জুমবাংলা ডেস্ক : চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার সীমান্তে এক বাংলাদেশি নাগরিককে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হ’ত্যার অভিযোগ অস্বীকার করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)।
উপজেলার চাকুলিয়া সীমান্তের কাঁটাতারের কাছ থেকে মঙ্গলবার ভোরে আব্দুল গণি (৩০) নামের নিহত ওই বাংলাদেশির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তিনি ওই গ্রামের কৃষক আবু তাহেরের ছেলে।
সোমবার মধ্যরাতে সীমান্ত সংলগ্ন মাঠে ভুট্টা খেতে পানি দিতে গেলে বিএসএফ তাকে ধরে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ নিহতের পরিবারের।
এ ঘটনায় বিকেলে সীমান্তের জিরো পয়েন্টে দুই দেশের সীমান্তরক্ষীদের কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বিএসএফ অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছে, নিহত বাংলাদেশির ব্যাপারে তারা কিছুই জানেন না।
তবে গ্রামবাসী ও নিহতের পরিবার জানায়, আব্দুল গণিসহ চার কৃষক সোমবার রাত ১টার দিকে সীমান্ত সংলগ্ন জমিতে ভুট্টার খেতে সেচ দিতে যায়। এ সময় তারা সীমান্তের জিরো পয়েন্টের কাছে পৌঁছালে ভারতের রাঙ্গিয়ারপোতার ৮১ নং বিএসএফ ক্যাম্পের সদস্যরা তাদেরকে ধাওয়া দেয়।
নিহতের ফুপাতো ভাই ইমাদুল ইসলাম জানান, বিএসএফের ধাওয়া খেয়ে অন্য তিনজন গ্রামে ঢুকে পড়লেও ধরা পড়ে আব্দুল গণি। পরে বিএসএফ সদস্যরা তাকে টেনে হিঁচড়ে ভারতের অভ্যন্তরে নিয়ে যায়। ভোরে গণিকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত অবস্থায় সীমান্তের কাঁটাতারের কাছে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ফেলে রেখে যায়।
খবর পেয়ে নিহতের পরিবারের সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত মামা কালু বিশ্বাস জানান, আব্দুল গণিকে ধরে নিয়ে গিয়ে পিটিয়ে জখম করা হয়। পরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তার বাম পায়ের শিরা কেটে দেওয়া হয়। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে সে মারা যায়।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শামীম কবির জানান, নিহত ব্যক্তিকে উপর্যুপরি পেটানো হলেও মূলত তার মৃত্যু হয়েছে বাম পায়ের রগ কাটার কারণে। কারণ রগ কাটার কারণে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা-৬ বিজিবির পরিচালক লে. কর্নেল খালেকুজ্জামান জানান, সীমান্ত সংলগ্ন মাঠ থেকে সকালে বাংলাদেশি নাগরিকের মরদেহ উদ্ধারের পর বিজিবির পক্ষ থেকে পতাকা বৈঠকের আমন্ত্রণ জানানো হয়। দুপুরের পর বিএসএফ সম্মত হলে বিকেলে জিরো পয়েন্টে দুই দেশের সীমান্তরক্ষীদের মধ্যে কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বিজিবির পক্ষে নেতৃত্ব দেন মুন্সিপুর বিওপির কমান্ডার মতিয়ার রহমান ও ভারতের রাঙ্গিয়ারপোতা ৮১ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের কমান্ডার অভিশেক আনান।
লে. কর্নেল খালেকুজ্জামান আরও জানান, বৈঠকে বাংলাদেশি নাগরিক নিহতের ঘটনায় বিজিবির পক্ষ থেকে প্রতিবাদ জানানো হয়। তবে বিএসএফ বাংলাদেশি নাগরিক হ’ত্যার অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছে এ বিষয়ে তারা কিছুই জানেন না। বিএসএফের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে ভারতের কিছু ব্যবসায়ীর সঙ্গে টাকা পয়সা নিয়ে নিহত আব্দুল গণির সাথে বিরোধ ছিল। এই বিরোধের জের ধরেও সে খুন হতে পারে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।