জুমবাংলা ডেস্ক : প্রাণহানির শঙ্কা আর গ্রেফতার আতঙ্কে নেত্রকোনা জেলার মদন পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ডের জাহাঙ্গীরপুর চকপাড়া এলাকা এক মাস যাবৎ পুরুষ শূণ্য। স্থানীয় এলাকাবাসী ও থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মদন উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি লিটন বাঙ্গালীর সাথে পূর্ব শত্রুতা আর এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে উপজেলা শ্রমিক লীগের (অটো-সিএনজি) সভাপতি হাবিবুর রহমানের বিরোধ চলে আসছিল। এরই জের ধরে গত ২২ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়। এ সময় শ্রমিক লীগের অফিসে হামলা ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটে।
এ ব্যাপারে হাবিবুর রহমান বাদী হয়ে আনছু মিয়া, লিটন বাঙ্গালী ও মশিউর মাস্টার সহ ৩৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ২০/৩০ জনকে আসামী করে মদন থানায় মামলা দায়ের করে।
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে পরদিন লিটন বাঙ্গালী ও তার অনুসারীরা শরীফকে দেওয়ান বাজার রোডে মারধর করছে এই খবর পেয়ে চাচা আব্দুল হেকিম (৬০) বাঁচাতে এগিয়ে যায়। স্ত্রী সাজু আক্তারের দাবী প্রতিপক্ষের হামলায় হেকিম গুরুতর আহত হয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
এ ব্যাপারে নিহত আব্দুল হেকিমের স্ত্রী সাজু আক্তার বাদী হয়ে লিটন বাঙ্গালীসহ ৩৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৫০/৬০ জনকে আসামী করে ২৪ ফেব্রæয়ারী মদন থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।
এদিকে আব্দুল হেকিম মারা যাওয়ার সংবাদ ছড়িয়ে পড়ায় হাবিব গংরা ক্ষিপ্ত হয়ে দেশীয় অস্ত্রেশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ২৩ ফেব্রæয়ারী দুপুরে লিটন বাঙ্গালী, আতিকুর রহমান লিংকন, সাদেক মিয়া, গোলাপ মিয়া, জয়নাল মিয়া, লায়লা আক্তার, রবিউল্লাহ, সোহেল মিয়া, মোহাম্মদ আলী ও ভুলু মিয়া সহ ১০/১২টি বাড়ীঘরে হামলা চালায়। এ সময় হামলাকারীরা ব্যাপক ভাংচুর করে ১১ ভরি স্বর্ণালংকার ৮টি গরুসহ আনুমানিক ১৭ লক্ষাধিক টাকার মূল্যবান আসবাবপত্র ও মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।
বাড়ী ঘরে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাটের অভিযোগ এনে আয়শা আক্তার, ললিতা আক্তার, ঝুমা আক্তার, আসমা আক্তার, লায়লা আক্তার, রবিউল্লাহ, সোহেল মিয়া পৃথক পৃথক বাদী হয়ে হাবিব গংদের বিরুদ্ধে আদালতে ৭টি মামলা দায়ের করেছে।
এছাড়াও মোঃ দিলু মিয়া বাদী হয়ে হাবিব গংদের বিরুদ্ধে গর্ভবর্তী নারীর পেটে লাথি মেরে গর্ভের সন্তান হত্যার অভিযোগ এনে ৮ মার্চ থানায় মামলা দায়ের করেছে।
এ ব্যাপারে হাবিবুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ওদের হামলায় আমার চাচা হেকিম মারা গেছে। এনিয়ে আমাদের লোকজনের মাঝে উত্তেজনা দেখা দিয়েছিল। আমি তাদেরকে বলেছি, প্রতিপক্ষের বাড়ীঘর ভাংচুর করলে কি আমার চাচা ফিরে আসবে? তোমরা শান্ত হও। মূলত আমাদেরকে ঘায়েল করতেই তারা সু-পরিকল্পিতভাবে নিজেরাই বাড়ীঘর ভাংচুর ও লুটপাট চালিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা ও বানোয়াট মামলা দায়ের করেছে। আমি স্থানীয় প্রশাসনের কাছে সুষ্ঠু তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানাই।
হামলা, পাল্টা হামলা, বাড়ীঘর ভাংচুর, লুটপাট, মামলা, পাল্টা মামলা, প্রাণনাশের হুমকি ও গ্রেফতার আতংকে বর্তমানে চকপাড়া এলাকাটিতে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
এ ব্যাপারে পুলিশ সুপার আকবর আলী মুনসী’র সাথে কথা বললে তিনি বলেন, পূর্ব শত্রুতা এবং এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের মাঝে সংঘর্ষ ও বাড়ীঘরে হামলা ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ জনগনের জানমাল এবং শান্তি শৃংখলা রক্ষায় সদা তৎপর রয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িত প্রকৃত দোষীদের খুঁজে বের করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
Get the latest News first— Follow us on Zoombangla Google News, Zoombangla X(Twitter) , Zoombangla Facebook, Zoombangla Telegram and subscribe to our Zoombangla Youtube Channel.