আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বন্যার ভয়াবহ পরিস্থিতি মোকাবিলায় পাকিস্তানকে সহায়তা করতে বিশ্বের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।
দেশটি সফর শেষে তিনি এমন ‘জলবায়ু হত্যাকাণ্ড’ আগে কখনও দেখেননি বলেও মন্তব্য করেন। খবর রয়টার্স ও এএফপি’র।
বন্যায় বিধ্বস্ত পাকিস্তানের বেশ কয়েকটি অঞ্চল শনিবার ঘুরে দেখেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তনিও গুতেরেস৷ দুই দিনের সফর শেষে তিনি দেশটির জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তা বৃদ্ধির আহ্বান জানান এবং সেইসাথে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নিয়ে বিশ্বকে সতর্ক করে।
সম্প্রতি রেকর্ড বৃষ্টিপাত ও উত্তরাঞ্চলের হিমবাহের পানি গলায় ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়ে পাকিস্তান। এতে অন্তত ১৩৯১জন প্রাণ হারিয়েছেন। বন্যায় বিলীন হয়েছে বহু বাড়ি, গবাদি পশু ও শস্য৷ ধ্বংস হয়েছে সাত হাজার কিলোমিটার সড়ক, রেললাইন ও পাঁচশত সেতু।
জলবায়ু পরিবর্তনকেই এই বন্যার কারণ বলে উল্লেখ করেছে দেশটির সরকার৷ একই মত জাতিসংঘের মহাসচিবেরও।
দেশটিতে দুইদিনের সফর শেষে তিনি বলেন, ‘‘আজকে পাকিস্তান, কাল হয়ত এটি অন্য কোনো দেশে ঘটবে, যেখানে আপনি বসবাস করে। এটা একটা বৈশ্বিক সংকট…এর মোকাবিলায় দরকার বৈশ্বিক উদ্যোগ।’’
এখনও পাকিস্তানের বিস্তৃত এলাকা পানির নীচে রয়েছে। কয়েক লাখ মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন৷ সব মিলিয়ে তিন কোটি ৩০ লাখ মানুষের জীবন বন্যায় বিপন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছে সরকার৷
দেশটির বন্যার এই পরিস্থিতি প্রত্যক্ষ করে হতবাক জাতিসংঘ প্রধানও৷ বন্যার ভয়াবহতাকে ‘অকল্পনীয়’ বলে অভিহিত করেন তিনি।
বন্দরনগরী করাচিতে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে গুতেরেস বলেন, ‘‘আমি বিশ্বের বহু মানবিক বিপর্যয় দেখেছি, কিন্তু এই মাত্রার জলবায়ু ধ্বংসলীলা এর আগে কখনও দেখিনি৷ আজকে যা দেখেছি সেই পরিস্থিতি বর্ণনা করার মতো শব্দ আমার কাছে নেই।’’
পাকিস্তানের মতো জলবায়ু বিপর্যয়ে আক্রান্ত দেশগুলোকে সহায়তা ও ঋণমুক্ত করতে নতুন কৌশল প্রণয়নের আহ্বান জানিয়েছেন গুতেরেস। এজন্য একটি প্রস্তাবও তুলে ধরেন তিনি।
তার মতে ঋণগ্রস্ত দেশগুলো বিদেশি ঋণ পরিশোধের বদলে সেই অর্থ যাতে নিজ দেশে জলবায়ু প্রকল্পে ব্যয় করে সেটি নিশ্চিত করা উচিত। বলেন, ‘‘এটা ন্যায়বিচারের প্রশ্ন, (কারণ) অন্যদের কৃতকর্মের ফল ভোগ করছে পাকিস্তান।’’
পাকিস্তানের সরকারের হিসাবে বন্যায় সব মিলিয়ে দেশটির ক্ষতির পরিমাণ তিন হাজার কোটি ডলার। বন্যা পরবর্তী পুনর্গঠন পরিকল্পনায় সহায়তা করতে জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা কাজ শুরু করেছে।
উল্লেখ্য, জুলাই ও আগস্টে পাকিস্তানে ৩৯১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে, যা দেশটির ত্রিশ বছরের গড়ের চেয়ে প্রায় চারগুণ বেশি। এই সময়ে শুধু দক্ষিণ প্রদেশ সিন্ধে স্বাভাবিকের চেয়ে নয়গুণ বেশি বৃষ্টি হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।