বিনোদন ডেস্ক : কান চলচ্চিত্র উৎসবের ৭৪তম আসরের শুরু থেকে করোনা নিয়ে সংশয় ছিলো। বিপুলসংখ্যক জনসমাগমের কারণে এটা স্বাভাবিকও। মহামারির পরের সময়ে সশরীরে সবচেয়ে বড় উৎসব আয়োজন সম্ভব করেছে কান। আয়োজকরা সফলভাবে উৎসব সম্পন্ন করতে কতো নতুন নিয়মই না যুক্ত করেছেন। এর মধ্যে অন্যতম কোভিড-১৯ নমুনা পরীক্ষা।
পালে দে ফেস্টিভাল ভবনের কাছেই পন্তিয়েরো এসপ্লানাদে কান চলচ্চিত্র উৎসব এবং মার্শে দ্যু ফিল্মের পক্ষ থেকে করোনা পরীক্ষার বিশেষায়িত ল্যাব আছে। গত ৫ জুলাই থেকে প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত এখানে সেবা পাওয়া যাচ্ছে। উৎসবের অ্যাক্রেডিটেশন পাওয়া সবাই বিনামূল্যে নমুনা পরীক্ষা করিয়েছেন। তার আগে ইজি কোভিড বায়ো গ্রুপ ওয়েবসাইটের মাধ্যমে নাম নিবন্ধন করে অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে হয়েছে। নমুনা পরীক্ষার ফল ছয় ঘণ্টার মধ্যে অংশগ্রহণকারীর ইমেইলে চলে আসে।
তবে কোভিড-১৯ নমুনা পরীক্ষার প্রক্রিয়া নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করেছেন অনেকে। পরীক্ষাকেন্দ্রে যাওয়ার ৩০ মিনিটের মধ্যে কিছু খাওয়া যাবে না। সেখানে অ্যাপয়েন্টমেন্ট নেওয়া বারকোড স্ক্যানের পর প্রয়োজনীয় তথ্যাদি পুনরায় পরখ করে দেখার অনুরোধ জানান কর্মীরা। এরপর তারা ধরিয়ে দেন একটি প্লাস্টিক টিউব। নিজেকে করোনামুক্ত প্রমাণের জন্য বারবার এতে থুতু ভরে দিতে হয়েছে সবাইকে। এখানেই যত বিপত্তি! কারণ প্রক্রিয়াটি অনেকের কাছে কঠিন লেগেছে। কারণ পর্যাপ্ত থুতু দিতে বেগ পেয়েছেন বেশিরভাগ অংশগ্রহণকারী। টিউব ভরতে কারও কারও তো ১৫ বার পর্যন্ত থুতু বের করতে হয়েছে!
করোনা প্রতিরোধক টিকার কোনো ডোজ না নেওয়ায় নমুনা পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত ছিলাম। ১০ দিনের কোয়ারেন্টিন শেষে ৫ জুলাই কানে এসে প্রথমবার থুতু দিয়েছি! এরপর গত ১২ দিনে আরও ছয়বার করোনা পরীক্ষা করাতে হয়েছে। যেহেতু সনদটির মেয়াদ ৪৮ ঘণ্টা মেয়াদ থাকবে, তাই হিসাব কষে আগেভাগে দিনক্ষণ ঠিক করে নিয়েছিলাম। আজ সমাপনী দিনে শেষবার থুতু দিয়ে এলাম। ফ্রান্স টোয়েন্টিফোরের এক নারী সাংবাদিক অভিজ্ঞতাটি ভিডিওতে ধারণ করলেন।
আমি না হয় টিকা নেইনি, কিন্তু টিকার ডোজ নেওয়া অনেক অংশগ্রহণকারীকেও ৪৮ ঘণ্টা পরপর নমুনা পরীক্ষা করাতে হয়েছে। বাংলাদেশ থেকে সংবাদকর্মী পার্থ সনজয় ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার দুই ডোজ নিয়ে এসেছেন। কিন্তু তিনিও রেহাই পাননি! তাকেও থুতু দিতে হয়েছে ছয়-সাতবার।
কিন্তু টিকা নেওয়া ব্যক্তিদেরও কেনো নমুনা পরীক্ষা করাতে হবে? আয়োজকদের একজন কর্মীর কাছে প্রশ্নটি করলে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। কানাঘুষা আছে, ফ্রান্সের বাইরে থেকে আসা সবার জন্য রাখা হয়েছে এই নিয়ম। যদিও এর কোনো সত্যতা মেলেনি।
উৎসবের প্রাণকেন্দ্র পালে দে ফেস্টিভাল ভবনে ঢুকতে কোভিড-১৯ পরীক্ষার ফল কিউআর কোড আকারে উপস্থাপন করতে হয়েছে। ইমেইলে আসা ফল গুগল প্লে ও অ্যাপ স্টোর থেকে ফ্রান্সের সরকারি অ্যাপ্লিকেশন ‘তু অ্যান্টি কোভিড’ ডাউনলোড করে তাতে সেভ করে রাখতে হয়েছে। চলচ্চিত্র প্রদর্শনী উপভোগ করতে প্রেক্ষাগৃহে প্রবেশের বেলায় অবশ্য কোভিড-১৯ সনদ লাগেনি। যদিও এসব থিয়েটারের প্রায় সবই পালে দে ফেস্টিভাল ভবনের অভ্যন্তরে! এছাড়া সংবাদ সম্মেলন কক্ষ, ওয়াইফাই জোন, সাংবাদিকদের চত্বর এর ভেতরেই। তাই উৎসব উপভোগের জন্য ৪৮ ঘণ্টা পরপর থুতু দেওয়া ছাড়া উপায় ছিলো না কারও।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।