আন্তর্জাতিক ডেস্ক : এ এক চিররহস্য, যখন প্রযুক্তির বিন্দুমাত্র অগ্রগতি ঘটেনি, তখন কী ভাবে পিরামিডের মতো এমন নির্মাণশৈলীর বিস্ময় রচিত হল, তা নিয়ে বহু ভাবনা বহুদিন ধরে আধুনিক যুগের কাছে নানা প্রশ্ন তুলেছে। কিন্তু সেই অর্থে উত্তর মেলেনি। গবেষণা হয়েছে বিস্তর। ২৩ লক্ষ গ্রানাইট ব্লক এবং চুনাপাথর মরুভূমির একপ্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। নীল নদীর তীর ধরে টন টন মাল কী করে এক জায়গা থেকে আর এক জায়গায় নিয়ে যাওয়া সম্ভব হল?
অনেক দিন ধরে অনেক রকম গবেষণা হয়েছে। কিন্তু এক সাম্প্রতিক গবেষণা এ বিষয়ে এক নতুন তত্ত্ব হাজির করেছে। গবেষকেরা দেখিয়েছেন, অন্তত ৪,৫০০ বছর আগে নীল নদী থেকে একটা খালের মতো কেটে সেই পথে গ্রানাইট ও চুনাপাথর নিয়ে আসা হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তী কালে আর নীল নদীর সেই শাখার চিহ্ন দেখা যায়নি। আগে নীল নদীতে পানিস্তরও অনেক বেশি ছিল (যা এখন আর নেই)। সেই উচ্চ পানিস্তরকে কাজে লাগিয়ে সেই অসাধ্যসাধন করা হয়েছিল। এত খুঁটিনাটি সব জানা গিয়েছে ‘প্রসিডিংস অফ দ্য ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্সেস’ পত্রিকায় প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্র থেকে।
এক বিশেষ ধরনের প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে বিজ্ঞানীরা জেনেছেন, অন্তত পক্ষে ৮০০০ বছর আগের এক জলপথরেখা নীল নদীর সঙ্গে সংযুক্ত ছিল বলে তারা জানতে পেরেছেন। পোলেন-ডিরাইভড ভেজিটেশন প্যাটার্ন নামের এই প্রযুক্তিই এই নতুন তথ্য সামনে এনে দিয়েছে। ২০১৩ সালে লোহিত সমুদ্রের এক প্রাচীন বন্দরে প্যাপিরাসের টুকরো পাওয়া গিয়েছিল। আর সেই সূত্র ধরে গোয়েন্দাগিরি করে এই নতুন আবিষ্কার। ওই গবেষকদের প্রস্তাবিত পথ ধরে গিজার মরুতে একটি ড্রিল করেছিল দলটি। অন্তত ৩০ ফুট গর্ত করে তার ভিতর থেকে সেডিমেন্ট সংগ্রহ করা হয়েছিল। সেখান থেকেই পুষ্পরেণু সংগৃহীত হয়েছে। যার সূত্র ধরে ক্রমে বোঝা গিয়েছে, একদা এখানে এক জলপথ ছিল।
মিশর যখন ক্রমশ শুকিয়ে যেতে থাকল, তখনই এই খাঁড়ি বা পরিখাটিও শুকিয়ে যায়। আর ক্রমে সেখানে বালি স্তরের আস্তরণ পড়ে পড়ে জায়গাটির ভূপ্রকৃতিই সম্পূর্ণ বদলে যায়। কিন্তু প্রকৃতির নিদর্শনই শেষ পর্যন্ত ধরে দিল পুরনো প্রযুক্তির রহস্য। সূত্র: সিএনএন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।