রাজধানীর মোহাম্মদপুরে সুমন সিকদারকে (২৫) দুর্বৃত্তরা প্রকাশ্যে রাম দা দিয়ে কোপালেও তাকে বাঁচাতে কেউ এগিয়ে আসেনি। এ সময় তার সাথে থাকা বন্ধুরা পালিয়ে যায়। সেখানেই রাম দা ও লোহার পাইপ দিয়ে মাথায় ও সারা শরীরে কুপিয়ে ও পিটিয়ে রক্তাক্ত করে দুর্বৃত্তরা।
১০ মিনিট ধরে কোপানোর পরে মৃত্যু নিশ্চিত করে সেখান থেকে পালিয়ে যায় খুনিরা। ঘটনাস্থলের পাশেই একটি দোকানে সিসি ক্যামেরা থাকলেও অজ্ঞাত কারণে ফুটেজ খুঁজে পাচ্ছে না পুলিশ। শনিবার রাত ৮টার দিকে খুন হলেও এই ঘটনায় পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করতে না পারায় থানায় অজ্ঞাত আসামিদের নামে মামলা হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী একজন বলেন, সবার সামনেই কোপালেও কেউ বাঁচাতে এগিয়ে আসেনি। পাশেই একটি ক্লাব আছে, তার পাশ থেকেই হামলাকারীরা বের হয়ে আসে। তাদের হাতে দেশীয় বিভিন্ন অস্ত্র ছিল। তারা প্রকাশ্যেই এই হামলা চালায়। চাইলেই এই হামলার ফুটেজ উদ্ধার করা সম্ভব। আশে পাশের অনেক দোকানে সিসি ক্যামেরা আছে।
নিহতের বাবা আনোয়ার আহমেদ বলেন, আমার ছেলে শনিবার সারাদিন ভোটের কাজে ছিল। সে কার সমর্থনে প্রচারণা করেছে সেটাও জানা ছিল না। তবে ভোটের দিন সন্ধ্যায় সে একবার বাসায় এসেছিল। এরপরে আর কিছু বলতে পারব না। এখন যা দেখছি তাতে বলার কিছু নেই। ছেলের লাশ পেলেই গ্রামে নিয়ে যাব।
প্রত্যক্ষদর্শী সাজ্জাদ জানান, নির্বাচনের ফলাফলের পর শনিবার রাত ৮টার দিকে আমি, সুমন, রুবেল, আলামিন, ইমরান (মেসি) ও ইমরানসহ ৬ জন রহিম ব্যাপারী ঘাটে দাঁড়িয়ে কথা বলছিলাম। হঠাৎ অর্ধশত যুবক এসে ৩৩ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের নেতা শাহ আলম জীবনের লোক কে কে আছে, এই বলে চাপাতি দিয়ে আমাদের এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। এতে সুমন গুরুতর আহত হয়। পরে তাকে উদ্ধার করে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আনা হয়। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
সাজ্জাদ বলেন, হামলাকারীরা মুখে মাস্ক পরা ছিল। তাদেরকে চিনতে পারিনি। কী কারণে সুমনকে হত্যা হয়েছে। তা জানি না।
মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল লতিফ বলেন, এই ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। নিহতের বাবা অজ্ঞাত নামে মামলা করেছেন। হামলাকারীদের মুখোশ থাকায় কেউ তাদের চিনতে পারেনি।
সিসি ক্যামেরার ব্যাপারে তিনি বলেন, সিসি ক্যামেরার পাসওয়ার্ড না পাওয়ায় সেই ফুটেজ সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি। আশা করছি আমাদের হাতে ফুটেজ চলে আসবে।
জানা গেছে, নিহত সুমন ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের নবনির্বাচিত কাউন্সিলর সৈয়দ হাসান নূর ইসলাম রাষ্টনের সমর্থনে লালমাটিয়া মহিলা কলেজ কেন্দ্রে প্রচারণা চালিয়েছেন। তার বাবা আনোয়ার আহমেদ একজন গাড়িচালক। লালমাটিয়ার ৪/২ ব্লকে তিনি পরিবারের সঙ্গে থাকতেন। এক ভাই ও দুই বোনের মধ্যে সুমন সবার বড় ছিলেন। তাদের গ্রামের বাড়ি লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতি উপজেলার বালুরচর গ্রামে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।