মেটার সিইও মার্ক জাকারবার্গ বছরের শুরুতেই আলাদা ৩টি মন্তব্য করেছেন, যার প্রতিক্রিয়া খুব ভালো নয়। বছরের শুরুতেই এমন বিতর্কে জড়ানোকে অনাকাঙ্ক্ষিত বলছেন অনেকে। বছর জুড়ে মানুষের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকেন বিশ্বের প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। তাঁদের বিভিন্ন কর্মকান্ড নিয়ে চলতেই থাকে আলোচনা আর সমালোচনা। বছরের শুরুতেই এমনই তিনটি অনাকাঙ্ক্ষিত বিতর্কের জন্ম দিয়েছে ফেসবুক তথা মেটার প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গের কিছু মন্তব্য।
প্রতিদ্বন্দ্বী টেক জায়ান্টের কঠোর সমালোচনা
জো রিগানের সঙ্গে দীর্ঘ ৩ ঘণ্টার এক পডকাস্টে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান অ্যাপলের তীব্র সমালোচনা করেছেন জাকারবার্গ। বিশেষত অ্যাপলের উদ্ভাবনী প্রচেষ্টার অভাব ও তাঁর ভাষায় অ্যালার্জিক নিয়মকানুনের জন্য। তিনি বলেন, আইফোনের সফলতার পর অ্যাপল নতুন কিছু উদ্ভাবন করতে পারেনি। জাকারবার্গ অভিযোগ করেন যে অ্যাপল তার লাভ বাড়াতে ডেভেলপারদের ওপর অতিরিক্ত খরচ চাপিয়ে দিয়েছে, যেমন ৩০ শতাংশ ট্যাক্স। তিনি অ্যাপলের নিরাপত্তা নীতিরও সমালোচনা করে বলেন, তারা যদি প্রোটোকল উন্নত করত, তাহলে সমস্যা সমাধান হতো। আর এমন খোলাখুলি সমালোচনা অ্যাপল যে খুব ভালোভাবে নেয় নি, তা বলাইবাহুল্য।
ইঞ্জিনিয়ারদের কাজ এআই-ই করতে পারে বলে মত দিলেন মেটার সিইও
টেক জায়ান্ট মার্ক জাকারবার্গ মেটার ডেভেলপারদের চাকরির ভবিষ্যৎ নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, মেটায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) দিয়ে ইতিমধ্যেই মধ্যম পর্যায়ের সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারদের কাজ করানো যাচ্ছে। ইউটিউবার জো রোগানের পডকাস্টে জাকারবার্গ কোডিংয়ের ক্ষেত্রে এআই-এর ভূমিকা এবং এই প্রযুক্তি চাকরি বাজারে যে বিপর্যয় সৃষ্টি করতে পারে তা নিয়ে দৃষ্টিভঙ্গি শেয়ার করেছেন।
জাকারবার্গ বলেন, ২০২৫ সালের মধ্যে মেটা ও অন্যান্য প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর এআই সিস্টেম এখনকার মধ্যম পর্যায়ের ইঞ্জিনিয়ারদের মতোই কোড লিখতে সক্ষম হবে। মানুষের বদলে এআই দিয়ে কর্মক্ষেত্র এভাবে দখল করা হলে চাকরি হারাবে অনেক কর্মী। আর এই নীতি অন্যান্য প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগ্রহণ করলে বিপদে পড়বে বিশাল জনসংখ্যা। তাই জাকারবার্গ খোলাখুলি এভাবে না বললেও পারতেন, বলছেন অনেকে।
নিজের কোম্পানিতে ম্যাসকুইলিনিটি বাড়ানোর কথা বললেন জাকারবার্গ
সারা বিশ্বে কর্মক্ষেত্রে যখন বৈচিত্র্য ও নারী-পুরুষের সমশক্তির চর্চা চলছে, তখন টেক জায়ান্ট মার্ক জাকারবার্গ বলছেন কোম্পানিগুলোর কর্মশক্তিতে আরও বেশি পুরুষসুলভ শক্তি প্রয়োজন। সম্প্রতি জো রোগানের সঙ্গে একটি সাক্ষাৎকারে মেটা সিইও এমন বিতর্কিত অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন। কর্পোরেট আমেরিকার এমন নিরপক্ষ সংস্কৃতি তাঁর আর ভাল লাগছে না। সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, আমরা একদিকে মানবিক হতে চাইছি আর সবার জন্য ভালো পরিবেশ তৈরি করতে চাইছি, যেখানে সবার গ্রহণযোগ্যতা থাকবে। অন্যদিকে আমরা বলছি ম্যাসকুইলিনিটি খারাপ।
কন্যা সন্তানের পিতা জাকারবার্গ। তাঁর বেড়ে ওঠা একমাত্র বোনের সঙ্গে। তিনি চান নারীরা সফল হোক। কিন্তু এর মানে এই না যে ম্যাসকুইলিনিটিকে টক্সিক ক্যাটাগরিতে রাখা হবে। তিনি বিশ্বাস করেন যে জেন্ডারভিত্তিক কিছুটা আক্রমণাত্মক মনোভাব সহজভাবে নেওয়ার সংস্কৃতির কিছু ভালো দিক আছে।
আবার তাঁর প্রতিষ্ঠান মেটার পলিসিতেও এসেছে কিছু পরিবর্তন। মেটার ডিইআই সেন্সর সিস্টেম বাতিল করা হচ্ছে। ডিইআই এর পূর্ণরূপ ডাইভারসিটি, ইকুয়ালিটি আর ইনক্লুশন। নতুন কন্টেন্ট নিয়ম অনুযায়ী বৈচিত্র, সমতা ও অন্তর্ভুক্তির এই সিস্টেম বিলীন হচ্ছে। ফলে ব্যবহারকারীরা হেট কন্টেন্ট বা ঘৃণা ছড়ায় এমন কন্টেন্ট তৈরি করলেও মেটার জোরদার বা সক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ থাকবে না এখন আর। তাঁর প্রতিষ্ঠানের এই নতুন পলিসি ও তাঁর মন্তব্য জন্ম দিয়েছে নানা তর্ক বিতর্কের।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।