বিনোদন ডেস্ক : বলিউডের শীর্ষ তারকা প্রিয়াঙ্কা চোপড়া ও আমেরিকান পপস্টার নিক জোনাস সারোগেসির মাধ্যমে কন্যাসন্তানের বাবা-মা হয়েছেন। শুক্রবার দিনগত মধ্যরাতে সামাজিক মাধ্যমে নিজেরাই এই সুখবরটি জানিয়েছে। এ খবরটি প্রকাশ্যে আসতেই নিক-প্রিয়াঙ্কা জুটির সহকর্মী ও ভক্ত অনুরাগীদের তরফ থেকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা বার্তার বন্যা বয়ে যাচ্ছে!
তবে এত শত শুভেচ্ছা বার্তার মাঝেও বিষয়টি নিয়ে তীর্যক সমালোচনা করলেন আলোচিত-সমালোচিত বাংলাদেশের নির্বাসিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন। অভিনেত্রী প্রিয়াঙ্কা চোপড়ার নাম না নিয়ে ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘সারোগেসি বিজ্ঞানের চমৎকার একটা আবিষ্কার বটে। তবে সারোগেসি ততদিন টিকে থাকবে, যতদিন সমাজে দারিদ্র্য টিকে থাকবে। দারিদ্র্য নেই তো সারোগেসি নেই।’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘দরিদ্র মেয়েদের জরায়ু টাকার বিনিময়ে নয় মাসের জন্য ভাড়া নেয় ধনীরা। ধনী মেয়েরা কিন্তু তাদের জরায়ু কাউকে ভাড়া দেবে না। কারণ গর্ভাবস্থায় জীবনের নানা ঝুঁকি থাকে, শিশুর জন্মের সময়ও থাকে ঝুঁকি। দরিদ্র না হলে কেউ এই ঝুঁকি নেয় না।’
ওই পোস্টে তসলিমা নাসরিন লিখেছেন, ‘গৃহহীন স্বজনহীন কোনও শিশুকে দত্তক নেওয়ার চেয়ে সারোগেসির মাধ্যমে ধনী এবং ব্যস্ত সেলিব্রিটিরা নিজের জিনসমেত একখানা রেডিমেড শিশু চায়। মানুষের ভেতরে এই সেলফিস জিনটি, এই নার্সিসিস্টিক ইগোটি বেশ আছে। এসবের ঊর্ধ্বে উঠতে কেউ যে পারে না তা নয়, অনেকে গর্ভবতী হতে, সন্তান জন্ম দিতে সক্ষম হলেও সন্তান জন্ম না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।’
সারোগেসি এমন এক ধরনের পদ্ধতি যেখানে সন্তান জন্মদানের জন্য গর্ভ ভাড়া নেওয়া হয়। এ পদ্ধতিতে একজন নারী তার নিজের গর্ভে অন্যের সন্তান বড় করে ও জন্ম দেয়। একজনের নারীর গর্ভে অন্য দম্পতির সন্তান ধারণের এ পদ্ধতিকেই সারোগেসি বলে। এক্ষেত্রে গর্ভধারণের কাজটি যে নারী করেন তাকে ‘সারোগেট মাদার’ বা ‘সারোগেট মা’ বলা হয়। সারোগেসি দুই ধরনের হয়।
পার্শিয়াল সারোগেসি: এ পদ্ধতিতে সন্তানধারণে কোনো ভূমিকাই পালন করেন না মা। বাবার শুক্রাণু ও সারোগেট মায়ের ডিম্বাণু আলাদাভাবে ফার্টিলাইজ করে সারোগেট মায়ের গর্ভধারণ এবং সন্তান প্রসব করানো হয়। তবে অনেক ক্ষেত্রে বাবার শুক্রাণুর পরিমাণ কম হওয়া বা বন্ধ্যাত্বের ক্ষেত্রে বাইরের কোনো পুরুষ শুক্রাণু ডোনারের সাহায্য নিয়ে গর্ভধারণ করোনো হয়।
জেস্টেশনাল সারোগেসি: এ পদ্ধতিতে মূলত দম্পতির মধ্যে পুরুষের শুক্রাণু ও মহিলার মায়ের ডিম্বাণু নিয়ে ল্যাবে ভ্রুণ তৈরি করা হয়। এরপর সারোগেট মায়ের জরায়ুতে প্রতিস্থাপন করা ভ্রুণটি। বর্তমানে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে জেস্টেশনাল সারোগেসি পদ্ধতির মাধ্যমে সন্তান ধারণ করার পরামর্শ দেওয়া হয়। এতে যেহেতু সন্তানের মাতা-পিতা উভয়ের শুক্রাণু ও ডিম্বাণুর মিলনের ফলে সন্তান প্রসব হয় তাই এ পদ্ধতি সবচেয়ে বেশি প্রচলিত ও প্রশংসিত। এক্ষেত্রে সারোগেট মাকে বায়োলজিক্যাল মা বলা যাবে না।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।