জুমবাংলা ডেস্ক : বাহারি গাছের সমাহার। সবজি থেকে শুরু করে ফলের গাছ। সবই রয়েছে। ঘরের পেছনে ও সামনে ছোট্ট জায়গায় গড়ে তুলেছেন বাগান। প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া উপহারের ঘরের সঙ্গে ২ শতাংশ জমি ও প্রতিবেশী সাদেক হোসেনের সঙ্গে তার জমিতে যৌথভাবে গড়ে তুলেছেন সবজি ও ফলের এই বাগান।
সেখান থেকে প্রায়ই নিজের পরিবারের সবজির জোগানসহ বাজারেও বিক্রি করছেন তিনি। পাশাপাশি নিজের দৈনিক রোজগারের টাকায় চলছে ছোট পরিবারের খাবারের জোগান। এটি ময়মনসিংহের বয়রার আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর পাওয়া মিজানুর রহমানের পরিবারের বর্তমান অবস্থা। প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পেয়ে তার জীবন পালটে গেছে। ঘরের সঙ্গে হয়েছে একটি ছোট জমি। তিনি ঘরের সঙ্গে জায়গা পাওয়ায় সেটিকে ভালোভাবে কাজে লাগিয়ে নিজের মতো করে সাজিয়েছেন। শুধু সবজি চাষই নয়, তিনি এর সঙ্গে কবুতরও পালন করছেন। তার এখন প্রায় আট জোড়া কবুতর। এই কবুতর থেকে তিনি বড় কবুতরের খামার করার চিন্তা করছেন।
গতকাল সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মিজানুর রহমান তার ঘরের চারপাশে পেঁপেগাছ লাগিয়েছেন, যেখানে বহু পেঁপে ধরেছে। এখান থেকে তিনি বিক্রিও করছেন। এছাড়া পুঁইশাক, লাউ, শিম, আলু, শসা, করলা, কাঁচা মরিচ, বোম্বে মরিচ, দুন্দুল গাছ লাগিয়েছেন। ফলের মধ্যে আছে আমগাছ, ডালিম, আমড়া, পেয়ারা, জলপাই, লেবু ও কাঠগাছ।
মিজানুর রহমান বলেন, ‘ঘর পাওয়ার পর নিজের আত্মবিশ্বাস বেড়ে গেছে। পাশে যিনি ঘর পেয়েছেন, তিনি আমার আপন ভাইয়ের মতো হয়ে গেছেন। দুজন একসঙ্গে এখন কবুতর পালন ও সবজির চাষ করছি। আমার পাশের প্রতিবেশী রিকশা চালান আর আমি ইলেকট্রিক কাজ করি দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে। কিছু টাকা যদি লোন পেতাম, তাহলে এই সবজি ও কবুতর চাষকে আরো বড় করার ইচ্ছে আছে। আমার দুই মেয়ে। এক জনের ১১ বছর। মাদ্রাসায় তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে। আর ছোট মেয়ের বয়স তিন বছর। দুজনকে লালন-পালন করতেই এখন একটু ভাবতে হয়। এছাড়া আর কোনো চিন্তা নেই, নিজের মাথা গোঁজার ঠাঁই হয়েছে। বড় মেয়েটার মাদ্রাসায় টাকা দিতে হয় অনেক।
একই এলাকায় আশ্রয়ণের ঘর পেয়েছেন জান্নাতুল ফেরদাউস। তিনি তার স্বামী-সংসার নিয়ে থাকছেন সেই ঘরে। শুধু থাকছেনই না, গরু-ছাগল ও হাঁস-মুরগির খামার গড়ে তুলেছেন। সরেজমিনে দেখা যায়, ঘরের সামনে তিনি তার দুটি গরু, একটি ছাগল বেঁধে রেখেছেন। এর পাশেই ঘুরছে তার মুরগি।
জান্নাতুল ফেরদাউস জানান, তার প্রায় ১০টি মুরগি ও পাঁচটি হাঁস রয়েছে। তার পরিবারের সদস্যসংখ্যা পাঁচ। ১০ মাস হয়েছে ঘর পেয়েছেন। তার স্বামী রাজমিস্ত্রির কাজে বের হলে তিনি এই গরু ও ছাগল পালন করেন। তার ইচ্ছা, গরু বড় হলে তিনি বাছুর ও দুধ বিক্রি করবেন। ইতিমধ্যে তিনি হাঁস ও মুরগি বিক্রি শুরু করেছেন। তার সংসার খুব ভালোভাবে চলছে।
খুব আত্মবিশ্বাসী জান্নাতুল ফেরদাউস জানালেন, তার এই ঘর জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছেন। বয়রায় মোট ৭২টি আশ্রয়ণের ঘর রয়েছে। এখন পর্যন্ত ময়মনসিংহে প্রায় ২ হাজার ৫০৩টি পরিবারকে পুনর্বাসিত করা হয়েছে এই প্রকল্পের আওতায়।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক বলেন, আজ বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরো ২৮৭টি ঘর বিতরণ করবেন। এর মাধ্যমে ময়মনসিংহের চারটি উপজেলা গৃহহীনমুক্ত হবে
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।