জুমবাংলা ডেস্ক : বঙ্গোপসাগরে বিমান ঘাঁটি তৈরি এবং বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের অংশ নিয়ে একটি খ্রিস্টান দেশ বানানোর চক্রান্তের বিষয়ে নিজেদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি বলছে, এসব তথ্য সঠিক নয়।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার এ কথা বলেন।
এ ছাড়া গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ও নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিচারিক কর্মকাণ্ডের বিষয়টিও মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ব্রিফিংয়ে উঠে আসে। দেশটি বলছে, ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে মামলার বিষয়টি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে যুক্তরাষ্ট্র। এর পাশাপাশি ড. ইউনূসকে হয়রানি এবং হুমকি প্রদর্শনের জন্য শ্রম আইনের অপব্যবহার হতে পারে বলেও যুক্তরাষ্ট্র উদ্বেগ জানিয়েছে।
ব্রিফিংয়ে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করে বলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্প্রতি দাবি করেছেন, এক শ্বেতাঙ্গ ব্যক্তি তাকে প্রস্তাব দিয়েছিলেন- তিনি কোনো চাপ ছাড়াই ক্ষমতায় থাকতে পারবেন, যদি তিনি একটি বিদেশি দেশকে বঙ্গোপসাগরে বিমান ঘাঁটি স্থাপনের অনুমতি দেন। তিনি আরও উল্লেখ করেন, বঙ্গোপসাগরে ঘাঁটি বানিয়ে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের একটি অংশ নিয়ে পূর্ব তিমুরের মতো খ্রিস্টান দেশ তৈরির ষড়যন্ত্রও চলছে। শেখ হাসিনা কি এসব অভিযোগের তীর যুক্তরাষ্ট্রের দিকেই ছুঁড়ছেন? কেননা যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন, আইনের শাসন এবং দুর্নীতি দমন নিয়ে অব্যাহতভাবে আহ্বান জানিয়ে আসছে?
এর জবাবে মিলার বলেন, আমি ঠিক নিশ্চিত নই যে এই মন্তব্যগুলো কাকে উদ্দেশ্য করে করা হয়েছে। কিন্তু যদি এসব কথা প্রকৃতপক্ষে যুক্তরাষ্ট্রকে ইঙ্গিত করে বলা হয়, তাহলে আমি শুধু বলব, এগুলো সঠিক নয়।
অপর এক প্রশ্নে ওই সাংবাদিক জানতে চান, নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে গত ২ জুন আদালত কক্ষের ভেতরে আসামিদের জন্য নির্ধারিত অন্ধকার ও লোহার খাঁচার মতো বেষ্টনীর মধ্যে প্রবেশ করে করানো হয়। এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে ড. ইউনূস বলেন, তিনি তার অভিশপ্ত জীবনের সবচেয়ে খারাপ পর্যায়ে রয়েছেন। একইভাবে গণতন্ত্র, আইনের শাসনের অনুপস্থিতি এবং ব্যাপক দুর্নীতির কারণে বাংলাদেশের লাখ লাখ মানুষ তাদের অভিশপ্ত জীবনের সবচেয়ে খারাপ পর্যায়ে রয়েছে। আমরা দেখেছি, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সাবেক সেনাপ্রধান এবং পুলিশ প্রধানের ওপর কিছু নিষেধাজ্ঞা ও ভিসা বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। আপনি কি মনে করেন, গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনের পর সরকারকে জবাবদিহি করার জন্য এসব পদক্ষেপই যথেষ্ট, নাকি অতীতের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক-গণতন্ত্রপ্রেমী জনগণের সাথে সংহতি প্রদর্শনের জন্য আরও পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বিবেচনা করবেন?
জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, আমরা ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে মামলার অগ্রগতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। ড. ইউনূসকে হয়রানি এবং হুমকি প্রদর্শনের জন্য শ্রম আইনের অপব্যবহার হতে পারে এমন শঙ্কায় আমরা আমাদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছি। আমরা আরও উদ্বিগ্ন যে, শ্রম এবং দুর্নীতিবিরোধী আইনের এই ধরনের অপব্যবহার আইনের শাসন নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারে এবং সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগে বাধা আসতে পারে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এই মুখপাত্র বলেছেন, বিচার প্রক্রিয়া চলতে থাকায় আমরা বাংলাদেশ সরকারকে ড. ইউনূসের বিষয়ে ন্যায্য ও স্বচ্ছ আইনি প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে উৎসাহিত করতে থাকব। কিন্তু (নিষেধাজ্ঞা বা বিধিনিষেধ) আরোপ করা নিয়ে আগাম বলার মতো কোনো তথ্য আমার কাছে নেই।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।