স্পোর্টস ডেস্ক : ভারত ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডের (বিসিসিআই) প্রেসিডেন্ট পদ হারানো প্রায় নিশ্চিত হয়ে গেছে দলটির সাবেক ক্রিকেটার সৌরভ গাঙ্গুলির। সব কিছু ঠিক থাকলে ভারতের বিশ্বকাপজয়ী অলরাউন্ডার রজার বিনি সেই পদে আসীন হতে যাচ্ছেন। এদিকে পদ হারানোর পর মুখ খুলেছেন সৌরভ। গণমাধ্যমকে তিনি বলেছেন, বাঁচতে গেলে ধনকুবের হওয়া লাগে না।
বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) বন্ধন ব্যাংকের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হতে কলকাতার একটি পাঁচ তারকা হোটেলে উপস্থিত হয়েছিলেন সৌরভ। সেখানেই ‘পদ হারানো’সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন তিনি। সৌরভ বলেন, ‘আমি একসময় প্রশাসক হিসেবে কাজ করেছি। এখন সেখান থেকে বেরিয়ে এর চেয়েও বড় কিছু করতে পারি। আমি সিএবি ও বিসিসিআই সভাপতি হয়েছি ঠিকই, কিন্তু খেলোয়াড় জীবনের ১৫ বছর সেরা। জানতাম দলে থাকতে গেলে রান করতে হবে। আমি মানি জীবনে বাঁচতে গেলে ধনকুবের হওয়া লাগে না। ।’
১৯৯২ সালে ওয়ানডেতে অভিষেক হওয়ার পর ১৯৯৬ সালে টেস্টে অভিষেক হয়েছিল সৌরভের। পদ হারিয়ে সেই স্মৃতিও রোমন্থন করেছেন তিনি। সৌরভ বলেন, ‘১৯৯৬ সালে ইংল্যান্ড সফরে শেষ ওয়ানডে ম্যাচের দিন সকালে জানতে পারি টেস্ট খেলব। তিন সপ্তাহ পর লর্ডসে ছিল প্রথম টেস্ট। আমি শতরান করি। পঙ্কজ রায়ের পর বাংলা থেকে দীর্ঘদিন কেউ খেলেননি।’
সৌরভ গাঙ্গুলিকে কীভাবে নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল তা আজ আর কারো অজানা নয়। অনেক বিতর্ক হয়েছে সেই নিয়ে। শিক্ষক দিবস উপলক্ষ্যে একটি ভিডিওতে সেরকমই নিজের ক্রিকেট জীবনের নানা ঘটনা তুলে ধরেন, আর তারই মাঝে রয়েছে ভারতের অধিনায়কত্ব ছাড়ার ঘটনাও।
সালটা ২০০৫ একটা দলকে বিশ্বকাপ জয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন দলের অধিনায়ক। মোদ্দাকথা দলের মধ্যে বিশ্বকাপ জয়ের একটা ক্ষিদে ঢুকিয়ে দিয়েছেন তিনি। কিন্তু অধিনায়কত্ব তো বটেই দল থেকেও বাদ দিয়ে দেওয়া হয় মহারাজকে।
সৌরভ সেই সম্পর্কে বলেন, ‘২০০৩ সালের বিশ্বকাপের ফাইনালে হারের জ্বালা মেটাতে ২০০৭ বিশ্বকাপের জন্য নিজেকে তৈরি করছিলাম। ২০০৩ বিশ্বকাপের পর আমাদের নতুন কোচ এসেছিলেন। বেশ কয়েকটি নাম নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত কোচ হয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার গ্রেগ চ্যাপেল। খুব কাছাকাছি গিয়েও ২০০৩ সালের বিশ্বকাপ জিততে পারিনি। তাই শুধু আমার নয়, দলের সবার আক্ষেপ ছিল। ‘
তার বক্তব্য অনুযায়ী সেই সময় দলের সবাই স্বপ্নপূরণের জন্য আরও একটা সুযোগ চাইছিল আর তখনই তাকে বাধ্য করা হয় নেতৃত্বে ছেড়ে দিতে। অথচ সেই সময় তিনি দলের ভালোর জন্য খেলতে চেয়েছিলাম। নিজের সবটুকু দলকে দিতে চেয়েছিলেন তিনি। যদিও তিনি এটা জানাননি কে অথবা কারা তাকে দল ছাড়তে বাধ্য করে। বিষয়টিকে ক্রিকেটজীবনের উত্থান-পতনের অংশ হিসাবেই গ্রহণ করেছেন বাংলার দাদা।
অতীত নিয়ে নাকি মোটেই ভাবেন না সৌরভ। ভবিষ্যৎ নিয়েই বাঁচতে চান তিনি। তার ভাষ্যমতে, ‘আমি অতীত নিয়ে ভাবি না। ভবিষ্যতে বাঁচি। শচীন-দ্রাবিড়রা একশোর বেশি টেস্ট খেলেছে। ওদের সঙ্গে আমিও খেলেছি। লর্ডসের সেঞ্চুরি করেছিলাম শনিবার। এত বছর পরেও ভুলিনি। স্কোরবোর্ডে তাকাইনি। ধাপে ধাপে প্রথমে ২০ ও তারপরে ৩০। আমি এভাবেই এগিয়েছি। স্পোর্টসে সাফল্য রাতারাতি আসে না। এক রাতে কেউ চন্দ্রশেখর ঘোষ, নরেন্দ্র মোদি, শচীন টেন্ডুলকার হতে পারেন না। রাতারাতি স্পোর্টসের রেসাল্ট ভালো হয়ে যায় না।’
সৌরভ আরও যোগ করেন, ‘আমার মনঃসংযোগ ছিল। পরের বল ও পরের রান নিয়ে ভাবতাম। এটা একটা পদ্ধতি। ওই ইনিংস আত্মবিশ্বাস দেয়। স্পোর্টসে প্রতিদিন শূন্য থেকে শুরু করতে হয়। কেউ বঞ্চিত হবে। কেউ সফল হবে। কেউ ব্যর্থ হবে। কিন্তু নিজের উপর আস্থা রাখতে হবে।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।