নিজস্ব প্রতিবেদক: অবশেষে দীর্ঘ অপেক্ষার পালা শেষ। চট্টগ্রামের কালুরঘাটে কর্ণফুলী নদীর ওপর নির্মিত হতে যাচ্ছে একটি রেল-কাম-রোড সেতু। তবে সেতুর কাজ শুরু হওয়ার পর সেটি চালু হতে আরও অন্তত পাঁচ বছর লাগবে।
আজ জাতীয় সংসদে এক প্রশ্নোত্তরে রেলপথ মন্ত্রী মোঃ জিল্লুল হাকিম জানান, ‘কালুরঘাটে একটি ‘রেল-কাম-রোড সেতু’ নির্মাণ প্রকল্পের ফিজিবিলিটি স্ট্যাডি কোরিয়া সরকারের ইডিসিএফ এর নিয়োজিত পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক সম্পন্ন হয়েছে এবং ডিপিপি প্রস্তুতের কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’
এদিকে এই প্রকল্প হাতে নেওয়ার পাঁচ বছরের ব্যবধানে ১০ গুণ ব্যয় বাড়ানো নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে পরিকল্পনা কমিশন। তারা এই ব্যয়ের অঙ্ক যৌক্তিক পর্যায়ে নিয়ে আসতে রেল মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দিয়েছে।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রামের কালুরঘাটে কর্ণফুলী নদীর ওপর একটি রেল-কাম-রোড সেতু নির্মাণ করতে ২০১৮ সালে এক হাজার ১৬৩ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় উপস্থাপন করা হয়। তবে সভায় প্রধানমন্ত্রী সড়ক ও রেল সেতুর জন্য আলাদা নকশা প্রণয়ন করে ফের একনেক সভায় অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করতে বলেন।
সেই আলোকে প্রকল্প প্রস্তুত করতে রেল মন্ত্রণালয়ের সাড়ে পাঁচ বছর লেগেছে। এখন ১১ হাজার ৫৬৫ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি প্রস্তাব করেছে মন্ত্রণালয়।
সম্প্রতি পরিকল্পনা কমিশনে ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য (সচিব) ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রকল্পটির মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভায় এত বেশি ব্যয় বৃদ্ধি নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়।
বাংলাদেশ রেলওয়ে সূত্র জানায়, ২০১৮ সালে যখন ডিপিপি তৈরি করা হয়, তখন প্রস্তাবিত সেতুর দৈর্ঘ্য ছিল ৩ কিলোমিটার, যার মধ্যে মূল সেতুর দৈর্ঘ্য ১ কিলোমিটার এবং বেড়িবাঁধের ২ কিলোমিটার। নৌযান চলাচলের জন্য ভার্টিক্যাল ক্লিয়ারেন্স ছিল ৭ দশমিক ৬২ মিটার।
নৌযান চলাচলের জন্য এখন ভার্টিক্যাল ক্লিয়ারেন্স রাখতে হবে অন্তত ১২ দশমিক ২ মিটার। এর ফলে সেতুটির মোট দৈর্ঘ্য বেড়ে হয়েছে ১১ দশমিক ৭৪ কিলোমিটার। ১ কিলোমিটার মূল সেতুর পাশাপাশি উভয় পাশে ৫ কিলোমিটার ভায়াডাক্ট ও উভয় পাশে ৫ দশমিক ৭৪ কিলোমিটার বাঁধ তৈরি হবে।
বাংলাদেশ রেলওয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘এটাই ব্যয় বৃদ্ধির একটি বড় কারণ।’
তিনি জানান, বেশি ধারণক্ষমতাসহ একটি বড় সেতু করার সিদ্ধান্ত এবং নির্মাণ সামগ্রীর দাম বেড়ে যাওয়ার কারণেও সেতুর সম্ভাব্য ব্যয় বৃদ্ধি হয়েছে।
১৯৩০ সালে ব্রিটিশ আমলে নির্মিত হয় ৭০০ গজ দীর্ঘ কালুরঘাট রেল সেতু। ১৯৫৮ সালে এ সেতু সব ধরনের যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয় তৎকালীন পাকিস্তান সরকার। ২০১০ সালে তৃতীয় শাহ আমানত সেতু উদ্বোধনের আগ পর্যন্ত কালুরঘাট সেতু দিয়ে ভারী যান চলাচলের কারণ সেতুটি আরও নাজুক হয়ে পড়ে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।