সবজিই নয় নানান মৌসুমী দেশিয় ফলেরও উপস্থিতি ভালো থাকে এ বাজারে। বিলুপ্ত প্রজাতির দেশি ফল কিনতে বাজারে আসা লোকদের আগ্রহও থাকে অনেকটাই বেশি। এছাড়া গৃহস্থালিতে পালন করা দেশি মুরগি, কবুতর ও হাস দেখা যায় বাজারটিতে।
সেখানে মনের মতো তাজা সবজি কিনতে পেরে খুশি ক্রেতারা। একটু দরদাম করে অল্প সময়ে প্রয়োজনীয় শাক-সবজি ও দেশি ফলমূল কিনতে পারেন তারা। সব বিক্রেতাই সামান্য কিছু সবজি নিয়ে এসে দরদামে মিললেই দিয়ে দেন সেগুলো। অনেকে কেজি ওজন ছাড়া ঠিকা বিক্রি করেন। আবার অনেকে বিক্রি করেন কেজি দরে। এক কথায় বাজারটিতে বাঙালির পূরানো সংস্কৃতির কিছুটা হলেও দেখা মেলে।
বাজারে সবজি বিক্রেতা আব্দুল মন্নান ফকির বলেন, আমি আমার উঠানে নিজেদের জন্য কিছু শাক লাগাই। সেখান থেকে মাঝে মধ্যে অতিরিক্ত অংশ বিক্রি করি।
আরেক বিক্রেতা আব্দুল বারেক বলেন, ‘আমরা এমনে কৃষি কাজ করি। এই ফাঁকে বাড়ি পুকুর পাড়ে কিছু শাক-সবজি লাগাই। নিজেরাও খাই, বেশি টুকু বিক্রি করি।’
বাজারের নিয়মিত ক্রেতা সার্থক রহমান বলেন, ‘আমরা শহরে থাকি। শহরের বাজারগুলোতে চার থেকে পাঁচ দিন পুরোনো সবজি পাওয়া যায়। আর এখানে ক্ষেত থেকে তাৎক্ষণিক নিয়ে আসা তাজা সবজি পাওয়া যায় কোনো ফর্মালিন ছাড়াই। তাই আমি আমার পরিবারের জন্য এখানে এসে বাজার সেরে নেই।’
বিক্রেতা মোতাহার মৃধা বলেন, নিজেরা নতুন বাড়ি করেছি। বাড়িতে আমরা পেয়ারা ও কলাগাছ লাগাইছি। ফলন ভালো হওয়ায় নিজেরা খেয়ে অতিরিক্ত টুকু বিক্রি করি।
স্থানীয়রা বলছেন, রাস্তার পাশে বাজারটি হওয়ায় অনেকেই ঝুঁকি নিয়ে বেচা-কেনা করেন। বাজারের জন্য পাশে সুন্দর করে একটি নির্দিষ্ট স্থান নির্ধারণ করা গেলে সেটি আরও ভালো হবে।
ইটবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ মোজাম্মেল হক জোমাদ্দার বলেন, বাজারটি এখন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। বর্তমানে এরকম ফ্রেশ সবজির বাজার খুবই কম দেখা যায়। এটাকে কিভাবে স্থায়ী রুপ দেওয়া যায় সে বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।