স্পোর্টস ডেস্ক : ভারতের বিপক্ষে এক দিনের ক্রিকেটে অভিষেক ম্যাচেই ক্রিকেট বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন কাটার মাস্টারখ্যাত মোস্তাফিজুর রহমান। ঘরের মাঠে সেবার তার কাটারে কাহিল ছিলেন রোহিতরা। মাঝে পেরিয়ে গেছে দীর্ঘসময়। তিনি হয়ে উঠেছেন দলের প্রধান স্ট্রাইক বোলার। বাংলাদেশ সর্বপ্রথম ভারতের মাটিতে দুই ফরম্যাটের (টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি) সিরিজ খেলতে এসেছে। কিন্তু তার থেকে কোনো সাপোর্ট পাচ্ছে না দল। ভারতের বিপক্ষে অভিষেকে তাক লাগিয়ে যার আবির্ভাব সেই একই দলের বিপক্ষে বাজে পারফরম্যান্সের কারণে এখন সমালোচনার মুখে তিনি। মোস্তাফিজের বিষ মাখানো কাটার যেন নির্বিষ হয়ে পড়েছে।
মোস্তাফিজের নখদন্তহীন বোলিংয়ের পরও টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ বলছেন, এ রকম হতেই পারে যে কোনো ক্রিকেটারের ক্ষেত্রে। তবে উদ্বিগ্ন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন।
সিরিজ নির্ধারণী তৃতীয় ও শেষ ম্যাচটি দেখতে নাগপুরে এসেছিলেন বিসিবি সভাপতি। ম্যাচের আগের দিনই এসে পড়েন তিনি। দল ভারতের বিপক্ষে লড়াই করছে; তিনি কি ঢাকায় বসে থাকতে পারেন? না পারেননি। তবে হতাশ করেছে তাকে সিনিয়র ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্স। গতকাল টিম হোটেলে বিসিবি সভাপতি আক্ষেপ করে বলেন, যাদের নিয়ে আশা করেছিলাম তারা কিছুই করতে পারেনি। আর মোস্তাফিজকে নিয়ে কথা উঠতেই বিরক্তি প্রকাশ করেন, ‘আরে ও যে কী করছে, বুঝতে পারছি না। কী হয়েছে ওর, বুঝে আসছে না। ওকে নিয়ে আলাদা বসতে হবে। কাজ করতে হবে। প্রয়োজনে আলাদা সেশন করব। দরকার হলে ব্রেক দেব। এভাবে তো হয় না।’ দলের প্রধান স্ট্রাইক বোলার মোস্তাফিজকে নিয়ে এভাবেই বলছিলেন দেশের ক্রিকেটের প্রধান কর্তা পাপন।
ঘরের মাঠে ত্রিদেশীয় সিরিজ ও ভারতের মাটিতে টি-টোয়েন্টি সিরিজে সাত ম্যাচ খেলে মোস্তাফিজ উইকেট পেয়েছেন মাত্র তিনটি। তাও চট্টগ্রামে আফগানিস্তানের বিপক্ষে এক ম্যাচেই এ উইকেটগুলো পেয়েছেন। বাকি ছয় ম্যাচে একটি উইকেটেরও দেখা পাননি। ভারতের মাটিতে তিন ম্যাচেই ফিরেছেন খালি হাতে। তিন ম্যাচে দিয়েছেন ১৫, ৩৫ ও ৪৫ রান। দিল্লিতে প্রথম ম্যাচে দুই ওভার পর তাকে আর বল দিতে সাহস করেননি অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। তবু অধিনায়কের সমর্থন পাচ্ছেন মোস্তাফিজ। মাহমুদউল্লাহ জানালেন, এ বাঁহাতি বোলার নিজেকে ফিরে পাওয়ার জন্য অসম্ভব কষ্ট করছেন। তার ওপর এখনো যে আস্থা আছে বেশ দৃঢ়ভাবেই বলেছেন অধিনায়ক।
মোস্তাফিজকে চ্যাম্পিয়ন বোলার উল্লেখ করে মাহমুদউল্লাহ বলেন, ‘না, ও কষ্ট করছে। ও অসম্ভব কষ্ট করছে, ও জানে, ওর কনসার্ন এ বিষয়টাতে। আপনি যদি ওকে ড্রপ করেন, তো এ রকম কোনো ইস্যু আমি ব্যক্তিগতভাবে এটা মনে করি না। একজন চ্যাম্পিয়ন বোলারকে আপনাকে সব সময় সাপোর্ট করতে হবে। কারণ মোস্তাফিজ আমার কাছে মনে হয় যে আমাদের ম্যাচ উইনিং বোলার। যখন ও কামব্যাক করবে, বাংলাদেশও ম্যাচ জিতবে ইনশাল্লাহ।’ তার পাশে থাকা উচিত বলে জানান মাহমুদউল্লাহ। তিনি বলেন, ‘অনেক সময় ওর চাহিদা অনুযায়ী ও পারফরম করতে পারছে না, আমার কাছে মনে হয় না যে ওটা নিয়ে চিন্তা করা উচিত, আমার মনে হয় যে টিম হিসেবে ওকে আমাদের সাপোর্ট করা উচিত।’
প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নুও মোস্তাফিজকে আগলে রেখেই কথা বলেছেন। তার আশা কাটার মাস্টার টি-টোয়েন্টিতে ভালো না করলেও টেস্টে ভালো করবে। নান্নু মনে করেন, টেস্ট সিরিজের মধ্য দিয়ে মোস্তাফিজের ফেরার দারুণ সুযোগ রয়েছে। তার অফ-ফরম প্রসঙ্গে প্রধান নির্বাচক বলেন, মোস্তাফিজ অনেক অভিজ্ঞ বোলার। এ সিরিজের টি-টোয়েন্টিতে ভালো করতে পারেনি। আমার বিশ্বাস যে, সে টেস্ট ক্রিকেটে সুযোগ পেলে অবশ্যই তা কাজে লাগাবে।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।