গোপাল হালদার, পটুয়াখালী: বন্ধ হওয়ার ২০ দিন পর আবার চালু হতে যাচ্ছে দেশের সবচেয়ে বড় তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র পায়রা। কয়লা শেষ হয়ে যাওয়ায় চলতি মাসের শুরুতে পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াটের তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি।
ইন্দোনেশিয়া থেকে কয়লা নিয়ে এরই মধ্যে একটি জাহাজ বাংলাদেশে এসেছে। জাহাজ থেকে কয়লা খালাস করে কেন্দ্রে পৌঁছানো ও বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করতে সর্বোচ্চ ৫২ ঘণ্টা সময় লাগবে।
আগামী রবিবার (২৫ জুন) পায়রায় বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হবে বলে নিশ্চিত করেছে বিদ্যুৎ বিভাগের একটি সূত্র। তবে প্রথম এক সপ্তাহ একটি ইউনিট চালানো হবে। ২ জুলাই থেকে দুটো ইউনিটই উৎপাদনে যাবে।
ইন্দোনেশিয়া থেকে ৪১ হাজার মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে ইতোমধ্যে নোঙর করেছে মার্শাল আইল্যান্ডসের পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আথেনা। ইন্দোনেশিয়া থেকে কয়লা বোজাই করে ছাড়ার ১০ দিন পর কয়লা নিয়ে পায়রা বন্দরে পৌঁছেছে জাহাজটি।
পায়রা বন্দরের ট্রাফিক বিভাগের উপপরিচালক আজিজুর রহমান গণমাধ্যমকে জানান, এমভি আথেনা ৪১ হাজার ২০৭ মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে বৃহস্পতিবার রাত ৩টা থেকে পায়রা বন্দরের ইনার চ্যানেলে অবস্থান করছে। এ কয়লা খালাস করতে আরও দুই/তিনদিন লাগবে। সে হিসেবে আগামী ২৫ বা ২৬ জুন থেকেই আবার চালু হতে যাচ্ছে দেশের সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎকেন্দ্র পায়রা।
ডলার সংকটে যথাসময়ে কয়লা আমদানি ব্যাহত হওয়ায় গত ২৫ মে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির প্রথম ইউনিটের উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। ৫ জুন বন্ধ হয় দ্বিতীয় ইউনিট। ফলে লোডশেডিং বৃদ্ধি পায়। তখন সরকার জানিয়েছিল, দুই সপ্তাহের মধ্যে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি ফের চালু হবে। পূর্ণ ক্ষমতায় এটি চালাতে ১১ থেকে ১২ হাজার টন কয়লা লাগে। বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি থেকে ১ হাজার ২৪৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যায়, যা দেশের গড় উৎপাদনের প্রায় ১০ শতাংশ।
প্রায় ৩৯৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বকেয়া থাকায় চীনের সিএমসি কয়লা সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। পরে সরকারের ওপর মহলের হস্তক্ষেপে ধাপে ধাপে ১০০ মিলিয়ন ডলার ছাড় করা হয়। তা দিয়ে আগামী ৯ আগস্ট পর্যন্ত ১৭টি জাহাজের এলসি খোলা হয়। এতে প্রায় ৭ লাখ ৩০ হাজার টন কয়লা আনা যাবে। নতুন করে আরও কয়লা আনার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। এরই মধ্যে ইন্দোনেশিয়া থেকে প্রায় ৩৬ হাজার টনের প্রথম চালান বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সমুদ্র অঞ্চলে প্রবেশ করেছে।
সূত্র জানায়, মজুত পুরোপুরি শূন্য হওয়ায় বিদ্যুৎকেন্দ্র চালানোর পাশাপাশি কয়লা মজুত করা হবে। প্রথম চালানের কয়লা দিয়ে আপাতত একটি ইউনিটে দৈনিক ৫২৯ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে। ২ জুলাই কেন্দ্রটির দ্বিতীয় ইউনিট চালু হলে জাতীয় গ্রিডে মোট ৭৪৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যাবে।
বাংলাদেশ ও চীনের যৌথ উদ্যোগে বাংলাদেশ-চায়না পাওয়ার কোম্পানি (বিসিপিসি) পটুয়াখালীর পায়রায় এ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করে। কেন্দ্রটির মালিকানায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেডের (এনডব্লিউপিজিসিএল) এবং চীনের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট করপোরেশনের (সিএমসি) সমান (৫০:৫০) অংশীদারিত্ব রয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।