জুমবাংলা ডেস্ক: খরিফ-২ (আমন) মৌসুমে প্রয়োজনীয় পরিমাণ বৃষ্টি না হওয়ায় খারাপ সময় পার করছিলেন ঠাকুরগাঁও জেলার কৃষকেরা। তবে কৃষকদের মুখে হাসি ফুটানোর জন্য আমন ধানের জমিতে সম্পূরক সেচ দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড।
পাউবো’র এ উদ্যোগের ফলে এ এলাকার কয়েক লাখ কৃষক উপকৃত হয়েছেন। আর আমনসহ গ্রীষ্মকালীন সবজি ও ফলনে বিস্তর সুবিধা পাচ্ছেন কৃষকরা। এতে আমনের বাম্পার ফলনসহ কৃষিতে ভালো লাভের আশা করছেন তারা।
পানি উন্নয়ন বোর্ড, ঠাকুরগাঁও এর দেওয়া তথ্যমতে, এ বছর পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাস্তবায়িত ভুল্লি বাঁধ সেচ প্রকল্পের ৮০০ হেক্টর, টাংগন বাঁধ সেচ প্রকল্পের ৪৪৫০ হেক্টর,বুড়ি বাঁধ সেচ প্রকল্পের ১৭২০ হেক্টরজমিসহ জেলার সকল সেচ প্রকল্পের মাধ্যমে ১১,৬৬৫ হেক্টর জমিতে সম্পূরক সেচ প্রদানের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এ উদ্যোগের মাধ্যমে ১১,৬৬৫ হেক্টর জমিতে ৫৮,২৭৫ মেট্রিক টন ধান উৎপন্ন হবে, যার মুল্য ১১৫ কোটি টাকা। এতে আনুমানিক ৮১ কোটি টাকার জ্বালানি সাশ্রয় হবে। জেলা অফিসের আওতায় ৮৯ টি কৃষক পানি ব্যবস্থাপনা দল রয়েছে। এতে ভূল্লী বাঁধ সেচ প্রকল্পের ১০০০ জন,টাংগন বাঁধ ৬০০০ জন ও বুড়ি বাঁধ সেচ প্রকল্পে ২০০০ জন কৃষক সুবিধা পাচ্ছেন।
আমন ধানের জমিতে সম্পূরক সেচে কৃষিতে আশার আলো দেখছেন কৃষকেরা। স্বপ্ন দেখছেন ভালো ফসল ও চড়া দামের।
বুড়ি বাঁধ সেচ প্রকল্পের আওতায় উপকারভোগী কৃষক দয়াল রায় বলেন, যে পরিমাণ বৃষ্টির প্রয়োজন সেটি পাওয়া যাচ্ছেনা খরার কারণে। তবে সম্পূরক সেচের মাধ্যমে আমন জমিতে পানি দেওয়ায় হতাশা দূর হয়েছে। ভালো ফসল হবে আশা করছি।
ভুল্লি বাঁধ সেব প্রকল্পের আরেক সুবিধাভোগী ও উপকারভোগী রফিকুল ইসলাম ও আকবর আলী জানান, প্রকল্পের মাধ্যম্যে পাউবো’র যে সেচ সুবিধা দিচ্ছে তা কৃষককের জন্য আর্শিবাদ স্বরুপ। আর পাউবো’র এ উদ্যোগের ফলে এ এলাকার ৬-৭ লাখ কৃষক উপকৃত হয়েছে। সেচ ও উৎপাদন খরচ কমবে আমনসহ বর্তমান সময়কালীন সবজির। আর আমনসহ গ্রীষ্মকালীন সবজি ও ফলনে বিস্তর সুবিধা পাচ্ছেন কৃষকরা। এতে আমনের বাম্পার ফলনসহ কৃষিতে ভালো লাভের আশা করছেন কৃষকরা।
এ বিষয়ে ভূল্লী বাঁধ সেচ প্রকল্পের সভাপতি মো: আসাদুজ্জামান বলেন, আমাদের বাঁধের আওতায় এক হাজার কৃষক সম্পূরক সেচ পাচ্ছেন। আমরা আমন ধান নিয়ে অনেক বেশী দুশ্চিন্তার মধ্যে ছিলাম৷ আর এবারে যখন বৃষ্টি হওয়া দরকার তখন আমরা বৃষ্টি পায়নি। তবে সম্পূরক সেচের মাধ্যমে আমিসহ আমাদের এখানকার কৃষকেরা অনেক উপকৃত হচ্ছেন। আর কৃষিতে প্রাণ ফিরে পেয়েছেন।
জেলার টাংগন, বুড়ি ও ভুল্লি বাঁধ সেচ প্রকল্পের পুর্নবাসন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মোখলেসুর রহমান বলেন, আমন জমিতে সেচ প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষকেরা দারুণ ভাবে লাভবান হচ্ছেন৷ আমরা চেষ্টা করছি কৃষকদের পাশে থাকার। সম্পূরক সেচের মাধ্যমে বড় অঙ্কের একটি জ্বালানি সাশ্রয় হচ্ছে। এ জ্বালানি সাশ্রয় একদিকে কৃষকের উৎপাদন কমাচ্ছে আর অন্যদিকে ভালো ফলনের আশা করছেন তারা।
এছাড়াও সরকারের জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির যে প্রভাব কৃষকদের মাঝে পড়েছিল, তা এ সেচ প্রকল্প ও সেচ সুবিধায় অনেকটাই কমবে বর্তমানে বলেও জানান তিনি।
ঠাকুরগাঁও পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম জানান, বর্তমান সরকার কৃষক বান্ধব সরকার। এ সরকার কৃষি ও কৃষকের কথা ভেবেই এ সেব প্রকল্প এর অনুমোদন দিয়েছেন। এ সেচ প্রকল্পের ফলে এ অঞ্চলের কৃষকরা কম খরচে আমন ও বোরোসহ সবজিব ফল ও ফসল উৎপাদন করতে পারবেন। এতে উৎপাদন খরচ কমবে । লাভবান হবে এ অঞ্চলের কৃষি কৃষক। আর কৃষি ও কৃষকরা লাভবান হলেই আমাদের এ প্রকল্পের স্বার্থকতা বলেও জানান তিনি।
ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবু হোসেন জানান, ঠাকুরগাঁও পানি উন্নয়ন বোর্ডের ভুল্লি ও বুড়ির বাঁধ সেচ প্রকল্প সরকারের একটি আর্শিবাদ কৃষকদের জন্য। এ প্রকল্পের ফলে এ এলাকার লাখ লাখ কৃষকরা স্বল্প বা বিনা খরচে পানি পাবে। সেচ সুবিধা পাবে। এর ফলে এসব এলাকার আমন, সবজিসহ সব ধরণের ফল ও ফসলে উৎপাদন বাড়বে। লাভবান হবেন কৃষক ও কৃষি।-বাসস
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।