জুমবাংলা ডেস্ক: ঢাকা উত্তর সিটি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেছেন, মিরপুর প্যারিস খাল পরিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত অভিযান চলবে।
পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী মিরপুর প্যারিস খাল পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম শুরু করেছেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম। এই কাজে সহযোগিতা করতে যুক্ত হয়েছেন বিডি ক্লিনের ১২শ’ স্বেচ্ছাসেবী।
আজ শুক্রবার মিরপুর প্যারিস খালে এই কার্যক্রম শুরু হয়। এর আগে প্যারিস রোড সংলগ্ন মাঠে বিডি ক্লিনের স্বেচ্ছাসেবীদের দেশ ও দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করার শপথ বাক্য পাঠ করান মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।
১২শ’ স্বেচ্ছাসেবী চারটি দলে ভাগ হয়ে প্যারিস খালের চারটি অংশে ময়লা পরিষ্কার কার্যক্রম শুরু করে। একটি দলের সাথে যুক্ত হয়ে ময়লা পরিষ্কার করতে ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম হাতে গ্লাভস পড়ে নিজেই খালে নেমে যান।
গত ৩১ জানুয়ারি মিরপুর প্যারিস খাল পরিদর্শনে এসে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম পরিচালনা এবং অবৈধ দখল উচ্ছেদের ঘোষণা দিয়েছিলেন ডিএনসিসি মেয়র। তিনি বলেছেন, ‘ময়লা ও দখলমুক্ত করে মিরপুর প্যারিস খাল আগের রূপে ফেরানো হবে।’
আজ পরিচ্ছন্ন কার্যক্রমে অংশ নিয়ে মেয়র বলেন, ‘পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী প্যারিস খাল পরিষ্কার শুরু করেছি। প্রথম ধাপে ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হওয়া প্যারিস খালে পানির প্রবাহ নিশ্চিত করা হবে। পরিষ্কার অভিযানে আমার সাথে বিডি ক্লিনের ১২শ’ স্বেচ্ছাসেবী যোগ দিয়েছে। দুইদিন আগে পরিদর্শনে এসে আমি সবাইকে খালের অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দিয়েছি। অনেকে যার যার স্থাপনা সরিয়ে নিচ্ছে। নিম্ন আয়ের মানুষ সময় চেয়েছে। অন্যত্র চলে যাওয়ার জন্য আমি তাদেরকে একমাস সময় দিয়েছি। ময়লা পরিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত অভিযান চলবে।’
মেয়র বলেন, ‘একসময় মিরপুর প্যারিস খাল দিয়ে লঞ্চ চলতো। আর আজ সেই খাল ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। ময়লার কারণে এই খালে কোন পানি নেই বরং খালের উপর দিয়ে হাঁটা যায়। আমি নিজে জনগণের জন্য খাল পরিষ্কারে অংশ নিয়েছি। এলাকাবাসীর লজ্জা হওয়া উচিত। তারা এই খালটিকে ময়লা ফেলে, দখল করে গলা টিপে হত্যা করেছে। স্বেচ্ছাসেবীরা আজ ছুটির দিনে স্বতস্ফূর্তভাবে খাল পরিষ্কারের জন্য ছুটে এসেছে। অথচ এই ছেলেমেয়েদের আজকে মাঠে খেলাধুলা করা কথা ছিল, বাসায় বিশ্রাম করা কথা ছিল। কিন্তু তারা খেলা, বিশ্রাম বাদ দিয়ে খাল পরিষ্কারে অংশ নিয়েছে। এলাকাবাসীকে আহবান করছি এর থেকে শিক্ষা নিয়ে খালে ময়লা ফেলা বন্ধ করুন।’
এলাকাবাসীর উদ্দেশ্যে মেয়র বলেন, ‘এই এলাকার মানুষ অভিযোগ করেছেন একটু বৃষ্টি হলে এই এলাকা পানিতে ডুবে যায়। অনেক মুরুব্বি আমাকে জানিয়েছেন মসজিদের অযুখানা পর্যন্ত বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যায়। প্যারিস খাল দিয়ে পানি প্রবাহিত হলে এই জলাবদ্ধতা থাকবে না। আপনারা যদি খালে ময়লা ফেলা বন্ধ করেন তাহলে জলাবদ্ধতা থাকবে না। শুধু সিটি না, আপনাদের নিজেদেরও দায়িত্ব নিতে হবে।’
সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, ‘এরই মধ্যে খালের জমি মাপা শুরু হয়েছে। খালের জায়গার মধ্যে যে বিল্ডিং পড়বে সেগুলো ভেঙ্গে দেওয়া হবে। খালের জায়গায় কিছু বস্তি আছে। বস্তিবাসীদেরকে এক মাস সময় দেওয়া হয়েছে এখান থেকে সরে যাওয়ার জন্য। চাইলে আজকে বুলডোজার দিয়ে সব ভেঙে ফেলতে পারতাম কিন্তু ভাঙিনি তাদেরকে সময় দিয়েছি। সময়ের মধ্যে না সরে গেলে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে।’
এসময় তিনি আরও বলেন, ‘এখানে কিছু কিছু জায়গায় মাদকের বাণিজ্য চলে। এখানে বড় একটি চক্র মাদক কারবারি করছে। অভিযান শুরু হয়েছে। এখানে ধাপে ধাপে কাজ করা হবে। প্রথমে আমরা প্যারিস খালে পানির প্রবাহ নিশ্চিত করতে চাই। দ্বিতীয় ধাপে খালের ৪০ ফিট জায়গায় উদ্ধারের পরে যে জায়গা থাকবে সে জায়গায় ওয়াকওয়ে তৈরি করা হবে। পরে আরো দু’পাশে জায়গা পাওয়া গেলে সেখানে একটি নান্দনিক পার্ক তৈরি করব।’
অভিযানে অন্যান্যের সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগে. জেনা. মুহঃ আমিরুল ইসলাম, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমডোর এস এম শরিফ-উল ইসলাম, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগে. জেনা. ইমরুল কায়েস চৌধুরী, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মাহে আলম, অঞ্চল-২ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান, ০৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর কাজী জহিরুল ইসলাম মানিক প্রমুখ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।