সময়টা এখন তথ্য প্রযুক্তির। বিশ্ব চলে এসেছে হাতের মুঠোয়। এখন ঘরে বসে যেমনি সারা বিশ্বের খোঁজ-খবর রাখা যায়, ঠিক তেমনি ঘরটাও হতে পারে কর্মস্থল। সেটা সম্ভব ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে। বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং করে ব্যক্তি বা প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের সুযোগ তৈরি হয়েছে।
এই সেক্টরে নিজেদের শক্ত অবস্থান তৈরি করতে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে নেয়া হয়েছে নানা পদক্ষেপ। তারপরেও রয়ে গেছে কিছু সমস্যা। এগুলোর সমাধান করা গেলে ফ্রিল্যান্সিং সেক্টর হতে পারে দেশের সবচেয়ে বড় রেমিটেন্স আয়ের খাত। সৃষ্টি হতে পারে লাখ লাখ নতুন কর্মসংস্থান, যা দেশের বেকারত্বে সমস্যা সমাধানে বিরাট ভুমিকা রাখতে পারে। এজন্য ব্যক্তি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে সরকারি উদ্যোগে আরো কিছু পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন, এমনটাই মনে করছেন এই সেক্টরের ফ্রিল্যান্সার ও বিশিষ্টজনেরা।
বিকাশ বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় মোবাইল ফোন ভিত্তিক অর্থ স্থানান্তর (এমএফএস) সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান। এটি বাংলাদেশের সবচাইতে বড় অর্থায়ন প্রতিষ্ঠান। এটি ব্যাঙ্ক হিসাববিহীন ব্যক্তিদের আর্থিক সেবা প্রদানের লক্ষ্যে চালু করা হয়েছিল। গ্রাহকরা *২৪৭ # ডায়াল করে এবং বিকাশ অ্যাপ ব্যবহার করে নগদ অর্থ জমা করা, নগদ অর্থ উত্তোলন করা, টাকা পাঠানো, টাকা যোগ করা, রেমিট্যান্স, মোবাইল রিচার্জ, মূল্য প্রদান ও বিল দেয়া ইত্যাদি সেবাগুলো নিতে পারেন। বিকাশ হিসাব খুলতে একজন গ্রাহককে পুর্ণাঙ্গ তথ্য দিয়ে নির্ধারিত গ্রাহক নিবন্ধন ফর্ম (কেওয়াইসি) পূরণ করতে হয়।
বর্তমানে বাংলাদেশে অনলাইন পেমেন্ট মেথড হিসেবে পেওনিয়ার, স্কিল, পেইজা, নেটেলার, জুম চালু আছে। এছাড়াও আমাদের দেশের ফ্রিল্যান্সাররা ওয়ার ট্রান্সফার সিস্টেমটি ব্যবহার করে থাকেন। কিন্তু উন্নত বিশ্বে অনলাইন অর্থ লেনদেনের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করা হয় পেপাল। এটা যেমন অনলাইনের প্রায় সকল কাজে ব্যবহার করা যায়, তেমনি সাশ্রয়ীও। এই কারণে বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সারদের উপার্জিত অর্থ গ্রহণ ও বিভিন্ন ক্ষেত্রে অর্থ প্রদানের জন্য পেমেন্ট মেথড নিয়ে বিভিন্ন সমস্যায় পড়তে হয়, ব্যয় হয় অতিরিক্ত অর্থ। সরকারিভাবে ঘোষণা দেয়া হলেও, এখনো এটা চালু করা সম্ভব হয় নি। তাই এটা যত দ্রুত চালু করা যাবে ততই এই সেক্টরের জন্য মঙ্গলজনক হবে। আর বর্তমানে আমারা যে পেমেন্ট মেথডগুলোর মাধ্যমে অর্থ লেন-দেন করি, অপ্রয়োজনে এগুলোতে একাধিক একাউন্ট খোলা বা নিয়মিত অর্থ লেনদেন না করলে এগুলোও তাদের কার্যক্রম বন্ধ করে দিতে পারে। তাই আমাদের উচিৎ এগুলোর সুষ্ঠুভাবে ব্যবহার করা।
ফ্রিল্যান্সিং বা আউটসোর্সিংয়ের আয় সহজে বিকশের মাধ্যমে আনার কোন সহজ সমাধান হয়ত বিকাশ নিয়ে আসতেছে।
সম্প্রতি ফ্রিল্যান্সিংয়ের টাকা আসবে ‘সুফার ফাস্ট’ এই শিরোনামে একটি ইভেন্ট লঞ্চ করেছে বিকাশ। কিন্তু বিকাশ কিছু প্রকাশ করে নাই কি ধরনের সুবিদা নিয়ে আসতছে। ফেসবুক তাদের ইভেন্টে ক্যাপশন দিয়েছে-
১০ ফেব্রুয়ারি, বৃহস্পতিবার, সকাল ১১টায় আসছে ফ্রিল্যান্সিংয়ের টাকা হাতে আনার সুপার ফাস্ট সমাধান। জানতে Going বাটনে ট্যাপ করে লাইভ দেখুন ১০ ফেব্রুয়ারি।
বিকাশের ফেসবুক ইভেন্ট পোস্টে অনেকেই বিভিন্ন ধরনের মন্তব্য এবং প্রশ্ন করতেছে, কি ধরনের সুযোগ-সুবিধা তারা নিয়ে আসতেছে। কেউ বলতেছে পেপাল থেকে সরাসরি বিকাশের মাধ্যমে টাকা আনা যাবে আবার কেউ বলতেছে অনলাইন মার্কেটগুলোতে পেমেন্ট সিস্টেমে বিকাশ অপশন থাকবে যেখান থেকে বিকাশে টাকা পাঠিয়ে সেটা ব্যাংকের মাধ্যমে বা বিকাশের মাধ্যমে তোলা যাবে। তাদের এই নতুন উদ্যোগের মাধ্যমে যদি ফ্রিল্যান্সাররা দেশে দ্রতু টাকা আনার সুবিধা পায় তাহলে যুগান্তকারী কিছু একটা হবে।
অনেক বছর ধরে দেশে পেপাল না থাকার কারণে ফ্রিল্যান্সাররা তাদের আয় দেশে আনতে অনেক চড়াই-উতরাই পোহাতে হয়। বড় বড় উদ্যোক্তা যারা অনলাইনে কাজ করায় তাদের একমাত্র অপশন থাকে পেপাল।
মার্কেটপ্লেসগুলোতে হয়তো ব্যাংক বা অন্যান্য পেমেন্ট ওয়ে হয়ে থাকে কিন্তু মার্কেটপ্লেসের বাইরে কাজের ক্ষেত্রে পেপাল ছাড়া পেমেন্ট গ্রহন করা খুব কঠিন হয়ে যায়। আবার অনেক ফ্রিল্যান্সারদের অনেক ট্যুলস, সফটওয়্যার বা অনলাইন কাজের আনুষাঙ্গিক সাপোর্টের জন্য অনেক কিছু কিনতে হয় যার একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে পেপাল। সুতরাং শুধু দেশের টাকা আনার জন্য নয় এমন একটা ওয়ালেট লাগবে ফ্রিল্যান্সারদের জন্য পেপাল বা যাই হোক যেটা দিয়ে তারা খুব সহজে অনলাইনে কেনাকাটা করতে পারবে।
আমরা অপেক্ষায় আছি ফেব্রুয়ারির ১০ তারিখে বিকাশ ফ্রিল্যান্সারদের জন্য কি সুবিধা নিয়ে আসতেছে তা দেখার জন্য।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।