বিনোদন ডেস্ক: দেশের জনপ্রিয় নির্মাতা অনন্য মামুনের পরিচালনায় ‘সিনিয়র ভার্সেস জুনিয়র’ নামে একটি ওয়েব সিরিজে কাজ করতে যাচ্ছেন সোশ্যাল মিডিয়ায় সমালোচনার তুঙ্গে থাকা অপু ভাই। এরইমধ্যে তার লুকে পরিবর্তন আনা হয়েছে। নতুন এই অপুকে দেখে অবাক না হয়ে উপায় নেই। সেই রেশ কাটতে না কাটতেই ফের নতুন লুকে চমক দেখালেন তিনি।
ওয়েব সিরিজে অভিনয়ের খবর প্রকাশ্যে আসতেই টিকটকার পরিচয়ের পাশাপাশি অপুর ‘অভিনয় জ্ঞান’ নিয়েও বিদ্রূপ করছেন অনেকে। তবে সমালোচনাকে আশীর্বাদ হিসেবে নিয়ে নিজেকে একজন শিল্পী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চান তিনি।
অপু বলেন, ‘আমাকে নিয়ে যারা সমালোচনা করছেন, তাদের আমি অনেক ভালোবাসি। কারণ তারা কিন্তু আমাকে ইগনোর না করে আমার কাজগুলো নিয়ে সমালোচনা করে। এটাই আমার জন্য অনেক কিছু। এটাকে আমি আশীর্বাদ হিসেবেই দেখছি। সবাই আমার পাশে থাকলে আমি ভালো কিছু করতে পারব।’
অপুর লুক প্রশংসিত হলেও তাকে নিয়ে ওয়েব সিরিজ বানানোর খবরে সমালোচনার মুখে পড়েছেন পরিচালক অনন্য মামুন। এ প্রসঙ্গে নির্মাতা বলেন, ‘কোন জিনিসকে ছোট করে দেখা উচিত না। ও (অপু) সেলিব্রেটি কিনা সেটা আমার দেখার বিষয় না। একটা ছেলে দুই মাসে নিজেকে এতটা চেঞ্জ করতে পেরেছে। এরকম একটা ছেলেকে সাপোর্ট করা উচিত। ওর উচ্চারণগত সমস্যা থাকলে সেটা সমাধান হবে, অভিনয়ের সমস্যা থাকলে সেটাও সমাধান হবে। কারণ ওর চেষ্টা আছে।’
অপুকে নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করে অনন্য মামুন বলেন, ‘সমালোচনাটা কেন হচ্ছে? ওর তো কাজ রিলিজ হয়নি। কাজ করার পর আপনারা বলতে পারবেন সে (অপু) কি করতে পারে। ওকে দেখেই যে পরিমাণ সমালোচনা হচ্ছে, তার মানে ওর একটা জায়গা আছে। কত লোকজন আছে, তাদের নিয়ে তো আলোচনা হচ্ছে না। ওর মধ্যে আমি যে চেষ্টা দেখেছি, সেটা থাকলে শেষ পর্যন্ত সে অনেক ভালো করবে। সবাই সারপ্রাইজড হবে।’
অপুর নতুন লুকের দ্বিতীয় চমক ছবিটি নিজের ফেসবুক ওয়ালে শেয়ার করেছেন পরিচালক অনন্য মামুন। ক্যাপশনে লিখেছেন- ‘সবাই বলবে, তোমার সাফল্যে জ্বলবে। কাউকে ছোট করে তারাই দেখে, যাদের কোন যোগ্যতা নেই।’
অপুর এই লুকের পেছনে কাজ করেছেন মডেলিং গ্রুমার ও ফ্যাশন কোরিওগ্রাফার তানজিল জনি। তিনি এক ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘আমি হাত দিয়ে যা ছুঁই সেটাই ভাইরাল হয়ে যায়। ব্যাপার টা আসলে তা না। অপু ভাই এর কাজটা, ওয়েব সিরিজ নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট একটা লুক ছিলো। সামনে কিছু কাজের জন্য পেইড একটা কাজ ছিল এটা| এর আগে আমি হিরো আলমের আউট লুক চেঞ্জ করেছিলাম সিনেমার জন্য, সেটা সবাই জানেন। তাই আমি ছুলেই ভাইরাল হয়ে যায় এটা না। আমি সবসময় একটু আলাদা কাজ করতে পছন্দ করি। ব্রান্ড বিলবোর্ড এর কাজ অনেক করেছি। আমার এক্সপেরিমেন্ট অ্যালবাম দেখলে দেখবেন সবগুলো কাজ একটু আলাদা ধাঁচের। অপু চেষ্টা করছে কিছু করে দেখাতে। এটি আমাদের ছোট একটা প্রচেষ্টা আর কিছু না।’
প্রসঙ্গত, রঙ করা চুল আর বিভিন্ন সংলাপ বলে নেটিজেনদের হাসির খোরাক জুগিয়েছেন অপু। টিকটকে তিনি ‘অপু ভাই’ নামেই পরিচিত। অভাব-অনটনের কারণে বেশিদূর পড়ালেখা করতে পারেনি অপু। মোবাইল ও টিভি মেকানিকের কাজ শিখে কিছুদিন সার্ভিসিংয়ের কাজ করেন। এরপর সোনাইমুড়ি বাজার ও জেলা শহরের বিভিন্ন সেলুনে কাজ শুরু করেন অপু। সেলুনে কাজ করার সময় টিকটক, লাইকিতে আসক্ত হওয়ার পর সে কাজে উদাসীন হয়ে পড়ে। অপু এলাকায় দল বেঁধে ঘুরে এবং মোবাইলে ভিডিও বানানো শুরু করে। আশেপাশের বিভিন্ন গ্রাম থেকেও কিশোর-তরুণরা তার সঙ্গে ভিডিও বানাতে আসে। অপুর সঙ্গে ভিডিও বানাতে ঢাকা থেকে গাড়ি রিজার্ভ করেও অনেক তরুণ তার গ্রামে যেতো। কিন্তু একের পর এক মারামারির ঘটনায় বিতর্কিত হয়ে পড়েন তিনি। শেষ পর্যন্ত হাজতবাসও করতে হয়। জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর থেকেই আমূল পরিবর্তন ঘটে তার। নিজেকে শুধরে নিতে শুরু করেন তিনি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।