বগুড়া প্রতিনিধি: পুকুরের তলায় সুড়ঙ্গ সৃষ্টি হয়ে হঠাৎ সব পানি ও মাছ উধাও হয়ে গেছে। সেই পানি ও পানি কোথায় গেছে তা কেউ বলতে পারছেন না।
১৯ জুলাই বিকালে বগুড়া জেলার কাহালু উপজেলার পাইকড় ইউনিয়নের বাগইল পশ্চিমপাড়া গ্রামের একটি পুকুরে এমন ঘটনা ঘটে। এনিয়ে এলাকায় হইচই পড়ে গেছে। দলে দলে লোকজন ছুটছেন পুকুরটি দেখতে। অনেকে আবার কাদা মাড়িয়ে নিচে নেমে উঁকি দিয়ে দেখছেন সুড়ঙ্গের গভীরতা।
পুকুরের মালিক নুরুল ইসলাম জানান, দীর্ঘদিন ধরেই তিনি পুকুরটিতে মাছচাষ করছেন। এবারও ২০০ কেজি মাছ ছেড়েছিলেন। ১৪ জুলাই বিকালে পুকুরের মাঝ বরাবর পানিতে বুদবুদ উঠতে দেখেন। ১৫ জুলাই থেকে সেই বুদবুদ বাড়তে শুরু করে। ১৮ জুলাই বিকালে হঠাৎ পুকুরের পানি ১০ থেকে ১৫ ফুট উঁচু হয়ে লাফিয়ে উঠতে শুরু করে। এনিয়ে এলাকায় অনেকটা আতঙ্ক দেখা দেয়। পানির এই লাফালাফি দেখতে এলাকার মানুষ ভিড় জমাতে শুরু করেন।
তিনি আরও বলেন, ‘ এদিন সন্ধ্যার পর সেই অবস্থা কিছুটা কমে যায়। এরপর পুকুরের পানি পরের দিন (১৯ জুলাই) বিকালে হঠাৎ করেই কমতে শুরু করে। পুকুরের মাঝখানে পাক খেতে খেতে পানি নামতে শুরু করে। নিমিষেই গলাসমান পানি নেই হয়ে যায়। সাথে চাষ করা সব মাছও।’
নুরুল ইসলাম বলেন, পানি নেমে যাওয়র পর মাছের ছিটেফোঁটাও ছিল না। পানি নেমে যাওয়ার পর তারা দেখতে পান পুকুরের মাঝ বরাবরে একটি বিশাল গর্ত।
বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক আব্দুল হাই জানান, পাহাড়ি অঞ্চল বা খনি এলাকায় ‘সিঙ্ক হোল’ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তবে সমতল এলাকায় এটি খুবই বিরল।
তিনি বলেন, ‘ভূগর্ভ থেকে প্রচুর পরিমাণ পানি, বালু বা খনিজ পদার্থ উত্তোলন করলে নিচের স্তরে যে শূন্যতা সৃষ্টি হয়, সেই শূন্যতা পূরণের জন্যই এমন সুড়ঙ্গ বা গর্ত তৈরি হয়। এটি যেহেতু সমতল এলাকায় হয়েছে, এ কারণে এটি ভূতাত্ত্বিক জরিপ বিভাগের খতিয়ে দেখা উচিত যে হঠাৎ এমনটি কেন হলো। সেখানে ভূগর্ভে কোনো স্তরের সমস্যা থেকে এটি হয়েছে? নাকি অন্য কোনো কারণে, তা অবশ্যই অনুসন্ধান করা প্রয়োজন।’
কাহালু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পাপিয়া সুলতানা বলেন, ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পেরেছি। ঘটনার কারণ অনুসন্ধানের চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।