জুমবাংলা ডেস্ক: পদ্মা সেতুর ১৭ তম স্প্যান বসানো হচ্ছে আজ। সেতু কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছে মঙ্গলবার সকাল ১০ টা থেকে ১১টার মধ্যে এ স্প্যান বসানো হবে। আর এটি বসে গেলে সেতুর ২ হাজার ৫৫০ মিটার দৃশ্যমান হবে।
এছাড়া মাওয়া প্রান্তে ২২ ও ২৩ নম্বর খুঁটিতে (পিয়ার) ৪-ডি নম্বর স্প্যান বসানোর সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
এ ব্যাপারে পদ্মা সেতুর প্রকৌশলী হুমায়ুন কবির জানান, স্প্যানটি খুটির কাছাকাছি চরে নিয়ে বেশ কদিন আগে রাখা হয়েছিল। এখন শুধু বসানোর অপেক্ষা। ইতোমধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
তিনি জানান, ২২ ও ২৩ নম্বর খুঁটির জন্য তৈরি করা ৪ডি স্প্যানটি ২৮ ও ২৯ নম্বর খুঁটির কাছে প্লাটফরম তৈরি করে নদীর তীরে রাখা আছে। কিন্তু নদীর চ্যানেলের নাব্যতার কারণে স্প্যানটি সেখান থেকে তুলে এনে স্থাপনে বিলম্ব হয়েছে। পলি জমে থাকায় নাব্য সঙ্কটের কারণে ক্রেনবাহী জাহাজ খুঁটির কাছে পৌঁছতে পারছিল না তাই স্প্যান বসাতে বিলম্ব হচ্ছিল। তবে দিনরাত ড্রেজিং করে ওই এলাকায় নাব্যতা ফিরিয়ে আনা হয়েছে। এখন আর কোন সমস্যা নাই।
এছাড়া ৪ বা ৫ ডিসেম্বর ১৮তম স্প্যান বসানোর কথা রয়েছে। ১৮তম স্প্যানটি বসবে ১৭ ও ১৮ নম্বর খুঁটিতে। পরবর্তীতে ডিসেম্বরেই ২১ ও ২২ নম্বর খুটিতেও স্প্যান বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে। এছাড়া ৩৩-৩২ ও ৩১-৩২ নম্বর খুঁটিতেও স্প্যান বসবে অল্প সময়ের মধ্যে। খুঁটি এবং স্প্যান তৈরী হয়ে যাওয়ায় দ্রুত অল্প সময়ের ব্যবধানে স্প্যান উঠতে থাকবে।
এদিকে চীন থেকে আরও দু’টি স্প্যান বাংলাদেশে পৌঁছেছে। সমুদ্র পথে ১৯ নবেম্বর বিকালে স্প্যান দু’টি মোংলা পোর্টে এসে পৌছায়। কাস্টমসের কাজ চলছে এখন । ৪ থেকে ৫ দিন পরই এই দু’টি স্প্যানও মাওয়ায় এসে পৌছার কথা রয়েছে।
সেতুর ৪২টি খুঁটির মধ্যে ৩৩টি খুঁটি নির্মাণ সম্পন্ন হয়ে গেছে। এছাড়া ৭ নম্বর খুঁটির কাজ চলতি মাসেই শেষ হতে যাচ্ছে। আগামী ১০ ডিসেম্বর ৬ ও ৩০ নম্বর খুঁটির কাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা রয়েছে। আর বাকী ৮, ১০, ১১, ২৬, ২৭ ও ২৯ নম্বর খুঁটির কাজ আগামী মার্চের মধ্যে শেষ হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।
দ্বিতল পদ্মা সেতু হচ্ছে মুন্সিগঞ্জের মাওয়া ও শরীয়তপুরের জাজিরার মধ্যে। মূল সেতুর দৈর্ঘ্য (পানির অংশের) ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার। ডাঙার অংশ ধরলে সেতুটি প্রায় নয় কিলোমিটার দীর্ঘ হবে। পুরো সেতুতে মোট পিয়ারের সংখ্যা ৪২। প্রতিটি পিয়ারে রাখা হয়েছিল ছয়টি পাইল। একটি থেকে আরেকটি পিয়ারের দূরত্ব ১৫০ মিটার।
বহুল আলোচিত পদ্মা সেতু প্রকল্পটির যাত্রা শুরু হয় ২০০৭ সালে। সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকার ওই বছরের ২৮ আগস্ট ১০ হাজার ১৬১ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন করেছিল। পরে আওয়ামী লীগ সরকার এসে রেলপথ সংযুক্ত করে ২০১১ সালের ১১ জানুয়ারি প্রথম দফায় সেতুর ব্যয় সংশোধন করে। বর্তমান ব্যয় ৩০ হাজার কোটি টাকার বেশি। মূল সেতু নির্মাণে কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন কোম্পানি। আর নদীশাসনের কাজ করছে চীনের আরেক প্রতিষ্ঠান সিনোহাইড্রো করপোরেশন। দুই প্রান্তে টোল প্লাজা, সংযোগ সড়ক, অবকাঠামো নির্মাণ করছে দেশীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।