রঞ্জু খন্দকার, গাইবান্ধা থেকে : রাতে ইলিশেগুঁড়ির মতো ঝরছে কুয়াশা। এরই দাপট থাকছে দিনমানও। কুয়াশার চাদরে মুখ লুকিয়ে রাখছে সূর্য। সঙ্গে হালকা উত্তুরে বাতাস।
চারদিন ধরে এই অবস্থা গাইবান্ধার। শুধু এই জেলায়ই নয়, পৌষ মাস শুরু না হতেই পুরো উত্তরাঞ্চলেই জেঁকে বসেছে শীত। এর প্রভাব পড়েছে খেটে খাওয়া মানুষের জীবনেও। শীতে ঘর থেকে বের হতে পারছেন না অনেকেই। ফলে যারা দিন এনে দিনে খান, তাঁদের আয় কমেছে।
গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার কুমারগাড়ী গ্রামের ফুয়াদ হোসেন বলেন, তিনি ব্যাটারির ভ্যান চালিয়ে জীবীকা চালান। শীতের প্রকোপ বাড়ায় অনেকে ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। কেউ দেরিতে বের হচ্ছেন। ঘরেও ঢুকছেন তাড়াতাড়ি। ফলে রাস্তাঘাটে যাত্রী কমে গেছে। এ কারণে তাঁর আয়-রোজগারও অনেক কমেছে।
মোতালেব হোসেন নামের আরেকজন ভ্যানচালক বলেন, অনেক বয়স্ক ভ্যানচালক শীতের কারণে ভ্যানই বের করতে পারছেন না। ফলে তাদের পরিবার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। আবার রাস্তায় যে কজন যাত্রী বের হচ্ছেন, ভ্যান না পাওয়ায় তাদেরও যাতায়াতে কষ্ট হচ্ছে।
শুধু ফুয়াদ ও মোতালেবের মতো ভ্যানচালকদেরই নয়, কাজ কমেছে কৃষিশ্রমিকদেরও।
পলাশবাড়ীর ছাতিয়ানতলা বাজারের অবস্থান দুই উপজেলার সীমানা এলাকায়। এর পাশেই গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার ডুমুরগাছা ও পাটোয়া গ্রামের অবস্থান। ফলে ছাতিয়ানতলা বাজারে দুই উপজেলার কয়েক গ্রামের মানুষের আনাগোনা।
এই বাজারে আসা পাটোয়ার কৃষিশ্রমিক হায়দার আলী বলেন, ধান কাটা শেষ হওয়ার পর এখন মাঠে তেমন কাজ নেই। চরাঞ্চলে হয়ত মরিচের খেত নিড়ানির কাজ চলছে। কিন্তু এই তীব্র শীতে চরে গিয়ে কাজ করা কঠিন হবে।
একই গ্রামের তৈয়ব আলী জানান, চরে মরিচ নিড়ানির কাজ চলছে, তিনি জানতে পেরেছেন। সেখানে কৃষিশ্রমিক গেলে কাজ পাওয়া যাবে। কিন্তু এই কুয়াশা আর শীতের মধ্যে যমুনা নদী পারি দিয়ে কাজে যাওয়া খুব কঠিন।
আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানা যাচ্ছে, বঙ্গোপসাগরে সুস্পষ্টভাবে লঘুচাপ তৈরি হওয়ায় আগামী ৭২ ঘণ্টায় উত্তরাঞ্চলে কুয়াশার দাপট আরও বাড়বে। সঙ্গে দিন ও রাতের তাপমাত্রা আরও কমে শীতের প্রকোপ বাড়বে।
ডুমুরগাছা গ্রামের বাসিন্দা ও স্কুলশিক্ষক শামসুল আলম বলেন, গত সোমবার থেকে হঠাৎ গাইবান্ধায় আবহাওয়া পালটে গিয়ে শীত জেঁকে বসেছে। রাতে হালকা বৃষ্টির মতো কুয়াশা পড়ছে। দিনেও এর দাপট থাকছে। সূর্যের দেখাই পাওয়া যাচ্ছে না।
এই স্কুলশিক্ষক আরও বলেন, পৌষ শুরু হতে আরও তিন দিন বাকি। এখনই আবহাওয়ার এই অবস্থা। পূর্বাভাস শুনে মনে হচ্ছে, শীত এবার আঁটঘাঁট বেঁধেই নামবে। এতে খেটে খাওয়া মানুষের শীতেত কষ্ট যেমন বাড়বে, তেমনি কমবে আয়ও।
চাহিদা মেটাতে ১ কোটি ৪৮ লাখ লিটার ভোজ্য তেল সংগ্রহ করবে সরকার
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।