জুমবাংলা ডেস্ক : বাংলাদেশে নিযুক্ত সউদী রাষ্ট্রদূত ঈসা বিন ইউসুফ আল দুহাইলান বলেছেন, সউদী আরবে প্রায় ৩২ লাখ বাংলাদেশি রয়েছেন। যারা বাংলাদেশ ও সউদী আরবের অর্থনীতিতে অবদান রাখছেন। রাষ্ট্রদূত বলেন, সউদী ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের ভিশন ২০৩০ বাস্তবায়নে বাংলাদেশি শ্রমিকরা উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছেন। প্রতি বছর সউদী আরব থেকে প্রবাসী কর্মী ও ব্যবসায়ীদের কষ্টার্জিত রেমিট্যান্সের মাধ্যমে প্রায় দশ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করছে বাংলাদেশ। রাষ্ট্রদূত বলেন, সউদী গমনেচ্ছু বাংলাদেশি কর্মীদের কোনো প্রকার ভোগান্তি ছাড়াই নির্বিঘেœ প্রতিদিন সর্বোচ্চ ভিসা ইস্যু করা হচ্ছে। কোনো কোনো দিন ৬ হাজার কর্মীর ভিসা সরবরাহ করা হচ্ছে। সউদী রাষ্ট্রদূতের আমন্ত্রণে দৈনিক ইনকিলাব সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দীন গতকাল মঙ্গলবার তার দপ্তরে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে রাষ্ট্রদূত ঈসা বিন ইউসুফ আল দুহাইলান এসব কথা বলেন। অত্যন্ত ফলপ্রসু আলোচনাকালে সউদী দূতাবাসের সহকারী রাষ্ট্রদূতও উপস্থিত ছিলেন।
রাষ্ট্রদূত আল-দোহাইলান বলেছেন, বাংলাদেশের সাথে ভ্রাতৃ-প্রতীম সউদী আরবের আগে থেকেই অত্যান্ত গভীর সম্পর্ক রয়েছে। আগামী দিনগুলোতেও দুই দেশের সম্পর্কের আরো উন্নতি হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। সউদীর রাষ্ট্রদূত দুহাইলান আরো বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়নে সউদী আরব সবসময় পাশে ছিল এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। ইনকিলাব সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দীন বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে রাজকীয় সউদী সরকারে অবদানের কথা স্মরণ করে সউদী সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। সউদী আরব এবং দেশটির জনগণ বাংলাদেশের হৃদয়ের খুব কাছের উল্লেখ করে ইনকিলাব সম্পাদক বলেন, সউদী আরব সব সময় বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়েছে। ইনকিলাব সম্পাদক বলেন, বাংলাদেশের সরকার ও জনগণ সউদী আরব এবং দেশটির জনগণের মঙ্গল কামনা করেন, কারণ তারা মক্কা ও মদীনার দুই পবিত্র মসজিদের খাদেম।
উল্লেখ্য, সউদী আরবে বাংলাদেশিসহ অভিবাসী কর্মীদের সুরক্ষা এবং নিরাপত্তায় ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। মানবসম্পদ ও সামাজিক উন্নয়ন মন্ত্রণালয় ১৪টি পেশা চিহ্নিত করেছে। যেগুলি গৃহকর্মীদের সুযোগের মধ্যে পড়ে। সউদী আরবে গৃহকর্মী এবং নিয়োগকারী সংস্থাগুলি,অফিস, নিয়োগকর্তাদের মধ্যে চুক্তিভিত্তিক সর্ম্পককে সর্বোত্তম আন্তর্জাতিক মান ও লাইন অনুসারে নিয়ন্ত্রণ করে। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা কনভেনশন নং ১৮৯ এবং গৃহকর্মীদের জন্য শালীন কাজ সংক্রান্ত সুপারিশ করেছে। আইনটি জাতি, বর্ণ, লিঙ্গ, ধর্ম, রাজনৈতিক মতামত, জাতীয় উতস বা সামাজিক উতসের ভিত্তিতে শ্রমিকদের মধ্যে বৈষম্য নিষিদ্ধ করেছে। সউদী নিয়োগকর্তাদের অধীনে বাংলাদেশ থেকে গৃহকর্মী, ব্যক্তিগত চালক, আয়া, হোম নার্স, বাড়ির রান্না, বাড়ির দর্জি, হোম ভ্রমণ, বাড়িতে বাস করা, হাউস ম্যানেজার, গৃহরক্ষক , র্বক্দিত সহকারী, বাড়ির কৃষক, ফিজিওথেরাপিস্ট, বিশেষজ্ঞ বক্তৃতা ও শ্রবণ বিশেষজ্ঞ পেশায় কর্মী নিয়োগ করা হচ্ছে।
সউদী সরকার গৃহকর্মীদের জন্য ডিজিটাল সেবা চালু করেছে দীর্ঘ দিন যাবত। সউদীতে গৃহকর্মীদের জন্য মুসানেদ প্ল্যাটফর্ম, যা একটি ইলেকট্রনিক প্ল্যাটফর্ম এবং গৃহকর্মীদের নিয়োগের জন্য সমমন্বিত ব্যবস্থা যা নিয়োগকারী সংস্তাগুলি দ্বারা প্রদত্ত পরিষেবা এবং তাদের খরচ প্রদান করে। সউদী আরব অভিখযোগ দায়ের করার জন্য একটি পরিষেবাও প্রদান করছে। মানবসম্পদ ও সামাজিক উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে আরও ডিজিটাল পরিষেবা পাওয়া যাচ্ছে। সউদী আরবের আইন অনুসারে যেসব বিষয়াদি নিষিদ্ধ করা হয়েছে তা হচ্ছে, ২১ বছরের কম বয়সী একজন কর্মী নিয়োগ, গৃহকর্মীকে চুক্তিতে সম্মত হওয়া ছাড়া অন্য কাজের জন্য নিয়োগ করা, শ্রমিকদের মধ্যে বৈষম্য, একজন কর্মীকে যৌন হয়রানি করা, জোরপূর্বক শ্রম বা ব্যক্তি পাচারের কাঠামোর মধ্যে অনুশীলন করা, কর্মীকে এমন যেকোনো কর্মের জন্য উপনীত করা যা তাকে শারীরিক ক্ষতি করে এবং অভিবাসী শ্রমিকদের মর্যাদা লঙ্ঘন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।