আন্তর্জাতিক ডেস্ক: দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দ্বীপরাষ্ট্র ফিলিপাইনে পেঁয়াজের দাম আকাশছোঁয়া। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে সমাজের সর্বত্র প্রভাব ফেলছে পেঁয়াজের এই সংকট। এমনকি ভ্যালেন্টাইন্স ডে’তে ফুলের দোকানগুলোতে বিক্রি হয়েছে পেঁয়াজের তোড়া।
বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতোই অর্থনৈতিক সংকটে আক্রান্ত ফিলিপাইন। মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাওয়ায় দেশটিতে এখন নিত্যপ্রয়োজনীয় সব পণ্যের দামই বাড়তির দিকে। তবে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে পেঁয়াজের দাম।
চলতি বছরের শুরুতে দেশটিতে পেঁয়াজের সংকট চরমে ওঠে। প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম উঠে যায় বাংলাদেশি টাকায় হাজার টাকার ওপরে। পেঁয়াজের এই দাম স্বাভাবিক সময়ের থেকে অন্তত দশগুণ বেশি।
পরিস্থিতি সামলাতে জরুরিভাবে পেঁয়াজ আমদানির ঘোষণা দেয় প্রেসিডেন্ট ফার্নান্দো মার্কোস জুনিয়রের সরকার। এর পর থেকে পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমলেও এখনও তা স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় অনেক বেশি।
পেঁয়াজের এই দামের কারণে বিপাকে পড়েছেন ফিলিপাইনের দরিদ্র ও নিম্নবিত্তরা। এ অবস্থায় সামাজিক উদ্যোগে দরিদ্রদের জন্য দেশটির বিভিন্ন স্থানে পেঁয়াজ বিতরণের কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।
রাজধানী ম্যানিলার একটি দোকানে প্রয়োজনের অতিরিক্ত পেঁয়াজ জমা দিলেই বিনিময়ে টয়লেট্রিজসহ অন্যান্য সামগ্রী পাচ্ছেন ক্রেতারা। এভাবে সংগৃহীত পেঁয়াজ পরবর্তীতে অভাবীদের মধ্যে বিতরণ করা হচ্ছে।
ফিলিপাইনের এই পেঁয়াজ সংকটের প্রভাব পড়ছে দেশটির প্রাত্যহিক জীবন থেকে শুরু করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের চর্চাতেও। পেঁয়াজকে কেন্দ্র করে নানা ধরনের ফান পোস্ট ও মিম ছড়িয়ে পড়ছে দেশটিতে।
এমনকি ভ্যালেন্টাইনস ডে উদ্যাপনেও জায়গা করে নিয়েছে পেঁয়াজ। অনেক ফুলের দোকানে এবার ভ্যালেন্টাইনস ডে’র উপহার হিসেবে বিক্রি হয় পেঁয়াজের তোড়া। দোকানগুলোতে ফুলের তোড়ার মতই সাজিয়ে রাখা হয় কাগজে মোড়ানো পেঁয়াজ ও মরিচের তোড়া।
ভ্যালেন্টাইনস ডে সামনে রেখে ফুল বিক্রেতা ইভানজেলিস্টা এ রকম একটি পেঁয়াজের তোড়া বিক্রি করেন ৫০০ পেসো বা ৯ ডলারে। তিনি বলেন, ‘আমরা ভ্যালেন্টাইন্স ডে উপলক্ষ্যে একটি ব্যতিক্রমধর্মী কিছু করতে চেয়েছিলাম। পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়ায় এটাই যেহেতু আলোচিত বিষয়, তাই আমরাও এতে যোগ দিলাম।’
ফিলিপাইনের পেঁয়াজের এই সংকটের জন্য সরকারের কৃষি খাতে ব্যবস্থাপনার অভাবকেই দায়ী করছেন ভোক্তা ও বিশেষজ্ঞরা। তবে কৃষি উৎপাদনে বিপর্যয়ের জন্য জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট প্রাকৃতিক দুর্যোগকে দায়ী করেছে সরকার। বছরে ২০টিরও বেশি সামুদ্রিক ঝড় আঘাত হানে দ্বীপরাষ্ট্রটিতে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ফসল।
সূত্র: রয়টার্স
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।