গোপাল হালদার, পটুয়াখালী: পটুয়াখালীতে এবার তরমুজের বাম্পার ফলন পেয়েছেন কৃষকরা। ২ হাজার কোটি টাকা পর্যন্ত এই তরমুজ বিক্রি হবে বলে আশা করছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।
জেলার কলাপাড়া, গলাচিপা ও রাঙ্গাবালী উপজেলায় ব্যাপক তরমুজের চাষ করা হয়েছে। তরমুজ চাষে লাভবান হওয়ায় এই জেলার কৃষকরা তরমুজ চাষে আরও বেশি আগ্রহী হয়ে উঠছেন।
গলাচিপা উপজেলার হরিদেপপুর ইউনিয়নে তরমুজের অস্থায়ী তরমুজ ঘাটে চাষিরা জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে তরমুজ ট্রলারে করে নিয়ে আসছে বিক্রি করার জন্য। আবার অনেকে সরাসরি ট্রলার থেকে কিনে দেশের বিভিন্ন জেলায় নিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু বাজারে তরমুজের দাম অনেক বাড়তি। ফলে ক্রেতাদের অভিযোগ দেখা দিচ্ছে। তরমুজের অধিক উৎপাদনের কারণে খুচরা বাজারে কোন অভাব নেই।
সুত্রে জানা যায়, এই জেলায় প্রতিবারের মতই তরমুজের বাম্পার ফলন পেয়েছেন কৃষকরা। অনেক আগ থেকেই চাষিরা তরমুজের বিক্রি শুরু করে দিয়েছেন। তবে এই জেলায় তরমুজ বিক্রির জন্য কোন পাইকারি বাজার নেই। ফলে কৃষকরা মাঠে বসেই তরমুজ বিক্রি করছেন। পাইকারি ব্যবসায়ীরা মাঠ থেকেই তরমুজ কিনে নিয়ে যাচ্ছে।
পটুয়াখালীর গলাচিপার তরমুজ চাষি শফিক মুন্সী বলেন, এ বছর বন্যা বা দুর্যোগ না হলে আরও এক দফা তরমুজ বিক্রি করতে পারবো। কিছু মানুষ তরমুজ নেই বলে বাজারে কথা ছড়াচ্ছে। আসলে তা ঠিক না। এ বছর তরমুজের কোনো অভাব নেই। ক্ষেতে ভালো উৎপাদন হওয়ায় সব বিক্রি করতে পারি কিনা তা নিয়েই দুশ্চিন্তায় আছি।
তিনি আরো বলেন, তরমুজ আবাদে প্রচুর পানির প্রয়োজন হয়ে থাকে, এ জন্য সেচের সুবিধা নিশ্চিত করার সরকারের কাছে জোর দাবি জানাই। তরমুজের বীজের আমদানি নির্ভরতা কমানোর পাশপাশি সার ও কিটনাশকের দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখারও দাবি তার।
পটুয়াখালী নিউমার্কেট খুচরা বাজারে তরমুজ কিনতে আসা সাগর প্যাদা বলেন, পরিবারের সদস্যরা ক’দিন হলো তরমুজ খেতে চেয়েছে। তাই আজ তরমুজ কিনতে এসেছি। মাঝারি সাইজের একটি তরমুজ কিনলাম সাড়ে ৩০০ টাকায় গত বছর যা ছিলো ১৫০-২০০ টাকা। শুধু দোকানগুলোতে নয়, ভ্যানেও তরমুজের দাম বেশি।
পটুয়াখালী পৌর নিউমার্কেটের ব্যবসায়ী আলী হোসেন বলেন, এ বছর ফলের দাম বেশি। গত বছর একশো তরমুজ সাড়ে তিন হাজার থেকে ৪ হাজার টাকায় কিনেছি। এ বছর একই ফলের দাম ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা। তাই আমাদের বেশি দামে কিনে আবার বেশি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোহম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বর্তমান বছরে পটুয়াখালী জেলায় ২৮ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমিতে উচ্চ ফলনশীল জাতের তরমুজ আবাদ করা হয়েছে। এরই মধ্যে আগাম তরমুজ সংগ্রহ ও বিক্রি শুরু হয়েছে। কয়েকদিন পরই রমজান শুরু হবে। তখন তরমুজের চাহিদাও বেশি থাকবে। কৃষক ভালো দামও পাবেন। আশা করি জেলায় ২ হাজার কোটি টাকার বেশি তরমুজ বিক্রি হবে। কৃষকরা বাজার যাচাই করে বিক্রি করলে ভালো দাম পাবেন। উৎপাদনের পাশপাশি কৃষিপণ্যের বাজার সম্পর্কেও কৃষকদের ধারণা রাখতে হবে।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।