জুমবাংলা ডেস্ক : চলতি মৌসুমে কালো সোনা নামে খ্যাত পেঁয়াজ বীজের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে ফরিদপুর জেলায়। লাভজনক হওয়ায় দিন দিন পেঁয়াজ বীজের আবাদ বাড়ছে এ জেলায়। সারা দেশে পেঁয়াজ বীজের চাহিদা অনুযায়ী ৫০ শতাংশ জোগান দেয় ফরিদপুরের পেঁয়াজ চাষিরা।
এ জেলায় পেঁয়াজের বীজ উৎপাদন কমপক্ষে ৩০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে ভারত থেকে বীজ আমদানি না ঠেকাতে পারলে ক্ষতির মুখে পড়ার আশঙ্কাও করছেন চাষিরা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ফরিদপুরের নয়টি উপজেলায় চলতি মৌসুমে এক হাজার ৮৯০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ বীজের আবাদ করা হয়েছে। যা থেকে কমপক্ষে পৌনে আট টনের মতো পেঁয়াজ বীজ উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। যার বাজার মূল্য কমপক্ষে ৩০০ কোটি টাকার অধিক। গত মৌসুমে ফরিদপুরে ১ হাজার ৮৬৭ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ বীজের আবাদ হয়েছিল। গতবারের তুলনায় এ বছর আবাদের পরিমাণ বেড়েছে। এ বীজ আবাদে ভালো লাভ মুখ দেখায় এই ফসলের দিকে কৃষকদের আগ্রহ বেড়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে বেশি পেঁয়াজ বীজ আবাদ হয়েছে সদরে প্রায় ২০৮ হেক্টর জমিতে। এরপরে ভাঙ্গায় ১৭৬, সদরপুরে ১৪৬, চরভদ্রাসনে ৬৮, মধুখালীতে ৬৮, বোয়ালমারীতে ৩৪, নগরকান্দায় ২৮, সালথায় ২২ ও আলফাডাঙ্গায় ৬ হেক্টর জমিতে বীজের আবাদ করা হয়েছে।
চাষিরা জানান, বীজ আবাদে যত্নশীল থাকতে হয়। কোনোরকম অযত্ন হলে ফলন নষ্ট হয়ে যায়। ক্ষেতে বীজের আবাদ শুরু হয় নভেম্বর-ডিসেম্বরে। ফলন পাওয়া যায় এপ্রিল-মে মাসের দিকে। ক্ষেত থেকে তোলার পর একবছর এই বীজ সংরক্ষণ করতে হয়। কারণ পরের বছর কৃষকরা এই বীজটি সংগ্রহ করে ক্ষেতে রোপণ করে।
ফরিদপুরের বড় পেঁয়াজ বীজ চাষি বকতার খান বলেন, ভারত থেকে পেঁয়াজ বীজ আমদানি করা হলে তা সার্বিকভাবেই ক্ষতি ডেকে আনবে। কারণ, ভারত থেকে আনা পেঁয়াজ বীজ অতি নিম্নমানের। তাতে ভালো ফলন হয় না। পেঁয়াজ বীজ আবাদে ছোট্ট শিশু পালনের মতোই যত্নশীল থাকতে হয়। কোনোরকম অযত্ন হলে ফলন নষ্ট হয়ে যায়।
ফরিদপুর সদর উপজেলার অম্বিকাপুর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর এলাকার পেঁয়াজ বীজ চাষি লাভলি আক্তার ও ইমতাজ মোল্লা দম্পতি গত প্রায় একযুগ ধরে পেঁয়াজ বীজ চাষ করছেন। দুই বিঘা দিয়ে শুরু করে এখন তাদের জমির পরিমাণ ৪০ বিঘা। আবহাওয়া ঠিক থাকলে তারা কাঙ্ক্ষিত ফলন পাবে বলে তাদের প্রত্যাশা।
ফরিদপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ রফিকুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, ‘লক্ষমাত্রার চেয়েও বেশি পেঁয়াজ বীজের আবাদ হয়েছে এ বছর। বীজ চাষিদের সমস্যা নিরসনে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর তাদের সকল ধরনের পরামর্শসহ প্রয়োজনীয় সহায়তা করে আসছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ফরিদপুরের মাটি এবং আবহাওয়া পেঁয়াজ আবাদের উপযোগী। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার জেলার চাষিরা কমপক্ষে পৌনে ৮ টন পেঁয়াজের বীজ উৎপাদন করবে। যা কমপক্ষে ৩০০ কোটি টাকার অধিক বাজার মূল্য।’
ভারত থেকে ৫০ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ আসছে : বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।