স্বাস্থ্য ডেস্ক : রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে এমন প্রোটিনকে কীভাবে কাজে লাগানো যায়, এবার সেই উপায় নিয়েই গবেষণায় সাফল্য পেলেন গবেষক-চিকিৎসকরা।
হায়দ্রারাবাদের সিএসআইআর- সেন্টার ফর সেলুলার অ্যান্ড মলিকিউলারের গবেষকরা সেই প্রোটিনকে ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করিয়ে ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করার উপায় বার করার দাবি করলেন। আনন্দবাজার।
এর আগে একবিংশ শতকের প্রথম দিকেই শরীরে সেক্রেটাগন (এসসিজিএন) নামের এক প্রোটিনের উপস্থিতি লক্ষ করেছিলেন গবেষকরা। ২০১৭-য় এই প্রোটিনের কার্যকারিতা ও শরীরে এর প্রভাব নিয়ে নানা গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়। সিএসআইআর- সেন্টার ফর সেলুলার অ্যান্ড মলিকিউলারেরই গবেষক-চিকিৎসক যোগেন্দ্র শর্মা এই নিয়ে বিস্তর গবেষণাও চালান। এবার তার সঙ্গেই এই প্রয়োগ কৌশল বার করার গবেষণায় যোগ দিয়েছিলেন প্রতিষ্ঠানের আরও কয়েকজন গবেষক।
তাদের দাবি, এই প্রোটিন প্যানক্রিয়াসের বিটা সেল থেকে ক্ষরিত হয়। তা ক্ষরিত হলে ইনসুলিন হরমোনের ক্ষরণ বাড়ে। ফলে ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের মূল সমস্যা ইনসুলিন কমে যাওয়াকে অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
ডায়াবেটিস আক্রান্তদের শরীরে এই প্রোটিন ক্ষরণ অনেকটাই কমে যায়। ফলে ইনসুলিনের মাত্রাও কমতে থাকে। বিশেষ করে ওজন বৃদ্ধির কারণে হওয়া ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে এই কথা আরও বেশি করে খাটে। এই অবস্থায় গবেষণায় যুক্ত যোগেন্দ্র শর্মা, রাধিকা খান্ডেলওয়াল ও অমরুথা চিদানন্দরা সেই প্রোটিনকেই এবার ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে রোগীদের শরীরে প্রবেশ করিয়ে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের কথা ভাবছেন।
ডায়াবেটিস রুখতে এই পদ্ধতি সেরা বলেই দাবি গবেষকদের- ছবি : শাটারস্টক (আনন্দবাজার পত্রিকা)
ভারতে প্রায় ৬ কোটিরও বেশি মানুষ ডায়াবিটিসে ভুগছেন। এই অবস্থায় এই প্রোটিনের প্রয়োগ হলে অনেক রোগীই এর দ্বারা উপকৃত হবেন। যে মেটাবলিক ডিসঅর্ডারের জন্য ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হন সকলে, সেই পথেও এই প্রোটিন অনেকটা বাধা দেবে। প্যানক্রিয়াসের বিটা সেল থেকে বেরনো প্রোটিন কমে যাওয়ায় ইনসুলিনের মাত্রাও কমে, তা ঢাকতেই বাইরে থেকে এই প্রোটিন প্রবেশ করানো যেতে পারে শরীরে— মত মূল গবেষক যোগেন্দ্র শর্মার।
কতটা কার্যকরী এই পদ্ধতি?
এসএসকেএমের অধ্যাপক ও এন্ডোক্রিনোলজিস্ট সতীনাথ মুখোপাধ্যায়ের মতে, ‘‘সেক্রেটাগন(এসসিজিএন) প্রোটিন প্যানক্রিয়াস থেকে নির্গত হলে ইনসুলিনের মাত্রা বাড়িয়ে তোলে, এতে কোনও সন্দেহ নেই। কিন্তু এই প্রোটিন মস্তিষ্ক থেকেও নির্গত হয়। সমস্যা হয় তখনই। এটি মস্তিষ্ক থেকে বেরলে স্ট্রেস হরমোন কর্টিসলের পরিমাণ বাড়ে। এতে আবার উল্টো ফল হয়। এর প্রভাবে শরীরে ইনসুলিনের মাত্রা কমে। ফলে ইঞ্জেকশন দিলেই কাজ শেষ হয় না।’’
তা হলে সমাধান?
সতীনাথবাবুর মতে, ইঞ্জেকশন দেয়ার আগে যাচাই করে নিতে হবে এর অণু কী আকারের। ব্রেন-বডি বেরিয়ারকে টপকে ইঞ্জেকশন মস্তিষ্কে প্রবেশ করলে কাজের কাজ হবেন না। তাই তাকে শরীরে, বিশেষ করে প্যানক্রিয়াসের বিটা সেলে আটকে রাখতে হবে। তেমনটা করতে চাইলে এর অণু বড় হতে হবে, যাতে তা ব্রেন-বডি বেরিয়ারকে টপকাতে না পেরে মস্তিষ্ক থেকে দূরে থাকে। তবে এমন ইঞ্জেকশন বাজারীকরমের আগে নিশ্চয় অণুর পরিমাপ নিয়েও চিন্তা-ভাবনা করবেন বিজ্ঞানীরা বলে আশাবাদী বিশেষজ্ঞরা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।