বিনোদন ডেস্ক : বাংলা গণসংগীতের এক অনন্য নাম প্রতুল মুখোপাধ্যায়। তাঁর কণ্ঠস্বর, তাঁর গান, তাঁর সুর—সবকিছুই আজও মানুষের মনে একইভাবে বাজে। বিশেষ করে তাঁর কালজয়ী গান “আমি বাংলায় গান গাই”—এই একটি মাত্র গানই যেন তাঁকে চিরস্মরণীয় করে রেখেছে। তবে তাঁর গানের জগৎ শুধু এই একটি গানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না, বরং তাঁর প্রতিটি সুরেই ছিল প্রতিবাদের ভাষা, ছিল ভালোবাসার উষ্ণতা।
জীবনের পথচলা
প্রতুল মুখোপাধ্যায় জন্মেছিলেন ১৯৪২ সালে, ভারতের পশ্চিমবঙ্গে। ছোটবেলা থেকেই গানের প্রতি ছিল গভীর টান। আশপাশের সমাজ, রাজনৈতিক পরিবর্তন, সাধারণ মানুষের দুঃখ-দুর্দশা—এসবই প্রভাব ফেলেছিল তাঁর মননে। তিনি গানকে ব্যবহার করেছিলেন সমাজ পরিবর্তনের হাতিয়ার হিসেবে। তাঁর গান ছিল গণমানুষের কথা, দুঃখী মানুষের কথা।
গানের ভুবনে প্রতুল
প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের গানে মিশে আছে সংগ্রাম, প্রতিবাদ, প্রেম আর মানবতার বার্তা। তাঁর জনপ্রিয় গানগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য—
আমি বাংলায় গান গাই
আমি চিৎকার করে বলি
কেন গান গাই
ভালো আছি ভালো থেকো
সাদা মাটা কথা
এই গানগুলোর প্রতিটিতেই খুঁজে পাওয়া যায় এক ব্যতিক্রমী আবেগ আর জীবন দর্শন। “আমি বাংলায় গান গাই” গানটি তো বাঙালির জাতিসত্তার গান হয়ে উঠেছে। এই গান যেন বাংলা ভাষার অহংকার, এই গানের সুরেই বাজে বাঙালির প্রাণ।
সমাজ পরিবর্তনের সুর
প্রতুল মুখোপাধ্যায় ছিলেন একজন প্রকৃত গণশিল্পী। তিনি বিশ্বাস করতেন, গান শুধু বিনোদন নয়, এটি মানুষের অস্তিত্বের সঙ্গে জড়িত। তাঁর গান ছিল সমাজের অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদের হাতিয়ার। সেই সময়ের রাজনৈতিক টানাপোড়েন, শোষিত মানুষের বেদনা—সবকিছুই তাঁর গানে উঠে এসেছে।
শেষ জীবন ও প্রস্থান
জীবনের শেষ সময়ে প্রতুল মুখোপাধ্যায় অনেকটাই নিরবে কাটিয়েছেন। ২০২২ সালের 5 অক্টোবর তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর মৃত্যুতে বাংলা গানের জগতে নেমে আসে শোকের ছায়া। তবে তিনি থেকে গেছেন তাঁর গানের মধ্যে, তাঁর আদর্শের মধ্যে।
প্রতুল মুখোপাধ্যায়: প্রেরণার নাম
আজও প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের গান শোনেন অসংখ্য মানুষ। নতুন প্রজন্মও তাঁর গানের মর্ম উপলব্ধি করতে শুরু করেছে। ভাষা, সংস্কৃতি, প্রতিবাদ আর ভালোবাসার মেলবন্ধন যাঁর কণ্ঠে ফুটে উঠেছে, তিনি চিরকাল বেঁচে থাকবেন বাংলার মানুষের হৃদয়ে।
“আমি বাংলায় গান গাই, আমি বাংলার গান গাই”—এই সুর যেন যুগে যুগে বাঙালিকে পথ দেখায়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।