জুমবাংলা ডেস্ক: পাটকাঠি পুড়িয়ে তৈরি করা হয় ছাই। চারকোল পাউডার নামের এ ছাই দিয়েই তৈরি হয় কার্বন পেপার, ফটোকপিয়ার ও কম্পিউটার প্রিন্টারের কালির মতো মূল্যবান পণ্য। দেশে রপ্তানি পণ্যের সম্ভাবনাময় খাত হিসেবে যুক্ত হয়েছে এই চারকোল পাউডার উৎপাদন। মাগুরার মহম্মদপুরের একটি কারখানা পাটকাঠির এই ছাই চীনে রপ্তানি করে প্রতি মাসে দেশে আনছে অর্ধকোটি টাকার বেশি বৈদেশিক মুদ্রা। কর্মসংস্থানও হয়েছে স্থানীয় অনেকের।
জনপ্রিয় জাতীয় দৈনিক সমকালের প্রতিনিধি কামরুল হাসানের করা একটি প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলা সদরে মধুমতী নদীর তীরে রুইজানী গ্রামে ২০১৬ সালে গড়ে তোলা হয় ইমপিগনো প্রাইভেট লিমিটেড নামের চারকোল পাউডার উৎপাদন কারখানাটি। অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত ছয় মাস কারখানাটিতে উৎপাদন কার্যক্রম চালু থাকে। এখানে বিভিন্ন পর্যায়ে কাজ করেন প্রায় দেড়শ মানুষ।
কারখানা সংশ্নিষ্টরা জানান, পাটকাঠি পোড়ানোর জন্য এ কারখানায় ১৬টি চুল্লি রয়েছে। প্রতি চুল্লিতে ৭৫ থেকে ১০০ মণ পাটকাঠি পোড়ানো যায়। এখানে প্রতিদিন গড়ে ৩৫০ থেকে ৪০০ মণ পাটকাঠি পোড়ানো হয়। মাসের হিসাবে ১০ হাজার ৫০০ থেকে ১২ হাজার মণ পাটকাঠি পুড়িয়ে পাউডার উৎপাদন করা হয়। মৌসুমে এখানে পোড়ানো হয় ৬৩ হাজার থেকে ৭২ হাজার মণ পাটকাঠি।
কারখানার শ্রমিক মফিজুর রহমান জানান, পাটকাঠি পোড়ানোর পর টানা পাঁচ দিন চুল্লি বন্ধ রাখা হয়। ষষ্ঠ দিন চুল্লি খুলে পোড়া পাটকাঠি মেশিনে ভাঙিয়ে পাউডার করা হয়। ভাঙানোর পর চারকোল পাউডার সাড়ে ১২ কেজি ও ১৫ কেজির দুই স্তরের পলিব্যাগে ভরা হয়। বায়ুশূন্য করে লেমিনেটেড ব্যাগের মধ্যে ঢুকিয়ে সেলাই দেওয়া হয়। এরপর ব্যাগগুলো দু-তিন দিন খোলা স্থানে এবং পরে গোডাউনে কমপক্ষে ২১ দিন সংরক্ষণ করা হয়। পরে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে জাহাজে করে পাঠানো হয় চীনে।
সরেজমিনে কারখানাটিতে দেখা যায়, কারখানার ভেতরে চারকোল পাউডার উৎপাদনের কাঁচামাল হিসেবে হাজার হাজার মণ পাটকাঠি মজুত করা হয়েছে। স্থানীয় ব্যাপারী ও কৃষকদের কাছ থেকে প্রতিষ্ঠানটি প্রতি মণ পাটকাঠি কেনে ২২০ থেকে ২৪০ টাকায়। উৎপাদনের মৌসুম শুরু হওয়ায় কারখানার শ্রমিকরা সেই পাটকাঠি পোড়াতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
কারখানার ম্যানেজার খোরশেদ আলম দৈনিকটিকে জানান, এই পাউডার দিয়ে চীন কার্বন পেপার, ফটোকপিয়ার ও কম্পিউটার প্রিন্টারের কালির মতো মূল্যবান পণ্য তৈরি করে। এ জন্য দেশটিতে এর ভালো চাহিদা রয়েছে।
ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাবিব এ হাসান জানান, এখানে প্রতি মাসে গড়ে ১২ হাজার মণ পাটকাঠি পোড়ানো হয়। যা থেকে ৭৫ টন ছাই বা চারকোল পাউডার পাওয়া যায়। উৎপাদিত এই পাউডার চীনে রপ্তানি করা হয়। প্রতি টন পাউডারের দাম ৭০০ থেকে ৭৫০ ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ৭০ থেকে ৭৫ হাজার টাকা। সেই হিসাবে মাসে বৈদেশিক মুদ্রা আসে অর্ধকোটি টাকার বেশি। মৌসুমে আসে তিন কোটি টাকার বেশি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।