জুমবাংলা ডেস্ক : বাংলাদেশে কোরবানির পশুর চামড়ার দাম গত কয়েক বছর ধরে তলানিতে নেমে এসেছে। চামড়ার খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সাম্প্রতিক সময়ে চাহিদার তুলনায় বিপুল পরিমাণ চামড়ার সরবরাহ এর মূল কারণ। আর চাহিদা কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে তারা রপ্তানী পড়ে যাওয়ার কথা বলছেন। খবর-বিবিসি’র
চামড়ার খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চামড়ার দাম তলানিতে নামার মূল কারণ চাহিদা কমে যাওয়া। তবে, সরকার গতবারের তুলনায় এবার লবণ-যুক্ত গরুর চামড়ার দাম ছয় শতাংশ বাড়িয়েছে। চামড়ার দাম ধরে রাখতে ঈদের পরবর্তী সাত দিন ঢাকার বাইরে থেকে চামড়া না আনার ব্যবস্থাও গ্রহণ করেছে।
সরকার অবশ্য বলছে যে, গতবারের তুলনায় এবার লবণযুক্ত গরুর চামড়ার দাম ৬ শতাংশ বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে। চামড়ার দাম ধরে রাখতে ঈদের পরবর্তী সাত দিন ঢাকার বাইরে থেকে চামড়া না আনার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
এবার সরকার ঢাকায় লবণযুক্ত গরুর চামড়ার দাম প্রতি বর্গফুট ৫০-৫৫ টাকা এবং ঢাকার বাইরে ৪৫-৪৮ টাকা নির্ধারণ করেছে। গত বছর এই দাম ছিল ঢাকায় ৪৭-৫২ টাকা এবং ঢাকার বাইরে ৪০-৪৪ টাকা। গত বছর ছাগলের চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয়েছিল ১৮-২০ টাকা যা এ বছরও অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।
যারা কোরবানি দিচ্ছেন এবং মৌসুমি চামড়ার ব্যবসার সাথে যুক্ত, তারা বলছেন, বছর দশেক আগেও প্রতিটি গরুর চামড়ার দাম গড়ে ১৫০০ টাকা থাকলেও গত দুই-তিন বছর ধরে এটি গড়ে ৫০০ টাকায় নেমে এসেছে।
নয়াপল্টন এলাকার বাসিন্দা সাইফুর রহমান খান বলেন, ২০১২-১৩ সালের দিকে ৪-৫ মণ ওজনের গরু কোরবানি দিলে সেটির চামড়া বিক্রি করতে পারতেন ১২০০-১৫০০ টাকা। আর গরু যদি আরো বড় অর্থাৎ ৬-৭ মন হতো তাহলে সেই চামড়া বিক্রি হতো ২০০০-২৫০০ টাকা।
“আর এখন সেই চামড়া হয়ে গেছে ৩০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা। আর খুব বেশি হলে ৭০০ টাকা। এটা কমা শুরু হয়েছে ২০১৬-১৭ সাল থেকে।”
গ্রিনরোড এলাকার বাসিন্দা আবুল মনসুর আহমেদ বলেন, ১০ বছর আগে একটা গরুর চামড়া তিন হাজার থেকে শুরু করে চার হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি করা যেতো।
তিনি বলেন, “প্রত্যেক ঈদে এটা ইম্পর্টান্ট একটা বিষয় ছিল। প্রচুর লোক চামড়া কেনার জন্য আসতো। আমরা দামাদামি করতাম। চামড়া বিক্রি করে সেই টাকাটা গরিবদের দিয়ে দিতাম।”
কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে চামড়ার দাম পরিবর্তিত হয়ে গেছে এবং বর্তমানে কার্যত কোন মূল্যই নাই, বলেন তিনি।
“চামড়া এখন ফ্রি দিয়ে দেয়ার মতো। এটা কেনার জন্য খুব একটা আগ্রহ কারো দেখি না। মাদ্রাসার লোকদেরও আমরা ডেকে চামড়াটা দিয়ে দিচ্ছি। আর তারাও এটা নেয়ার সময় বলছে যে, চামড়া নিয়ে এখন আর তাদের কোন আয় হয় না।”
টানা প্রায় চার বছর ধরে কোরবানির সময় চামড়া কিনে মৌসুমী ব্যবসায়ী হিসেবে সেগুলো আবার ট্যানারি মালিকদের কাছে বিক্রি করেছেন সালাউদ্দিন আহমেদ। তবে গত তিন বছর তিনি আর এই ব্যবসা করছেন না। এর কারণ হিসেবে সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, ২০১৭ সালের পর থেকে চামড়ার দাম এতো কমে গেছে যে কোনো লাভ হয়না।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।