সম্প্রতি ৪টি গ্রহাণু পৃথিবীর পাশ দিয়ে চলে গেছে। গত ২৫ অক্টোবর, শুক্রবার বিভিন্ন সময়ে পৃথিবীর পাশ দিয়ে চলে গেছে এসব গ্রহাণু। তবে কোনোটিই পৃথিবীতে আঘাত করেনি, কোনো ক্ষয়ক্ষতিও হয়নি। অবশ্য এখন কোনো গ্রহাণুর পৃথিবীতে আঘাত করা বেশ কঠিন। সে প্রসঙ্গে পরে আসছি।
৪টি গ্রহাণুর মধ্যে দুটির ব্যাপারে বিজ্ঞানীরা জানতে পেরেছেন মাত্র এ মাসের শুরুর দিকে। এর মধ্যে একটি আকাশচুম্বী অট্টালিকার মতো লম্বা, অন্যটি বিশালাকার চতুর্ভুজের মতো। পৃথিবীর সবচেয়ে কাছে আসা প্রথম গ্রহাণুটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘২০১৫ এইচএম১’।
এটি প্রায় ১০০ ফুট চওড়া এবং এই চারটির মধ্যে সবচেয়ে ছোট। মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার মতে, এই গ্রহাণুটি পৃথিবীর সর্বোচ্চ ৫৫ লাখ কিলোমিটারের মধ্যে পৌঁছেছে। পৃথিবী থেকে চাঁদের যে দূরত্ব, তারচেয়েও ১৪ গুণ দূরে ছিল গ্রহাণুটি। অন্য একটির নাম ‘২০২৪ টিপি১৭’। এটি ছিল ১৭০ ফুট প্রশস্ত। পৃথিবীর ৪৭ লাখ কিলোমিটারের মধ্যে পৌঁছেছিল এই গ্রহাণু।
বাকি দুটি গ্রহাণুর নাম যথাক্রমে ‘২০০২ এনভি১৬’ ও ‘২০২৪ টিআর৬’। একটা অন্যটা থেকে মাত্র ৪ মিনিটের ব্যবধানে পৃথিবীর কাছ দিয়ে চলে গেছে। এর মধ্যে ‘২০০২ এনভি ১৬’ গ্রহাণুটি ৫৮০ ফুট প্রশস্ত। এটাই এই চারটির মধ্যে সবচেয়ে বড়। পৃথিবীর সঙ্গে প্রায় ৪৫ লাখ কিলোমিটার দূরত্ব বজায় রেখে পাশ কাটিয়ে গেছে এটি। অন্যটি ১৫০ ফুট প্রশস্ত ছিল। এটি পৃথিবীর ৫৬ লাখ কিলোমিটারের মধ্যে এসেছিল।
‘২০২৪ টিআর৬’ গ্রহাণুটি বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেন চলতি বছরের ৭ অক্টোবর। আর ‘২০২৪ টিপি১৭’ গ্রহাণুটি প্রথম দেখতে পান ১২ অক্টোবর। তবে এ ধরনের গ্রহাণু পৃথিবীর পাশ দিয়ে যাওয়া মোটেও অস্বাভাবিক নয়। প্রতিবছর বিজ্ঞানীরা প্রায় ২ হাজার গ্রহাণু শনাক্ত করেন, যার বেশির ভাগই পৃথিবীকে পাশ কাটিয়ে চলে যায়।
এই চারটি গ্রহাণুই বিজ্ঞানীদের করা পৃথিবীর জন্য বিপজ্জনক গ্রহাণুর তালিকায় ছিল। পৃথিবীর ৪ কোটি ৮০ লাখ কিলোমিটারের মধ্যে কোনো গ্রহাণু ঢুকে পড়লেই সেটাকে বিপজ্জনকের তালিকায় ফেলা হয়। কারণ, চারটার মধ্যে সবচেয়ে বড় ‘২০০২ এনভি১৬’ গ্রহাণু পৃথিবীকে আঘাত করলে যেকোনো একটা শহর ধ্বংস হয়ে যেতে পারত। তবে এ নিয়ে ভয়ের কিছু নেই।
শুরুতেই বলেছি, এসব গ্রহাণু চাইলেও পৃথিবীকে এখন সহজে আঘাত করতে পারবে না। কারণ, বিজ্ঞানীরা আগে থেকেই এসব বিপজ্জনক গ্রহাণু শনাক্ত করতে পারেন। শুধু শনাক্তই নয়, চাইলে এগুলোর গতিপথ বদলে পৃথিবী থেকে দূরে সরিয়েও দিতে পারেন তাঁরা। এমন একটা মহড়াও সম্পন্ন করেছে নাসা। পৃথিবী থেকে বহু দূরের একটি গ্রহাণুর গতিপথ বদলাতে ২০২১ সালের ২৪ নভেম্বর নাসার ডার্ট মিশন চালু হয়।
এ মিশনের আওতায় ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে নির্দিষ্ট দুটি গ্রহাণুকে আঘাত করে সেগুলোর গতিপথ বদলে দেওয়া হয়। ফলে ভবিষ্যতে পৃথিবীর জন্য বিপজ্জনক এমন কোনো গ্রহাণু দেখা দিলে বিজ্ঞানীরা সেগুলোর গতিপথ বদলে দিতে পারবেন। তাই আপাতত গ্রহাণু নিয়ে ভয়ের কিছু নেই।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।