উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরের মাঝখানে, সমুদ্রতলের নিচে ভূতাত্ত্বিকেরা ১ হাজার ২৬৮ মিটার গভীর গর্ত খুঁড়েছেন। এটি এখন পর্যন্ত পৃথিবীর ম্যান্টল স্তরে ড্রিল বা খনন করা গভীরতম গর্ত। তাঁরা আশা করছেন, এই স্তরের নমুনা বিশ্লেষণের মাধ্যমে পৃথিবীর বাইরের স্তরগুলোর বিবর্তন ও জীবনের উৎপত্তি সম্পর্কে আরও জানতে পারবেন।
এ গবেষণায় কাজ করেছেন যুক্তরাজ্যের কার্ডিফ বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল ভূতত্ত্ববিদ। তাঁরা এই রেকর্ড পরিমাণ খনন করা গর্তটির নাম দিয়েছেন ইউ১৬০১সি (U1601C)। গর্তে প্রাপ্ত নমুনার প্রায় ৭১ শতাংশ উদ্ধার করতে পেরেছেন তাঁরা। গত ৮ আগস্ট সায়েন্স জার্নালে গবেষণাটি প্রকাশিত হয়।
পৃথিবীর গঠন বেশ জটিল। এটি কয়েকটি স্তরবিশিষ্ট। ওপর থেকে ক্রমান্বয়ে বললে, স্তরগুলো হলো—ভূত্বক বা ক্রাস্ট, ম্যান্টল, বাইরের কোর বা বহিঃকেন্দ্র এবং ভেতরের কোর বা অন্তঃকেন্দ্র। বুঝতেই পারছেন, ভূত্বকের নিচের স্তরটির নাম ম্যান্টল। স্তরটি মূলত পেরিডোটাইট নামে একধরনের ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ শিলা দিয়ে গঠিত। এই স্তরের গতিশীলতা পৃথিবীর অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়াকে চালিত করে; যেমন ভূমিকম্প, পানিচক্র, আগ্নেয়গিরি, পর্বত গঠন ইত্যাদি।
যুক্তরাজ্যের কার্ডিফ ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানী জোহান লিসেনবার্গ এ গবেষক দলের দলনেতা ও গবেষণাপত্রের প্রধান লেখক। এ প্রসঙ্গে তিনি লাইভ সায়েন্সকে বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমরা এই ম্যান্টল স্তরে খুব কমই খনন কাজ ও গবেষণা করতে পেরেছি। আমরা শুধু এই স্তরের ছোট ছোট কিছু টুকরো পেয়েছি এতদিনে। কিন্তু সমুদ্রের তলায় এমন অনেক জায়গা আছে, যেখানে এই ম্যান্টল স্তরের শিলা সরাসরি পাওয়া সম্ভব। এসব পাথরের টুকরো থেকে পৃথিবীর আভ্যন্তরীণ গতিশীলতা সম্পর্কে আরও জানা যাবে।’
এর আগে ম্যান্টলে সর্বোচ্চ ২০১ মিটার গভীর গর্ত খোঁড়া হয়েছিল। বর্তমান খননের তুলনায় এটি নিতান্ত কম। গবেষক দলের আরেক সদস্য ইংল্যান্ডের লিডস বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ববিদ অ্যান্ড্রু ম্যাককেগ এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘এই গর্ত থেকে যে তথ্য পাওয়া যাবে, তা বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় কাজে লাগবে। বিভিন্ন শাখার বিজ্ঞানীদের জন্যই এসব তথ্য অত্যন্ত মূল্যবান। এসব তথ্যের সাহায্যে তাঁরা নিজ নিজ বিষয়ে আরও গভীরভাবে গবেষণা করতে পারবেন।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।