জুমবাংলা ডেস্ক : বরিশাল সদর উপজেলার রায়পাশা-কড়াপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আবু বক্কর মল্লিক। তিনি প্রকাশ্যেই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচারণা চালাচ্ছেন। বরিশাল-৫ (সদর ও সিটি কর্পোরেশন) আসনের আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী সালাউদ্দিন রিপনের ট্রাক প্রতীকের পক্ষে ভোট চেয়ে গণসংযোগ করছেন তিনি।
ট্রাক প্রতিকের প্রার্থীর পক্ষে আবু বক্কর মল্লিকের ভোটার স্লিপ বিতরণের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তা ছড়িয়েছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা।
রায়পাশা-কড়াকপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি আবুল বাসার আবু। নৌকা প্রতীকের প্রার্থী জাহিদ ফারুক এর পক্ষে দিনরাত প্রচারণা চালাচ্ছেন তিনি। উঠান বৈঠক করে নৌকায় চাইছেন ভোট।
আর তার ভোট চাওয়ার সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছেন দেনরায়পাশা-কড়াপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আবু বক্কর মল্লিক।
বিএনপি’র এই দুই নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে বরিশাল সদর উপজেলা বিএনপি। সদর উপজেলা বিএনপি ওই নোটিশে কেন তারা আওয়ামী লীগ ও আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন তা জানতে চেয়েছেন আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে। সদুত্তর না পেলে পরবর্তীতে তাদের স্থায়ীভাবে দল থেকে বহিষ্কারের বিষয়টিও স্পষ্ট করা হয়েছে নোটিশে।
বিএনপির ওই দুই নেতা পৃথক ২ প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তবে তারা বলছেন বর্তমানে তারা দলের কোনো পদে নেই। যেহেতু দল তাদের মূল্যায়ন করেনি তাই তারা তাদের মতো করে কাজ করছেন।
কেবল এরা দুজনই নয় বরিশাল-৫ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে সদর উপজেলা ও সিটি কর্পোরেশনে বেশ কিছু বিএনপি নেতাকর্মী ভোটের প্রচারণায় নেমে পড়েছেন। ইতোমধ্যে বরিশাল সদর উপজেলা বিএনপির চার নেতাকে এই অভিযোগে বহিষ্কার করা হয়েছে।
বহিষ্কৃত চার বিএনপি নেতা হলেন- সদর উপজেলা বিএনপির সদস্য ও ইউপি সদস্য পারুল বেগম, চন্দ্রমোহন ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি ওবায়দুল করিম তুহিন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল হক হাওলাদার ও চর্বারিয়া ইউনিয়ন বিএনপির ১নং ওয়ার্ড সাধারণ সম্পাদক বাবুল খান।
এই চারজনের মধ্যে সিরাজুল হক চন্দ্রমোহন ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান। তিনি কাজ করছেন নৌকা প্রতীকের পক্ষে। চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর পরই তিনি নৌকা প্রতীকের প্রার্থী প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুকের অনুসারী হিসেবে রয়েছেন বলেও বিএনপি নেতাদের অভিযোগ। তবে সে বিষয়টি স্পষ্ট হলো প্রকাশ্যে নির্বাচনী প্রচারণায় নামায়।
যদিও সিরাজুল হক দাবি করছেন ব্যক্তি হিসেবে জাহিদ ফারুক এর পক্ষে কাজ করছেন তিনি। আর যেহেতু বর্তমানে তিনি দলের ভাইটাল কোনো পদে নেই তাই এ বিষয়ে কোনো বিধি নিষেধ নেই।
তবে বরিশাল সদর উপজেলা বিএনপির সদস্য ও ইউপি সদস্য পারুল বেগম, চন্দ্রমোহন ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি ওবায়দুল করিম তুহিন ও চরবারিয়া ইউনিয়ন বিএনপির ১নং ওয়ার্ড সাধারণ সম্পাদক বাবুল খান কাজ করছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী ট্রাক প্রতীকের সালাউদ্দিন রিপনের পক্ষে।
চরবাড়িয়া ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বাবুল খান সিটি কর্পোরেশনে চাকরি করেন। তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী সালাউদ্দিন রিপনের নির্বাচন পরিচালনা কমিটিতে রয়েছেন। বাবুল খান দাবি করেছেন বিএনপি তাকে বহিষ্কার করলে কোনো সমস্যা নেই। নির্বাচনে তিনি কাজ করছেন এবং শেষ পর্যন্ত করবেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে জেলা বিএনপির এক জৈষ্ঠ নেতা বলেন, যাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে তারা বিএনপির ছোট পদে রয়েছেন। তবে সদর উপজেলা ইউনিয়ন এবং জেলা পর্যায়ের বিএনপি নেতারাও স্বতন্ত্র প্রার্থী সালাউদ্দিন রিপন এর পক্ষে গোপনে কাজ করছেন। নৌকার পক্ষে কেউ কেউ কাজ করছেন তবে তার সংখ্যা খুবই কম। এসব নেতাদের মধ্যে জেলা এবং উপজেলা পর্যায়ে শীর্ষ বিএনপি নেতারা ও রয়েছেন। তবে নাম সর্বস্ব বিএনপি নেতাদের বহিষ্কার করে তারা নিজেদের রক্ষা করছেন।
জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আবুল কালাম শাহিন বলেন, আমরা পুরো বিষয়গুলো গভীরভাবে পর্যালোচনা করছি। যেখানে অভিযোগ এবং প্রমান পাচ্ছি সেখানেই ব্যবস্থা নিচ্ছি। যাদের বহিষ্কার করা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে শক্ত প্রমাণ পেয়েছি। যাদের বিরুদ্ধে প্রচারণায় এবং নির্বাচনে অংশ নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে সেগুলো আমরা তদন্ত করছি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।