জুমবাংলা ডেস্ক: পদ্মা সেতু চালুর পর গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিসৌধে দর্শনার্থীর সংখ্যা কয়েকগুন বেড়ে গেছে। আর এতে টুঙ্গিপাড়ার অর্থনীতি সরব হয়ে উঠেছে। ঈদের ছুটির মধ্যে এটি আরও গতিশীল হয়েছে। ভ্যান, অটো চালক, হোটেল রেস্তরা ও দোকানীসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের আয় বেড়েছে।
গত ২৫ জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধন করেছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা । ২৬ জুন থেকে পদ্মা সেতু দিয়ে টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিসৌধে ঢাকা, চট্টগাম, রাজশাহী, সিলেটসহ সব অঞ্চল থেকে দর্শনার্থীরা আসতে শুরু করেন। তখন থেকেই টুঙ্গিপাড়া বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধ কেন্দ্রিক ব্যবসা বাণিজ্যের পালে নতুন হাওয়া লাগতে শুরু করে।
এই এলাকার হোটেল রেস্তরা ও দোকানগুলোতে বেচা বিক্রি বেড়েছে কয়েক গুন। ভ্যান, অটো চালকরা কাঁচা পয়সা আয় করছেন। ঈদের ছুটিতে বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে দর্শনার্থীর সমাগম তুলনামূলকভাবে আরো বেড়েছে। আর এতে সমাধিসৌধ কেন্দ্রিক অর্থনীতি আরো সরব হয়ে উঠেছে।
টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ বাবুল শেখ বলেন, পদ্মা সেতু দিয়ে প্রতিদিনই মন্ত্রী, এমপি, সচিব, আওয়ামী লীগ নেতাসহ সাধারণ মানুষ টুঙ্গিপাড়া আসছেন। তারা বঙ্গবন্ধুর প্রতি ফুলেল শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন। তারপর বঙ্গবন্ধুর জন্য দোয়া মেনাজাত করছেন। এখানে তারা সময় কাটাচ্ছেন। বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে নতুন নতুন তথ্য জানছেন। মানুষের ভিড়ে বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধ মুখর হয়ে উঠেছে।
তিনি আরও বলেন, মানুষের আগমনে টুুঙ্গিপাড়ায় হোটেল রেস্তরা ও দোকানপাটে কেনাকাটা বেড়েছে। ভ্যান, অটোরিকশাসহ বিভিন্ন পরিবহনের চালকদের আয় বেড়েছে। এতে টুঙ্গিপাড়ার অর্থনীতি সরব হয়ে উঠেছে।
বঙ্গবন্ধু সমাধিসৌধের ২নং গেট সংলগ্ন মিনহাজ স্টোরের মালিক কাজী মিরাজ বলেন, পদ্মা সেতু চালুর পর আমাদের কোনা বেচা বাড়তে শুরু করে। ঈদের ছুটিতে দর্শনার্থী আরো বেড়েছে। আর কেনা বেচা বেড়েছে চার গুন।
বঙ্গবন্ধু সমাধিসৌধের ৩ নং গেট সংলগ্ন টি স্টলের মালিক মোঃ টিটু বলেন, আগে সারাদিনে ৫ হাজার বিক্রি হত। পদ্মা সেতু চালুর পর এখন বিক্রি হয় ২২ হাজার। ক্রেতাদের মালামাল দিতেই ব্যস্ত সময় পার করতে হয়।
বঙ্গবন্ধু সমাধিসৌধের ৩ নং গেট সংলগ্ন মুদি দোকানী আব্দুর রহিম বলেন, বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধের কারণেই আমরা ভালো সেল পাচ্ছি। সারা বছর এমন আয় থাকলে আমরা পরিবার পরিজন নিয়ে বেশ ভালো থাকতে পারব।
ভ্যান চালক পাভেল শেখ ও অটো চালক দ্বীন মোহাম্মদ বলেন, পদ্মা সেতু চালুর পর টুঙ্গিপাড়ায় মানুষের আনাগোনা বেড়ে গেছে। সারা দিনই পাটগাতী থেকে টুঙ্গিপাড়া পর্যন্ত যাত্রীর চাপ থাকে । আগে প্রতিদিন ১ হাজার টাকা আয় করতাম। এখন ২ হাজার টাকা আয় করতে পারছি।
হোটেল মালিক কবির উদ্দিন বলেন, এখানে হোটেল ব্যবসা জমজমাট হয়ে উঠেছে। প্রতিদিনই বেচা বিক্রি বাড়ছে। আমাদের প্রত্যাশার চেয়েও বেশি আয় হচ্ছে।
দর্শনার্থী ঢাকা উত্তরার বাসিন্দা মোহাম্মদ উল্যাহ শের শাহ্ বলেন, টুঙ্গিপাড়া বেশ সবুজ। এখানকার নদী, খাল, বিল ও পরিবেশের স্নিগ্ধতা চমৎকার। বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধসহ সব জায়গা ঘুরে দেখেছি। সব কিছু আমাকে মুগ্ধ করেছে।
তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধ, পাটগাতী লঞ্চঘাট, টুঙ্গিপাড়া স্টিমারঘাট, শেখ লুৎফর রহমান সেতু, মধুমতী নদী, বাঘিয়ার নদী, খাল, বর্ণি বাওড়, গোপালপুর ও জোয়ারিয়ার লাল শাপলার বিল ঘিরে এখানে পর্যটন গড়ে উঠতে পাবে। পর্যটন গড়ে উঠলে এখানে দর্শনার্থী আরো বেড়ে যাবে। এ অঞ্চলের মানুষের ব্যবসা বাণিজ্য আরো সম্প্রসারিত হবে। মানুষের আর্থসামাজিক অবস্থার ব্যাপক পরিবর্তন ঘটবে।-বাসস
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।