আন্তর্জাতিক ডেস্ক : দামি কোনো রেস্টুরেন্ট বা অভিজাত হোটেলে নয়, হাজার টাকায় এক কাপ চা বিক্রি হচ্ছে ফুটপাতে।কলকাতার মুকুন্দপুরের বাইপাস সড়কের ফুটপাতে এক চায়ের দোকানে মিলছে এমন অভিজাত চা।
সংবাদ প্রতিদিন জানায়, একটি ছাতা এবং রং-বেরঙের কিছু প্লাস্টিকের চেয়ার- এ নিয়েই গড়ে উঠেছে চায়ের দোকানটি। পাওয়া যাচ্ছে ৭২ রকমের চা, যাতে আছে-আফ্রিকার ক্যারামেল টি থেকে জার্মানির ক্যামোমাইল ফ্লোরাল টি, মেক্সিকোর টি সেন থেকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ব্লু টি। চায়ের কাপেই যেন বিশ্বভ্রমণ।
দোকানের মালিক পার্থপ্রতিম গঙ্গোপাধ্যায় বললেন, ‘গোটা বিশ্ব জানে বাঙালির চায়ের প্রতি কতটা প্রেম। কিন্তু চা নিয়ে বাঙালি মননে তেমন জ্ঞান কই? লাল চা, দুধ চা, লেবু চা, আদা চায়েই আটকে বাংলা। অথচ আমার সংগ্রহে রয়েছে প্রায় ৭২ রকম চা। আমি সেগুলোর সঙ্গে বাঙালির পরিচয় করাতে চাই। তাই চাকরি ছেড়ে ফুটপাতে চায়ের দোকান খুলেছি।’
তিনি বলেন, ‘দেখুন দু’টো বড় করপোরেট হাসপাতালের মাঝে আমার দোকান। ডাক্তার-রোগীর পরিজন-মেডিকেল রিপ্রেজেনটেটিভরা মূলত আমার কাস্টমার। এখানে আরও দুই তিনটা চায়ের দোকান আছে। তারা সবাই ৫ রুপিতে এক পেয়ালা চা বিক্রি করে। আমার প্রতি পেয়ালা চায়ের দাম শুরু হয় ১২ রুপি থেকে। এ ছাড়া ২০, ৪০, ১০০, ২০০ এমনকি ১০০০ রুপির ‘সিলভার টি’ও লোকে খাচ্ছেন ফুটপাতে বসে। আমি সবার মনে ভালো চা খাওয়ার ইচ্ছে জাগিয়ে তুলেছি। এটাই আমার সার্থকতা।’
মূলত দেশি বিদেশি দামি চায়ের কারণে হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ করা লাগে পার্থপ্রতিমের দোকানে চা খেতে।
তার সংগ্রহে থাকা সিলভার নিডল হোয়াইট টি’র কেজি প্রতি দাম ২ লাখ ৮০ হাজার রুপি, ব্ল্যাক থান্ডার-১ লাখ ৬৬ হাজার, হোয়াইট পার্ল ও সাউথ আফ্রিকার মেট টি-২৪ হাজার। সাউথইস্ট এশিয়ার ব্লু টি ৩৬ হাজার। ল্যাভেন্ডার টি-১৮ হাজার। ক্লোনাল টি-৩২ হাজার। মাস্কাটেল-৩৬ হাজার। মাচা টি (জাপান, চীন)-১৫ হাজার। মরোক্কান মিন্ট টি-৪০ হাজার। ডার্ক চকলেট ডিলাইট টি-৪০ হাজার। দোনিও পোলো ওয়ার্ল্ড-৫০ হাজার। লেবানিজ টি-১৭ হাজার। স্ট্রবেরি ভ্যানিলা সেরেনিটি-৩৮ হাজার।
পার্থপ্রতিম বলেন, ‘ছোটবেলায় বাবা বলতেন-তোর দ্বারা তো পড়াশোনা হবে না, চায়ের দোকানই খুলতে হবে। বাবার সেই কথাই আশীর্বাদ হয়ে গেল।’
চা নিয়ে তথ্য সংগ্রহের জন্য ‘নির্যাস’ নামের একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ তৈরি করেছেন পার্থ। এই গ্রুপে রয়েছেন কয়েকশো চা-প্রেমী রয়েছেন। তারাই নানান তথ্য সরবরাহ করছেন। বিদেশে গেলে চা এনে দিচ্ছেন। কখনো আত্মীয়দের মারফত বিদেশ থেকেও চা আনান তিনি।
চায়ের জন্য বেশি যাওয়া হয় দার্জিলিং। পার্থ বলেন, ‘বিশ্বের সব দেশের চা খেয়েছি। কিন্তু দার্জিলিং চা তুলনাহীন। এর গন্ধ, স্বাদ, অতুলনীয়।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।